বাসিন্দাদের বাঁচাতে ওহায়োয় মারা হল ৪৮টি পশুকে
লম্বাস চিড়িয়াখানার এক কর্তা বলতেন, এ যেন নোয়ার দ্বিতীয় নৌকো। কারণ, ‘ধ্বংসের’ হাত থেকে বাঁচাতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী পুষতেন ওহায়োর জেনসভিলের বাসিন্দা টেরি টমসন। বৃহস্পতিবার সকালে সেই বিশাল পশু খামারেই পড়েছিল টেরির পোষ্যগুলোর দেহ। পড়ে ছিল টেরির দেহ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলেই পুলিশের অনুমান। আর প্রতিবেশীদের বাঁচাতে তাঁর পোষ্যদের হত্যা করেছে শহরের শেরিফের লোকেরা।
সব মিলিয়ে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৪৮টি প্রাণী, যার মধ্যে রয়েছে ১৮টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, ১৭টি সিংহ। বাঁচানো গিয়েছে শুধুমাত্র তিনটি চিতাবাঘ, ১টি বাদামি ভালুক ও দু’টি বাঁদরকে। পরে তাদের কলম্বাস চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়।
কেন ঘটল এই ঘটনা? প্রায় ২৫ হাজার মানুষের বসতি জেনসভিলে। গত কাল সন্ধ্যায় হঠাৎই খবর যায় শেরিফের অফিসে। গলায় আতঙ্ক। ‘‘চার পাশে ছুটে বেড়াচ্ছে বন্য জন্তু। কিছু করুন।” টেরির ‘অ্যানিমাল পার্কে’ অফিসারেরা পৌঁছে দেখেন, সমস্ত খাঁচা খোলা। সামনে পড়ে রয়েছে টমসনের গুলিবিদ্ধ দেহ, আর আশপাশে ছুটে বেড়াচ্ছে নানা জন্তু। উপায়? শেরিফের নির্দেশ পেতেই তাঁরা হাতে তুলে নেন রাইফেল। এবং অভিযোগ, ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ার বিন্দুমাত্র চেষ্টা না করেই সরাসরি চালিয়ে দেন ‘মৃত্যুবাণ’। এ নিয়ে প্রথম মুখ খোলেন ডেপুটি শেরিফ জোনাথন মেরি। বলেন, “নেকড়ে, কালো ভালুক এবং আরও অনেকগুলো পশুকে মেরে ফেলেছি আমি।” তাঁর কথায়, “একটা কালো ভালুক ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আমার উপর, ভয় পেয়ে গুলি চালিয়ে দিই।” বাকিদের গলাতেও একই সুর। বার্ব উলফ ‘দ্য ওয়াইল্ড’- নামে একটি সংস্থার সদস্য। তিনি বলেন, “একটা বাঘ দেখে কোনও মতে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ি। কিন্তু গুলি কাজ করার আগেই বাঘটা আমার দিকে লাফ দেয়। আমাকে বাঁচাতে এক অফিসার গুলি করেন বাঘটাকে।”
শেরিফ ম্যাট লুৎজের দাবি, আত্মহত্যা করার আগে টেরি নিজেই খাঁচাগুলোর দরজা খুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু কেন আত্মহত্যা করলেন তিনি? কেনই বা এ ভাবে খুলে দিলেন খাঁচার দরজা? এখনও জবাব মেলেনি। তবে আপাতত বিতর্ক দানা বেঁধেছে নিরীহ প্রাণীগুলোকে এ ভাবে নির্বিচারে হত্যা করা নিয়ে। কলম্বাস চিড়িয়াখানার প্রাক্তন অধিকর্তা জ্যাক হ্যানার কথায়, “১৮টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে এ ভাবে মেরে ফেলা হল, ভাবা যায় না।” ওই চিড়িয়াখানার তরফে প্যাটি পিটার বলেন, “অনেক জন্তুকে বাঁচিয়েছিলেন টেরি। আশ্রয় দিয়েছিলেন ওই অসহায় প্রাণীগুলোকে।” শেরিফ ম্যাট লুৎজ জানান, ২০০৪ থেকে বহু বার তাঁদের অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন টেরির পড়শিরা। মাঝেমধ্যেই টেরির পোষা জানোয়ারেরা ঢুকে পড়ত আশপাশের বাড়িতে। শেরিফের অভিযোগ, পোষ্যদের ঠিকঠাক যত্ন নিতেন না টেরি। কখনওসখনও অত্যাচারও করতেন তাদের উপর। বেআইনি বন্দুক রাখার দায়ে এক বছর জেল খাটার পর গত মাসেই ছাড়া পান টেরি। তার পরেই এই কাণ্ড।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.