হাতকড়া পরেই পরীক্ষা
দিতে আসছে ফাহাদরা
হাতে হাতকড়া। ইসলামিয়া হাইস্কুলে পরীক্ষা দিতে ঢুকছে ক্লাস সেভেনের ছাত্র ফাহাদ আহমেদ, সাহিল আহমেদ আর রইস আহমেদ।
অথচ বছরখানেক আগেই এক অন্য ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল ফাহাদ বা সাহিলের মতো কিশোরদের। কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকা। হাতে পাথর, তাক করা নিরাপত্তারক্ষীদের দিকে। এদের মধ্যে কেউ স্কুলে, কেউ বা সদ্য স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে ঢুকেছে। পাথর ছুড়ে গোটা উপত্যকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছিল এই কিশোর-যুবকরা। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ। পুলিশ বা নিরাপত্তারক্ষীদের দেখলেই পাথর বৃষ্টি তখন ছিল রোজকার ঘটনা। পরিস্থিতি সামলাতে পাল্টা গুলি চালাত পুলিশও। আর তাতে কোনও যুবক আহত বা নিহত হলে পর দিন আরও জোরদার হত বিক্ষোভ। তার আঁচ এক শহর থেকে ছড়িয়ে পড়ত আর এক শহরে।
নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের মৃত্যুর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিল এই যুবকরা। কিন্তু সেই বিক্ষোভ ছিল শুরু থেকেই হিংসাত্মক। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দেখানোর রাস্তায় হাঁটেনি তারা। ফলে তাদের মধ্যে অনেকেই সেই সময় কাশ্মীর উপত্যকায় শান্তি বিঘ্নিত করা আর হিংসা ছড়ানোর দায়ে গ্রেফতার হয়েছিল।
কিন্তু এক বছর পরে উপত্যকার পরিস্থিতি পাল্টেছে। ধীরে ধীরে ফিরে এসেছে শান্তি। আর জুভেনাইল হোম বা সংশোধনাগারে বসেই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হয়েছে ধৃত কিশোররা। উপত্যকায় এখন সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রদের পরীক্ষা চলছে। প্রশাসন জানাচ্ছে, পাথর ছোড়ার ঘটনায় ধৃত কিশোরদের মধ্যে ১২ জন শ্রীনগরের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। হাতকড়া পরা অবস্থায় তাদের পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে আসছে পুলিশ। তারা ওই কিশোরদের যাতায়াতের জন্য গাড়ির ব্যবস্থাও করেছে।
এম আর গঞ্জ থানা থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র। ওই থানা থেকে আরও দু’জন পরীক্ষা দিচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। শ্রীনগরেরই আর একটি হোম থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র বিলাল আহমেদ। তার সঙ্গে আছে ফাহাদ শওকত ও সাহিল আহমেদ। এরা দু’জন আবার দশম শ্রেণির ছাত্র। তবে সংশোধনাগার থেকে যারা এ বার পরীক্ষা দিচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই যে পাথর ছোড়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত, এমনটা নয়। খুন বা অন্য কোনও অপরাধে দোষী সাব্যস্ত যুবকরাও পরীক্ষার্থীর তালিকায় রয়েছে। যেমন শ্রীনগরের একটি জুভেনাইল হোমের সুপার জানাচ্ছেন, তাঁর হোম থেকে মোট আট জন কিশোর এখন পরীক্ষা দিচ্ছে। এদের মধ্যে পাঁচ জন পাথর ছোড়ার ঘটনায় ধৃত। মধ্য কাশ্মীরের ডি জি এ জি মিরও জানাচ্ছেন, পুলিশের হেফাজতে থাকা সব কিশোরই পাথর ছোড়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তবে তিনি এ-ও বলেন, “হেফাজতে থাকা ছেলেদের পরীক্ষা দিতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার ব্যবস্থা আমরা করছি।”
শ্রীনগর সেন্ট্রাল জেলে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছে দশম শ্রেণির মুজামিল আহমেদ আর সুহেল আহমেদ। জম্মু-কাশ্মীর স্কুল বোর্ডের এক কর্তা বলেন, “দু’জন ছাত্র যে জেলে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছে, তা জানি। কিন্তু কোন অপরাধে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তা স্পষ্ট বলতে পারছি না। আদালতের নির্দেশ মেনেই জেলের ভিতর তাদের পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.