থানা নিয়ে টালবাহানা
ক্ষুব্ধ ফুলবাড়িবাসী
থানার প্রস্তাব তৈরির পরে প্রায় ৩ বছর গড়িয়ে গিয়েছে। অথচ ফুলবাড়িতে প্রস্তাবিত থানা আদৌ গড়ে উঠবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। এমনকী এই নিয়ে পুলিশ মহলে স্পষ্ট কোনও বার্তা নেই। অথচ নানা পারিবার্ষিক কারণে ফুলবাড়িতে যে থানা হওয়া একান্তই দরকার তা নিয়ে পুলিশ মহলেও দাবি উঠেছে। তবে পুলিশের কাছে এই নিয়ে স্পষ্ট কোনও বার্তা নেই। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “এই নিয়ে আমাদের কাছে স্পষ্ট কোনও তথ্য নেই। এ মুহূর্তে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছি না। বিস্তারিত খোঁজ নেব।”
পুলিশের বিভিন্ন মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুলবাড়ি-ডাবগ্রাম বিধানসভা ক্ষেত্রের ফুলবাড়ি অঞ্চলের জিয়াগঞ্জে একটি পূর্ণাঙ্গ থানা গড়ে তোলার কাজ দ্রুত হবে বলে নেতা-কর্তারা অনেকেই আশ্বাস দেন। সেই মত প্রায় দু’বছর আগে স্থানীয় ভক্তিনগর পুলিশ ও জেলা পুলিশের তরফে ফুলবাড়ির জিয়াগঞ্জে প্রায় দু’বিঘার উপরে একটি খাস জমি চিহ্নিত করা হয়। প্রস্তাবিত ওই জমিতে তারের জাল দিয়ে ঘেরাওয়ের কাজ হয়। একটি সাইনবোর্ডও বসানো হয়। যত দ্রুত সম্ভব ফুলবাড়িতে থানা গড়ে তোলার কথা ঘোষণাও হয়। কিন্তু অভিযোগ, এতো কিছুর পরেও সব চুপচাপ। পুলিশের তরফে এই নিয়ে আর কোনও সাড়া শব্দ নেই বলে অভিযোগ। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসনের তরফে এই নিয়ে জেলা পুলিশ মহলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার কোনও সঠিক কোনও জবাব নেই বলে অভিযোগ।
এলাকার সিপিএম নেতা তফিজুল ইসলাম বলেন, “এই নিয়ে আমরা একাধিকবার পুলিশে যোগাযোগ করেছি। ফুলবাড়িতে আদৌ থানা হবে কি না? তার সঠিক কোনও সদুত্তর পাচ্ছি না। অথচ ফুলবাড়ির পারিবার্ষিক দিক দিয়ে বিচার করে দেখলে ফুলবাড়িতে পূর্ণাঙ্গ থানা হওয়া দরকার আছে। কিন্তু আমরা হতাশ।”
স্থানীয় ভক্তিনগর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ভক্তিনগর থানার তৎকালীন ওসি পঙ্কজ থাপা কাগজপত্র নিয়ে ছোটাছুটি করেন। পরে পঙ্কজবাবু মাদারিহাট থানা বদলি হয়ে যান। পঙ্কজবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি যখন ভক্তিনগর থানার দায়িত্বে ছিলাম, সেই সময়ে আমি এই নিয়ে জেলা পুলিশ মহলের বিভিন্ন স্তরে ছোটাছুটি করেছিলাম। তবে মাদারিহাটে আমার বদলি হয়। তার পরে বিষয়টি কী পর্যায়ে তা আমার জানা নেই। তবে যেভাবে ফুলবাড়ির গুরুত্ব বাড়ছে, তাতে ফুলবাড়িতে থানা হওয়া খুূব দরকার আছে।”
এই নিয়ে কোনও তথ্য জানা নেই স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছেও। ফুলবাড়ি-২ অঞ্চল কংগ্রেস নেতা মহম্মদ কালাউদ্দিন বলেন, “মনে হয় না ফুলবাড়ির জিয়াগঞ্জে থানা হবে। ফুলবাড়ি হয়ে বাণিজ্য পথ খুলে যাওয়ায় জিয়াগঞ্জে থানা হবে না বলে শুনেছি। ফুূলবাড়ির বাইপাসের আশেপাশে থানার জন্য বিকল্প জায়গা খোঁজা হচ্ছে বলে পুলিশের মুখেই জানতে পেরেছি। এর বেশি কিছু জানি না।”
তৃণমূলের ফুলবাড়ি অঞ্চল সভাপতি মতিন রায়ও বলেন, “আমরা তো জানি ফুলবাড়ির জিয়াগঞ্জে থানা হওয়ার কথা। বিভিন্ন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে জিয়াগঞ্জে জায়গা দেখা হল। জায়গাও নির্বাচিত হল। তারপর থেকে তো আর কিছু জানতে পারছি না।” ফুলবাড়িতে থানা হওয়া হওয়া খুবেই জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুলবাড়িতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনবসতি। ১২ টি সংসদ। গ্রাম প্রায় ৬০ টি। ৩৬ হাজার উপর লোকের বসবাস। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। অথচ এত সংখ্যক লোকের আইন শঙ্খলা রক্ষার জন্য স্থানীয় নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে এলাকার মানুষকে। এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, ফুলবাড়িতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে নানা রকম অসামাজিক ও অপরাধমূলক কাজকর্মও বৃদ্ধি পেয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.