পরিবহণ খাতে খরচের দায়িত্ব নিতে হবে উৎপাদক সংস্থাকে
সারের কালোবাজারির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি
গামী আলুর মরসুমে চাষিদের থেকে সারের বেশি দাম নিতে পারবেন না ব্যবসায়ীরা। কোনও ক্ষেত্রে যদি এর ব্যতিক্রম ঘটে, তা হলে দোষী ব্যবসায়ীর লাইসেন্স বাতিল করা হবে। বৃহস্পতিবার চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্রে সার কারখানার মালিক, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে কৃষিকর্তারা এ নিয়ে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিলেন।
জেলার কৃষি অধিকর্তা প্রলয় ঘোষ বলেন, “সার কারখানার মালিকেরা রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের কাছে আশ্বাস দিয়ে এসেছেন, কোনও ক্ষেত্রেই সার ব্যবসায়ীরা যাতে চাষিদের থেকে অতিরিক্ত দাম নিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করবেন। এখন জেলাস্তরে তাঁদের সেই কাজ করে দেখানোর সময়।” ওই কৃষি আধিকারিকের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, “যদি কোনও ক্ষেত্রে এর বিচ্যুতি ঘটে, কৃষি দফতরের পাশাপাশি জেলা পুলিশ-প্রশাসনও ব্যবস্থা নেবে। তাদের তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। চাষিদের ন্যায্য মূল্যে সার দিতে এ বার সরকার বদ্ধপরিকর।’’
দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যে বিক্রির জন্য ধার্য মূল্যের (ম্যাক্সিমাম রিটেইল প্রাইস) বাইরে চাষিদের থেকে বেশি দাম নেওয়ার অভিযোগ উঠছে সার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। বিচ্ছিন্ন ভাবে সেই প্রবণতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও সার্বিক ভাবে আঁটোসাঁটো প্রশাসনিক ব্যবস্থা এত দিন নেওয়া যায়নি। তার ফলে চাষিদের হাল যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই থেকে গিয়েছে। অবশ্য, সেই সমস্ত ক্ষেত্রে চাষিদের দিক থেকে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট করে অভিযোগ জানানোর ব্যাপারে অনীহাও ব্যবস্থা না নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা।
বস্তুত, চাষিরা অনেক সময়ই ধারে ব্যবসায়ীদের থেকে মাল কেনেন। সেই সুযোগে ব্যবসায়ীরা ‘ইচ্ছেমতো’ দাম নেন তা-ই নয়, সেই নিয়ে অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রেও চাষিদের ভয়ভীতি দেখানো হয় বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। তাই, এ বার কৃষি এবং প্রশাসনিক কর্তারা এই প্রবণতা রুখতে আগেভাগেই ময়দানে নেমেছেন। অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা বেশি দাম নেওয়ার ‘অজুহাত’ হিসেবে পরিবহণ খরচকে দায়ী করেছেন। এ বার অবশ্য রাজ্য সরকার সার কারখানার মালিকদের অনুরোধ করেছেন, পাইকারদের গুদাম পর্যন্ত সার পৌঁছে দেওয়ার জন্য। সরকারের সঙ্গে বৈঠকে সার কারখানার মালিকরা সেই আশ্বাস দিয়েছেন বলে কৃষি দফতর সূত্রের খবর। এ দিন বৈঠকের পরে জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা সতীনাথ পালিত এবং জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ দিলীপ বেরা বলেন, “চাষিদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের প্রতারণা প্রমাণিত হলে কোনও ভাবেই তা বরদাস্ত হবে না।”
অন্য দিকে, সারের খুচরো বিক্রেতা চিত্তরঞ্জন পালের দাবি, “সার কোম্পানিগুলো অনুখাদ্য এবং ওষুধ নিতে বাধ্য করছে, যেগুলি চাষের ক্ষেত্রে অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। এই অনুখাদ্য ও ওধুধ না নিলে সার দিচ্ছে না কোম্পানিগুলি। কিন্তু চাষিরা এগুলো নিতে চান না। ফলে, আমরা মার খাচ্ছি। কৃষি দফতরের উচিত এ ব্যাপারে সার কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।” এ বিষয়ে প্রলয়বাবু বলেন, “ছোট ব্যবসায়ী এবং চাষিদের এই অভিযোগ মিথ্যে নয়। এই ধরনের অভিযোগ আমরাও পেয়েছি। এ বার কিন্তু সার কারখানার মালিকেরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, কোনও ক্ষেত্রেই ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। এর পরেও যদি বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়, সে ক্ষেত্রে সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।”
সার বিক্রেতারা বারবার বলে আসছেন, পরিবহণের পিছনে খরচের পরে তাঁরা এমআরপি-তে মাল বিক্রি করে লাভ করতে পারছেন না। বস্তা-পিছু লভ্যাংশ বাড়ানোর দাবি আছে তাঁদের। একই সঙ্গে, পরিবহণ খাতে যাতে তাঁদের খরচ করতে না হয়, সেই দাবিও আছে। কৃষি দফতরের তরফে পরিবহণ খরচ সামলানোর দায়িত্ব এখন থেকে সার উৎপাদক সংস্থাগুলিকে নিতে বলায় সারের খুচরো ও বড় বিক্রেতাদের সমস্যার কিছুটা সুরাহা হওয়া সম্ভব।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.