কিষাণগঞ্জ নিয়ে দীনেশের ভুল স্বীকার, দাবি নীতীশের
রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী কিষাণগঞ্জের ঘটনায় নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন বলে দাবি করলেন নীতীশ কুমার। আজ পটনায় জনতা দরবারের ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এ কথা জানান।
তবে সব মিলিয়ে কিষাণগঞ্জে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিক্ষোভে যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ও বিধায়করা অংশ নিয়েছেন, তা নিয়ে এখনও ক্ষুব্ধ নীতীশ কুমার। তাঁর কথায়, “এক রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীরা অন্য রাজ্যে রাজনৈতিক আন্দোলন করতে আসছেন, এটা কতদূর সঠিক! বিহার থেকেও যদি আমরা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে শুরু করি, সেটা কী ঠিক হবে!” এর পরেই নীতীশ বলেন, “প্রথমে রেলমন্ত্রী আমাকে ফোন করে বলেন, আপনারা কিছুই করছেন না। আমি তখনই ওঁকে জানিয়েছিলাম, আপনার দলের মন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের ইউপিএ বিধায়করাই দলবল নিয়ে এসে কিষাণগঞ্জের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। আপনি খোঁজ নিয়ে দেখুন। দু’দিন আগে রেলমন্ত্রী আমাকে ফোন করে দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, উনি ভুল করেছিলেন।” উল্লেখ্য, রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী যে ভাবে কিষাণগঞ্জের ঘটনায় বিহার সরকারকে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা করেন তাতে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ হন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রেলমন্ত্রীর কাছে তিনি এ বিষয়ে উষ্মা প্রকাশও করেন। কার্যত দলনেত্রীর নির্দেশেই দীনেশ নীতীশের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন।
জেডিইউ শিবিরের খবর, নীতীশ সবচেয়ে বেশি চটেছেন পশ্চিমবঙ্গের গ্রন্থাগার মন্ত্রী, তৃণমূলের আব্দুল করিম চৌধুরী যে ভাবে সরাসরি কিষাণগঞ্জের জেলা আধিকারিকদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বৈঠকে সক্রিয় ভাবে অংশ নেন, তাতেই।
ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলেছেন, “আমার কাছে জেলাশাসকের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বৈঠকের মিনিট্স রয়েছে। তাতে মন্ত্রীর নাম এবং বক্তব্য রয়েছে। এটা কখনও হতে পারে নাকি!” জেডিইউ শিবিরের আরও দাবি, সে দিন যে ভাবে কিষাণগঞ্জে বিক্ষোভ দেখাতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিক্ষোভকারীরা এসেছিল, তা মাথায় রেখেই চটজলদি কড়া হতে পারেনি প্রশাসন। তাতে হিতে বিপরীত হতে পারত বলেই মনে করেন নীতীশ।
তাঁর কথায়, “প্রশাসন কিছু করতে গেলেই বিক্ষোভকারীরা ইঁট-পাটকেল ছুড়ত। তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠত। তখন পুলিশ লাঠি চালালেই আমাদের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যম ফলাও করে প্রচার করত।”
মাস কয়েক আগেই কিষাণগঞ্জের পাশের জেলা, আরারিয়ার ফারবিশগঞ্জে একটি কারখানার পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সংখ্যালঘু জনতার সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে পুলিশের। তাতে এক শিশু-সহ তিন জন নিহত হন। ওই ঘটনা নিয়ে এখনও যথেষ্ট বিব্রত নীতীশ শিবির। জেডিইউ শিবিরের দাবি, সে কারণেই নিজের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি বজায় রাখতে তাড়াহুড়ো করে কিষাণগঞ্জে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি প্রশাসন।
তবে কিষাণগঞ্জে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধীদের আন্দোলনকেও এক হাত নিয়েছেন নীতীশ কুমার। আজ তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার কাটিহারে বিশ্ববিদ্যালয় করতে চেয়েছিল। সে সময়ে তো আমরাই বিশ্ববিদ্যালয়টি কিষাণগঞ্জে করার বিষয়ে উদ্যোগী হই। আমরা তো জমি দিয়েও দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই জমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পছন্দ হয়নি।” সরকারি সূত্রে খবর, কিষাণগঞ্জে নীতীশ সরকার জমি দিলেও, তা ছিল তিন খণ্ডে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একই জায়গায়, এক লপ্তে জমি চাওয়ায় সমস্যা দেখা দেয়। এ ব্যাপারে নীতীশের দাবি, “এক জায়গায় জমি ওঁরা যেখানে পছন্দ করেছিলেন, সেখানকার বেশির ভাগ জমিই ভূ-দানের। সেই জমি অধিগ্রহণ করতে গেলে সমস্যা দেখা দেবে। তার পরে তো গ্রেটার নয়ডার মতো আন্দোলন শুরু হয়ে যাবে। তার দায় কে নেবে?”
তাই সব দিক খতিয়ে দেখেই জমি দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন নীতীশ কুমার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.