অসমের জঙ্গি সংগঠনকে অস্ত্র সরবরাহ করতে বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরির মশলা কালচিনিতে মজুত করা হয়েছিল। ঘটনায় ধৃত বিহারের পঙ্কজ মিশ্র ওরফে পণ্ডিতকে জেরা করে এমনই তথ্য মিলেছে বলে পুলিশের দাবি॥ পুলিশ জানতে পেরেছে, অসমে একটি জঙ্গি সংগঠনকে অস্ত্র সরবরাহ করত পণ্ডিত। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে বেশ কয়েকটি দুষ্কৃতী দলের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে তার। তাদেরও নিয়মিত অস্ত্র দিত সে। তিন জেলায় ৫টি ঘাঁটি তৈরি করে অস্ত্র সরবরাহ করত পণ্ডিত। একটি ঘাঁটি শিলিগুড়িতেও ছিল। গত পাঁচ বছর ধরে অস্ত্র সরবরাহে যুক্ত সে। শিলিগুড়ির সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনাতেও সে সরাসরি যুক্ত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত আইজি ড্যানিয়েল শেরিং লেপচা বলেন, “দুষ্কর্ম করে টাকা মেটানোর চুক্তি করে অস্ত্র সরবরাহ করত পণ্ডিত। অসমের কয়েকটি সংগঠনকে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য বিস্ফোরক ও আধুনিক রাইফেল মজুত করেছিল সে। ইদানিং উত্তরবঙ্গে বেশ কয়েকটি ঘটনায় দুষ্কৃতী দলের সঙ্গে সে যোগ দেয়। শিলিগুড়িতে ডাকাতিতে ওই দুষ্কৃতী জড়িত। ডাকাতির সময় সিসিটিভিতে তার ছবি বন্দি হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই দুষ্কৃতীকে ধরার ফলে উত্তরবঙ্গে অনেকটাই অপরাধ কমবে বলে আশা করছি।” পুলিশ জানায়, পণ্ডিত বিহারের মুঙ্গের থেকে অস্ত্র নিয়ে আসত বলে স্বীকার করেছে। একটি নাইন এমএম ৭ হাজার টাকায় কিনে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করত সে। এ ছাড়াও একে-৪৭ রাইফেল ২৫ হাজার টাকায় কিনে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে। কার্বাইনও ২৫ হাজারে কিনে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করত পণ্ডিত। পণ্ডিতের কাছে পাওয়া অস্ত্রের মধ্যে বেশ কয়েকটি উন্নত মানের বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সেগুলি মুঙ্গেরের নয় বলে ধারণা পুলিশের। সেগুলি কীভাবে তার হাতে এল তা নিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর কালচিনি থেকে পণ্ডিত এবং আমিনুল মিয়াঁ ওরফে জুল্লত সহ ৫ জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ২৪টি নাইনএমএম, ২টি একে-৪৭, ২টি কার্বাইন, ২৭০ রাউণ্ড তাজা গুলি, ১৩টি জিলেটিন স্টিক, দেড় কেজি বোমার মশলা আটক করে পুলিশ। তা নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। জুল্লত শিলিগুড়িতে একটি সোনার দোকানে ডাকাতি ও খুন সহ উত্তরের তিন জেলায় বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক ও সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত। পণ্ডিত জুল্লতের দলকে অস্ত্র সরবরাহ করত। তাদের সঙ্গে ডাকাতির ঘটনাতেও সে জড়িত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। পুজোর সময় আরও দুটি বড় ডাকাতির ছক কষেছিল জুল্লতের দল। |