অমান্য হচ্ছে শিশু শিক্ষার
অধিকার, মত জনশুনানিতে
বাড়িতেই জন্ম হয়েছিল মেয়েটির। জন্মের শংসাপত্র ছিল না তার। শুধুমাত্র এই ‘অপরাধে’ স্কুল কর্তৃপক্ষ ভর্তি নেয়নি ইটভাটার এক মহিলা কর্মীর মেয়েকে। কিন্তু জন্মের শংসাপত্র না থাকলেও ছাত্র ভর্তি নিতে স্কুল বাধ্য।
স্কুলে ভর্তি হতে কোনও টাকা লাগার কথা নয়। কিন্তু দিন-আনি দিন-খাই এক ভ্যানচালকের তিন ছেলেমেয়ের কাছ থেকে ভর্তির ফি বাবদ ৩৭০টাকা করে নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। টাকার অভাবে তৃতীয় সন্তানকে স্কুলেই ভর্তি করতে পারেননি ওই ভ্যানচালক।
এমন ভাবেই এ রাজ্যে খর্ব হচ্ছে শিশুর শিক্ষার অধিকার। আর এ জন্য যে রাজ্যের গরিব মানুষের ছেলেমেয়েরা এখনও স্কুলের গণ্ডি থেকে পিছিয়ে থাকছে, বৃহস্পতিবার কলকাতায় এমনই অসংখ্য অভিযোগের জনশুনানিতে উঠে এল সেই তথ্যই। জনশুনানিতে আসা অধিকাংশ অভিযোগেরই তির স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। শিশুর শিক্ষার অধিকার আইন (২০০৯ সাল) অনুযায়ী, ৬ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত প্রত্যেক ছেলেমেয়েকে নিখরচায় শিক্ষা দেওয়া বাধ্যতামূলক। অথচ এ রাজ্যে সেই নিয়ম লঙ্ঘিত হতে দেখে ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস(এনসিপিসিআর)-এর চেয়ারপার্সন শান্তা সিংহ বললেন, “এই অভিযোগগুলিই প্রমাণ করছে যে রাজ্যে শিশু শিক্ষার অধিকার খর্ব হচ্ছে।”
জনশুনানিতে আসা অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট স্কুল কতৃর্র্পক্ষের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরকে নির্দেশ দিল এনসিপিসিআর। জনশুনানির বিচারকমণ্ডলী কখনও বললেন, ভর্তির ফি বাবদ নেওয়া টাকা ১৫ দিনের মধ্যে ফিরিয়ে দিতে হবে। নির্দেশ দিলেন, যে ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করেনি, তাদের কাছ থেকে নেওয়া টাকাও ফেরত দিতে হবে ১৫ দিনের মধ্যে। কখনও বললেন, জন্মের শংসাপত্র নেই বলে কাউকে স্কুল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। যে মেয়েটিকে স্কুলে ভর্তি নেওয়া হয়নি, তাকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
মালদহের একটি আবাসিক স্কুলের প্রধানশিক্ষক রসিদ ছাড়া টাকা নিয়ে ছাত্রদের হস্টেলে ভর্তি করছেন, অ্যাডমিশন ফর্ম বিক্রি করছেনএমন অভিযোগ শুনে এনসিপিসিআর-এর চেয়ারপার্সন শান্তা সিংহ মালদহের জেলা ইনস্পেক্টরকে বলেন, “প্রধানশিক্ষকের নামে দ্রুত পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করুন। জেলাশাসককে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। কী শাস্তি হল ওই প্রধানশিক্ষকের, তা-ও এনসিপিসিআরকে জানাতে হবে।” এ দিনের জনশুনানিতে যে ধরনের অভিযোগ এসেছিল, তেমন ভুরি ভুরি অভিযোগ শিক্ষা দফতরের কাছেও আসছে বলে জানালেন রাজ্যের সর্বশিক্ষা মিশনের অধিকর্তা ছোটেন ধেন্দুপ লামা। তিনি বলেন, “রাজ্যে ওই আইন এখনও কার্যকর হয়নি। তবে অ্যাডমিশন ফি না নিতে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রচুর অভিযোগ পাচ্ছি। খতিয়েও দেখা হচ্ছে। তবে লোকাভাবে অনেক স্কুলে নিয়মিত পরিদর্শন করা সম্ভব হচ্ছে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.