বসিরহাটে ‘ঘরছাড়ারা’ সিপিএম ছেড়ে কংগ্রেসে
তৃণমূলের ভয়ে অনেকে ভিটেছাড়া, অভিযোগ
তৃণমূলের ভয়ে বেশ কিছু পরিবার গ্রামছাড়া বলে অভিযোগ উঠেছে বসিরহাটে। ভেবিয়া দাসপাড়ার এই ঘটনায় ‘ঘরছাড়া’রা মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন সপ্তাহ খানেক আগে। বৃহস্পতিবার বসিরহাটের এসডিপিও-র কাছেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। তৃণমূলের তরফে অবশ্য এই অভিযোগ ‘উদ্দেশ্যেপ্রনোদিত’ এবং ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করা হয়েছে। এসডিপিও আনন্দ সরকার বলেন, “কত জন গ্রামছাড়া, তার তালিকা চাওয়া হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে উপ নির্বাচনের প্রচার মিছিলে যাওয়া নিয়ে কিছু দিন আগে ভেবিয়া দাসপাড়া এলাকায় সিপিএম এবং তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছিল। তৃণমূলের দাবি ছিল, সিপিএম নেতা কালীকমল রুইদাসের নেতৃত্বে হামলা হয়। সংঘর্ষে এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যুর গুজব রটে। যা থেকে গোলমাল আরও বড় আকার নেয়। তৃণমূলের লোকজন বেশ কিছু বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সে সময়ে গ্রামছাড়া হয় সিপিএমের বেশ কিছু পরিবার।
‘ঘরছাড়া’ পরিবার। বসিরহাটে তোলা নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের দাবি, পরবর্তী সময়ে দু’এক জন ছাড়া সকলেই ফিরে এসেছেন। বুধবার কালীকমলবাবু তাঁর অনুগামীদের নিয়ে যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। তিনি বলেন, “দাসপাড়ার ২৭টি পরিবার দীর্ঘ দিন ধরে সিপিএম করে। এই অপরাধে তৃণমূল নেতা সৌরেন সেনের নির্দেশে আমাদের উপরে হামলা হয়। পুলিশি প্রহরায় দু’বার ফিরলেও বেশি সময় থাকতে পারিনি। পুলিশ ফিরে যেতেই ওরা আমাদের ঘরছাড়া করে।” কালীকমলবাবুর দাবি, সিপিএম-তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে দরবার করেও ফল না মেলায় তাঁরা সকলে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “সিপিএমে থেকে আমাদের মারধর করে এখন কংগ্রেসে যোগ দেওয়াটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশকে বলা হয়েছে নিরপেক্ষ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে। আমরা শান্তি চাই। তাই বলে আমাদের দলের কর্মী-সমর্থকেরা একতরপা মার খাবে সেটা মেনে নেওয়া যায় না।”
চম্পা রুইদাস, তরুবালা দাস, অজিত রুইদাস-সহ অনেকের দাবি, তাঁরা বাড়ি ঢুকতে পারছেন না। তিনটি সন্তান নিয়ে চম্পা উঠেছেন কাঁকড়া মির্জানগরে বাপের বাড়িতে। তাঁর কথায়, “ওরা আমাদের ঘর লুঠপাট করে এক কাপড়ে গ্রাম থেকে বের করে দিয়েছিল। এর নাম কী পরিবর্তন! ঘরে ফিরে যেতে চেয়ে আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গোটা ঘটনা লিখিত ভাবে জানিয়েছি। দেখি কবে সুবিচার মেলে।” অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে তৃণমূল নেতা সৌরেনবাবুর বক্তব্য, “তৃণমূল কর্মীদের মারধর করেছিল কালীকমল ও তার লোকেরা। তা নিয়ে সামান্য উত্তেজনা ছড়ায়। ওই ঘটনা মিটে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও কিছু লোক উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবে তৃণমূলের নামে বদনাম করছে।” একই সঙ্গে ওই তৃণমূল নেতা বলেন, “সত্যিই যদি ঘরছাড়া কেউ থেকে থাকেন, তাঁদের কাছে আমাদের অনুরোধ, গ্রামে ফিরে আসুন। কেউ বাধা দিলে আমরা তা রুখব। কোনও অবস্থাতেই গ্রামে অশান্তি ছড়াতে দেওয়া হবে না।” কংগ্রেস নেতা অসিত মজুমদার বলেন, “এঁরা সকলে ঘরে না ফেরা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.