|
|
|
|
মেদিনীপুর পুরসভা |
প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধানের দিকে আঙুল তৃণমূলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
একে তো পুর-পরিষেবা নিয়ে নাগরিক অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। তার উপর পুর-পরিচালকদের অন্তর্দ্বন্দ্বে ক্লান্ত, বিরক্ত মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দারা। ‘স্বচ্ছতা’র প্রশ্নে এ বার পুর-পরিচালক জোটের প্রধান শরিক তৃণমূলের অভিযোগের আঙুল উঠেছে জোটসঙ্গী কংগ্রেসের প্রবীণ এক কাউন্সিলরের দিকে। যিনি আবার এই সে দিন পর্যন্ত ছিলেন তৃণমূল-কংগ্রেস বোর্ডের উপ-পুরপ্রধান। তৃণমূলের অভিযোগের তির মেদিনীপুর পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে। জোটসঙ্গী দলের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে রাস্তা তৈরি থেকে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নতুন জামা দেওয়া--সব ক্ষেত্রেই বেনিয়মের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। এই ‘দ্বন্দ্বে’র জেরে ওই কংগ্রেস কাউন্সিলরের নেতৃত্বে আবার যুব তৃণমূলের স্থানীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শম্ভুবাবুর আবার দাবি, কালীপুজো কমিটির ঘর জবরদখল করে যুব তৃণমূলের নামে কয়েক জন ‘অসামাজিক কাজ’ করছিল বলেই স্থানীয়রা ঘর ভেঙে দিয়েছে।
১৭ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের সভাপতি ব্রজকিশোর কুণ্ডু বলেন, “কাউন্সিলরের কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই আমাদের যুব সংগঠনের একটি কার্যালয় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে দলীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক হবে। তার পরেই আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করব আমরা।” শম্ভুবাবু অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “রাস্তার কাজ এলাকার মানুষ দেখেছেন। পুরসভার প্রতিনিধিও ছিলেন। কাজে অস্বচ্ছতা থাকলে তখনই তা হলে প্রতিবাদ হত। আর পুজোর জন্য দর্জিরা ব্যস্ত থাকায় জামা দিতে একটু দেরি হয়ে গেল।” যুব তৃণমূলের কার্যালয় ভাঙচুর নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “ওই ঘরটিতে বিবিগঞ্জ মহল্লা সর্বজনীন কালীপুজো কমিটির অফিস ছিল। কয়েক দিন আগে সেটাই তৃণমূলের কয়েক জন দখল করেছিল। সেখানে নানা অসামাজিক কাজের অভিযোগও উঠেছিল। সেটা জানাজানি হতেই পাড়ার সবাই গিয়ে ভেঙে দিয়েছে।” ব্রজকিশোরবাবু আবার ‘অসামাজিক কাজের’ অভিযোগ ‘মনগড়া’ বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন।
এই চাপানউতোরে অবশ্য শেষ পর্যন্ত পুরবোর্ডের দুই শরিকের ভাবমূর্তিই ঠেকেছে তলানিতে। সম্প্রতি বক্সিবাজারের একশো মিটারের কংক্রিট রাস্তা হয়েছে। খরচ দেখানো হয়েছে ২ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা। অভিযোগ, রাস্তাটি যতটা পুরু হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। উঠেছে অর্থ নয়ছয়েরও অভিযোগ। তার পরেই ফের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নতুন জামা কেনার অর্থ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, স্কুলের সমস্ত ছাত্রীদের জামা কেনার অর্থ দেবে সরকার। তফসিলি ছাত্রদেরও অর্থ দেওয়া হবে। জামা কিনে তার রসিদ দেখালেই ৪০০ টাকা করে সরকার দিচ্ছিল। অথচ ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৫টি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা জামা কেনার টাকা পায়নি বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বৃহস্পতিবারই জামা কেনা নিয়ে ওয়ার্ড শিক্ষা-কমিটির বৈঠক করেছেন কাউন্সিলর। সেখানে জামা কিনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। |
|
|
|
|
|