কোচ নিয়ে ডামাডোল চলছেই মোহনবাগানে
কার্লোস বনাম সুব্রত ম্যাচে রেফারি ইউবি
উ বি-র দেশি কোচে সায় নেই। সমর্থক-সদস্যদের আবার দাবি, কোচ হন সুব্রত ভট্টাচার্য।
এই দুইয়ের টানাপোড়েনে আটকেই রইল মোহনবাগান কোচ নির্বাচন। ক্লাবে কোনও দিন যা হয়নি, এ বার তাই হতে চলেছে। ইউ বি-র সঙ্গে কথা বলে ঘোষণা হবে, কোচের নাম। তাদের পরামর্শই প্রাধান্য পাবে।
সারা দিন ধরে কর্তাদের ঘনঘন বৈঠক। দুপুরে চুনী গোস্বামীর অফিসে প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বৈঠক। বিকেলে সাধারণ সভা। এ সবের পরে বড় কর্তাদের সভা শেষেও কোচের নাম বেরোল না। সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট টুটু বসু বললেন, ইউ বি-র সঙ্গে কথা বলে কোচের নাম জানানো হবে।
ক্লাব কর্তাদের হাবেভাবে স্পষ্ট, স্পনসরদের জন্য এ বারও বিদেশি কোচের পাল্লা ভারী। ইউ বি এ বারই মোহনবাগানে অনেক সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে। তাদের ফর্মুলা ওয়ানের তিন তারকা জার্মান সুতিল, হালকেনবার্গ ও ব্রিটিশ পল দি রেস্তা। তাদের আই পি এল দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের কোচ রে জেনিংস দক্ষিণ আফ্রিকান। বিজয় মাল্য বিদেশিদের পছন্দ করেন। কাজেই ফুটবল দলেও তাদের বিদেশি পছন্দ।
কিন্তু ভাল বিদেশি কোচ কই?
সেই কার্লোস পাহিরা? মোহনবাগানের সমস্যা হল, দুই প্রধানে বাতিল পাহিরা ও সহকারী কোচ বার্নার্ড ছাড়া কোনও বিদেশি কোচ হাতে নেই। কার্লোসের কোচিংয়ে সাদার্ন সমিতিও হামাগুড়ি খাচ্ছে কলকাতা লিগে। সচিব অঞ্জন মিত্র অবশ্য বললেন, “আরও পাঁচ ছয় জন নতুন বিদেশি কোচের তালিকা আমাদের কাছে আছে। দেখা যাক কী হয়।”
সাধারণ সভায় সদস্যদের উপস্থিতি ছিল খুব কম। মিনিট পনেরোর মধ্যে সভা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সভার পরে বেশ কয়েক জন টুটুবাবুকে ঘিরে বলতে থাকেন, সুব্রতকে কোচ না করলে ক্লাবে সাফল্য আসবে না। সেই দলে হাওড়া নরসিংহ দত্ত কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক শঙ্কর দলুই থেকে শুরু করে ভবানীপুরের গৃহবধূ কৃষ্ণা নন্দী সবাই ছিলেন। স্বতঃস্ফূর্ত আবেদন।
এর সামান্য বাদে কোচ নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে প্রধান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন সুব্রত বনাম বিদেশি কোচ।
ক্লাবসূত্রের খবর, কার্লোস একটু এগিয়ে থাকলেও সুব্রতর নামও উঠবে ইউ বির সঙ্গে আলোচনায়। ক্লাব প্রেসিডেন্ট টুটু বসু ও সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু ফেডারেশন কাপের পরেই সুব্রতকে কোচ করানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হন। সৃঞ্জয় নিজে কথা বলেন সুব্রতর সঙ্গে। কিন্তু এ দিন চুনী গোস্বামী কোচ হিসেবে সুব্রতর নাম করায় তাতে ক্লাব রাজনীতির রং লেগে গিয়েছে। অনেক কর্তার বিদেশি কোচেই সায়।
এমনকী সহকারী কোচ বার্নার্ড কোচ থাকলেও তাঁদের কোনও সমস্যা নেই। সাব্বির আলিও আছেন। কার্লোস এলেও এক জন ‘এ’ লাইসেন্স কোচ দরকার। সেটা সাব্বির না অন্য কেউ, সেটাও ঠিক হয়নি। সুব্রত কোচ হলে, নিজে টিডি থেকে কোচ চান প্রশান্তকে। কিন্তু পাহিরা কাকে চান জানা যায়নি।
অতীতে টুটু-অঞ্জন যাঁকে চেয়েছেন, কোচ করেছেন। এ বার পরিস্থিতি ভিন্ন। ইউবি এ বার বেশি টাকা দিয়েছে। তাই তাদের দায় বেশি। আগে ইউ বি-র মোহন প্রতিনিধি ক্লাব কর্তাদের কথায় কোনও আপত্তি করতেন না। নতুন প্রতিনিধি সেই পথে হাঁটছেন না। মোহন কর্তারা আলোচনা করে যে দ্রুত ইউ বি-র সঙ্গে কথা বলে সাংবাদিকদের সিদ্ধান্ত জানাবেন, সেটাও হয়নি। ইউ বি-র প্রতিনিধি নাকি তাদের সংস্থার অনুষ্ঠানে ব্যস্ত। তাই কথাই বলা যায়নি। প্রশ্ন উঠেছে, ইউ বি-র কাছে কি মোহনবাগান কোচ নির্বাচন তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়? নাকি মোহন কর্তারাই ঝুলিয়ে রাখছেন?
কার্লোস পাহিরা এবং সুব্রত ভট্টাচার্য দু’জনেই অপেক্ষায় ছিলেন কর্তাদের ফোনের। কেউ সেই ফোন পাননি। ইউ বি-র মনোভাবে কার্লোস শিবির খুশি। এঁরা না অন্যরা, মঙ্গলবার ফোনটা কে পান, সেটাই এখন দেখার।

‘সুব্রত না থাকলে আমি ব্যারেটো হতাম না’
নতুন কোচ নির্বাচনের মুখে সুব্রত ভট্টাচার্যকে চূড়ান্ত সার্টিফিকেট দিয়ে রাখলেন হোসে রামিরেজ ব্যারেটো। সোমবার প্র্যাক্টিস শেষে কথা মোহনবাগান অধিনায়ক বলে ফেললেন, তাঁর ‘ব্যারেটো’ হয়ে ওঠা সম্ভব হত না সুব্রত না থাকলে! এত দিন ময়দানে কানাঘুষো শোনা যেত, ব্যারেটো আর সুব্রত-র সম্পর্ক মোটেই ভাল নয়। মোহন-অধিনায়ক সাফ জানিয়ে দিলেন, সুব্রত কোচ হলে তাঁর কোনও অসুবিধাই হবে না। “সুব্রতর সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ, এই ব্যাপারটা যে কোথা থেকে ছড়াচ্ছে বুঝতে পারছি না। সুব্রতর সঙ্গে আমার কোনও সমস্যা নেই। আর সত্যি বলতে, সুব্রত যদি না থাকত তা হলে তো আমার ব্যারেটো হওয়াই হত না!” বলে একটু থেমে ব্যারেটো যোগ করলেন, “আমরা দু’জন একসঙ্গে মোহনবাগানকে দুটো আই লিগ দিয়েছি। সুব্রত সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পরেই তো আমার মোহনবাগানে আসা। কী করে এগুলো ভুলে যাব?” ব্যারেটোর মনে হচ্ছে, টিমের সমস্যা হচ্ছে আত্মবিশ্বাসে। আবার এ দিনই কাজ শুরু করে দেওয়া টেকনিক্যাল কমিটির দুই সদস্য সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, সমস্যা ফিটনেস। প্রশান্ত বলছিলেন, “টিমের ফিটনেস লেভেলটা মোটেই ভাল নয়।” সত্যজিৎও কন্ডিশনিং দেখে হতাশ। ব্যারেটো আবার জানিয়ে দিলেন গত এক মাসে টিমের আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছে। বলে দিলেন, “গত এক মাসে আত্মবিশ্বাসটা খারাপ জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.