|
|
|
|
‘পরীক্ষা’ দুই রুটে |
ভারতের আকাশে কমছে দুই বিমানের দূরত্ব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মাঝ আকাশে চাপ কমাতে কলকাতা-দিল্লি ও দিল্লি-মুম্বই রুটে দুই বিমানের মাঝের দূরত্ব কমানো হবে। তবে, আপাতত বিষয়টি থাকছে পরীক্ষামূলক স্তরে।
কলকাতা থেকে দিল্লিতে প্রতিদিন ৪৪টি বিমান যাতায়াত করে। দিল্লি থেকে মুম্বই রুটে এই সংখ্যাটা প্রায় দ্বিগুণ। বৃহস্পতিবার এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট-এর পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার চন্দন সেন জানান, চাপ কমাতেই ওই দুই রুটে পরীক্ষামূলক ভাবে এই ব্যবস্থা প্রয়োগ
করা হচ্ছে।
এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) সূত্রে খবর, ভারতের আকাশে একই উচ্চতায়, একই রুটে যাওয়ার সময়ে বিমানের সামনে-পিছনে এখন দূরত্ব থাকে ১৫০ কিলোমিটার। চন্দনবাবু জানিয়েছেন, এই দুই রুটে দূরত্ব কমে হবে ৭০ কিলোমিটার। প্রথমে দিল্লি-মুম্বই রুটে এবং তার পরে কলকাতা-দিল্লি রুটে চালু হবে এই ব্যবস্থা। এটিসি অফিসারদের মতে, এই ব্যবস্থার ফলে ওই রুটগুলিতে আরও বেশি বিমানকে জায়গা করে দেওয়া যাবে। তবে, দেশের অন্যান্য রুটে আপাতত দুই বিমানের মাঝের দূরত্ব আগের মতোই ১৫০ কিলোমিটার থাকবে।
এটিসি সূত্রের খবর, সম্প্রতি বিশ্বের সর্বত্রই দুই বিমানের মাঝের এই দূরত্ব কমিয়ে ফেলার প্রয়াস শুরু হয়েছে। কিন্তু, ভারত-সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এখনও তা সম্ভব হয়নি। ইউরোপ ও আমেরিকার আকাশে দুই বিমানের মাঝের দূরত্ব তুলনায় অনেক কম। অবশ্য পৃথিবীর সর্বত্রই আকাশে উপর-নীচে দুই বিমানের মাঝে ন্যূনতম ব্যবধান থাকে এক হাজার ফুট।
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক ‘এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার্স ডে’ উপলক্ষে এটিসি অফিসার্স গিল্ড কলকাতা বিমানবন্দরে এক আলোচনাচক্রের আয়োজন করেছিল। সেখানে চন্দনবাবু জানান, কলকাতা-দিল্লি এবং দিল্লি-মুম্বই রুটে, প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বিমানের গতিবিধি রেডারের নজরবন্দি থাকে। তাই এই দুই রুটে ‘দূরত্ব কমানোর’ এই পরীক্ষা চালানো সম্ভব। কিন্তু, ভারতের আকাশে এখনও বহু রুট রয়েছে, যেখানে বিমানের গতিবিধির পুরোটা রেডারে ধরা পড়ে না। প্রতিটি রুট রেডারের আওতাধীন আনার জন্য বিশাখাপত্তনম, ওড়িশার ঝাড়সুগুদা, বিহারের কাটিহার এবং উত্তর ২৪ পরগনার বাদুতে চারটি রেডার বসানো হচ্ছে। এই চারটি রেডার চালু হয়ে গেলে সব রুটেই দুই বিমানের মাঝের দূরত্ব কমিয়ে ফেলা সম্ভব হবে বলে চন্দনবাবু জানান।
এটিসির এক অফিসার জানান, দিল্লি, মুম্বই, কলকাতার মত ব্যস্ত বিমানবন্দরের মাথায় পৌঁছনোর পরেও বিমানবন্দরে নামার জন্য প্রতি দিনই দীর্ঘ ক্ষণ ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে বিমানকে। নষ্ট হচ্ছে জ্বালানি। অত্যধিক কার্বন-নির্গমনের ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান সূত্র বার করারও চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও চন্দনবাবু এ দিন জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে এ দিন এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের পূর্বাঞ্চলীয় জেনারেল ম্যানেজার জানান, বিমানবন্দর থেকে বিমান ছাড়ার সময় এটিসি অফিসারেরা পাইলটদের মৌখিক নিদের্শ পাঠান। শীঘ্রই এর পরিবর্তে কম্পিউটার মারফত নির্দেশ পাঠানোরও ব্যবস্থা শুরু হতে চলেছে। এই ব্যবস্থা চালু বলে মৌখিক বার্তা আদানপ্রদানে যে ভুল-ভ্রান্তি ঘটে তা-ও কমিয়ে ফেলা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন। এ দিনের আলোচনাচক্রে উঠে এসেছে এটিসি অফিসারদের চাকরির পরিবেশ, মানসিক চাপ-সহ কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ও। |
|
|
|
|
|