নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ছাঁট লোহার একটি গুদাম থেকে সেখানকারই এক কর্মীর মাথা থেঁতলানো রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে, লিলুয়ার ‘ও’ রোডের সেনপাড়ায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম রামজি সিংহ (৬০)। বাড়ি বেলুড়ের বি কে টেম্পল রোডে। দেহের পাশে মিলেছে একটি রক্তমাখা ভারী হাতুড়ি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই কর্মী যখন রাতে ঘুমোচ্ছিলেন, তখন তাঁর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে মেরে খুন করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে ছাঁট লোহার ওই গুদামটি ঘুসুড়ি থেকে লিলুয়ার সেনপাড়ায় উঠে এসেছে। এ দিন সকালে কর্মীরা এসে দেখেন, কারখানার ছোট গেটটি খোলা। ভিতরে অফিসঘরের বারান্দায় ক্যাম্প খাটে মাথা থেঁতলানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে রামজির দেহ। মশারি ছেঁড়া। ক্যাম্প খাটটিও ভাঙা। |
এই খাটের উপরেই পড়ে ছিল গুদামের কর্মচারী রামজি সিংহের দেহ।
পাশে রাখা রক্তমাখা সেই হাতুড়িটিও। সোমবার, হাওড়ায়। নিজস্ব চিত্র। |
মৃতদেহের পাশেই পড়ে আছে একটি ভারী রক্তমাখা হাতুড়ি। এই দৃশ্য দেখে তাঁরা কারখানার মালিককে খবর দেন। খবর যায় পুলিশের কাছেও। বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান হাওড়া পুলিশের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (উত্তর) রশিদ মুনির খান। আসেন কারখানার মালিক গিরি চাকমানিও।
পরে গিরিবাবু জানান, কয়েক দিন আগে নিরাপত্তারক্ষী ছুটি নিয়ে দেশের বাড়ি যাওয়ায় রাতপাহারার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রামজিকে। তিনি তাঁদের কারখানায় গত চার বছর ধরে কর্মরত। কারখানার মালিক বলেন, “অত্যন্ত সৎ ও কর্মনিষ্ঠ মানুষ ছিলেন রামজি। কেন ওঁকে খুন করা হল, বুঝতে পারছি না। আমরা চাই, অবিলম্বে খুনের কিনারা হোক।”
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন রাতে রামজি ছাড়াও কারখানার ভিতরে আরও তিন জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক জনের নাম অর্জুন। তিনি ওই গুদামের কর্মী। বাকি দু’জন হলেন এক ঠিকাদারের অধীনে কর্মরত দুই শ্রমিক। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে ওই তিন জনেরই খোঁজ মিলছে না।
হাওড়া পুলিশের এ ডি সি (উত্তর) বলেন, “ওই তিন জনের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। ঠিক কী কারণে এই খুন, তা স্পষ্ট নয়। তবে, লোহা পাচার রুখতে গিয়েই রামজিকে খুন হতে হল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্তে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের খবর দেওয়া হয়েছে।” |