পারিবারিক কার্ডের সুপারিশ
জালিয়াতি রুখতে প্রকাশ্যে বিলি হতে পারে রেশন কার্ড
রেশন কার্ড নিয়ে জালিয়াতি ঠেকাতে এ বার প্রকাশ্যে সভা ডেকে কার্ড বিলি করার পথে যাচ্ছে রাজ্য সরকার।
রেশন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের গড়া সর্বোচ্চ পর্যায়ের কমিটিই এ মর্মে সুপারিশ করেছে। কমিটির চেয়ারম্যান মুখ্যসচিব সমর ঘোষ। সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন উপ নির্বাচন কমিশনার অলোক শুক্ল (একদা যিনি ছত্তীসগঢ়ে খাদ্য-সচিবের দায়িত্ব সামলেছেন) এবং পশ্চিমবঙ্গে গণবণ্টন ব্যবস্থার উপরে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত নজরদার-কমিশনার বিরাজ পট্টনায়ক।
সোমবার মহাকরণে কমিটির প্রথম বৈঠক বসে। কী ভাবে ভুয়ো রেশন কার্ডের দাপট ঠেকানো যায়, মূলত তা নিয়েই সেখানে আলোচনা হয়েছে। কমিটি মনে করে, গ্রামসভা ডেকে কিংবা অন্য কোনও প্রকাশ্য স্থানে সভার আয়োজন করে বৈধ নাগরিকদের মধ্যে রেশন কার্ড বিলি করা হলে ‘জাল’ রেশন কার্ডের রমরমা অনেকটাই ঠেকানো যাবে। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কমিটির এই সুপারিশ নীতিগত ভাবে মেনে নিয়েছেন।
রেশন কার্ড নিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিটির আর একটা সুপারিশ হল: রেশন কার্ডকে ‘স্মার্ট কার্ড’-এর চেহারা দিতে হবে। প্রতিটি কার্ডে একটি করে ‘ইউনিক নম্বর’ থাকবে, যার ভিত্তিতে রাজ্যওয়ারি রেশন কার্ড সংক্রান্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে উঠবে। তা থেকে জানা যাবে, কোথায় কত রেশন কার্ড বিলি করা হল।
পাশাপাশি কমিটি চাইছে, ব্যক্তি-ভিত্তিক কার্ডের বদলে পারিবারিক রেশন কার্ড চালু করা হোক। কারণ, তাতে ভুলের সম্ভাবনা কমবে। সে ক্ষেত্রে পরিবারে কেউ জন্মালে বা কারও মৃত্যু হলে রেশন কার্ড বদলানোর দরকার পড়বে না, শুধু পারিবারিক কার্ডে তথ্য বদলে দিলেই হবে। অন্য বিভিন্ন রাজ্যে ওই ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর হয়েছে। তাই পশ্চিমবঙ্গেও তা চালু করা যেতেই পারে। একই সঙ্গে কমিটির বক্তব্য: জনগণের জ্ঞাতার্থে এবং স্বচ্ছতার স্বার্থে গণবণ্টন ব্যবস্থা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া জরুরি। কত খাদ্য সংগ্রহ হল, কোথায় কবে কত খাদ্যশস্য সরবরাহ করা হল সব হিসেব সাইটে সর্বদা মজুত থাকতে হবে। শুধু তা-ই নয়, কোথায় কত গ্রাহক কত রেশন তুললেন, কিংবা কোন কোন গ্রাহক রেশন তোলেননি, তারও সবিস্তার তথ্য থাকতে হবে। এতে গণবণ্টন ব্যবস্থার একটা পরিষ্কার ছবি মিলবে।
এ দিকে রেশনে পণ্য বিলিবণ্টন নিয়ে হামেশাই নানা অভিযোগ ওঠে। এর প্রেক্ষিতে কমিটির অভিমত, রেশন দোকান কখনওই লাভজনক উদ্যোগ হতে পারে না। এবং মুনাফার লোভেই এক শ্রেণির হোলসেলার, ডিস্ট্রিবিউটর ও রেশন দোকানের মালিক নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন। কমিটি তাই গোটা রেশন ব্যবস্থা ব্যক্তিগত মালিকানা থেকে সরাসরি সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনার পক্ষপাতী। যে জন্য তারা বিভিন্ন সরকারি ভবনে বিনা ভাড়ায় রেশন দোকান খোলার সুপারিশ করেছে। রেশন দোকানে রেশন-পণ্য ছাড়া অন্যান্য জিনিস বিক্রিরও পক্ষেও রায় দিয়েছে কমিটি।
এ ব্যাপারে রাজ্যের কী বক্তব্য? কমিটির সুপারিশগুলো যথেষ্ট উৎসাহব্যঞ্জক বলে মনে করছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর কথায়, “ভুয়ো রেশন কার্ড দিয়ে এক শ্রেণির মানুষ মুনাফা লুটছে। ডিস্ট্রিবিউটর ও রেশন ডিলারদের একাংশের যোগসাজসে লুঠ হয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। গ্রাহকেরা রেশন দোকানে গিয়েও খাদ্যশস্য পাচ্ছেন না।”
রাজ্যের রেশন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের লক্ষ্যে কমিটি যে সব সুপারিশ করবে, তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠানো হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সঙ্কেত পেলেই পশ্চিমবঙ্গে চালু হয়ে যাবে নয়া ব্যবস্থা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.