শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর সঙ্গে বৈঠকে ডানলপের সাহাগঞ্জ কারখানার দরজা খোলার উপরেই গুরুত্ব দিলেন দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। সোমবার মহাকরণে মন্ত্রীর সঙ্গে এই বৈঠকে এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের উদ্যোগকে সমর্থনও জানান কংগ্রেস, তৃণমূল ও সিপিএম সমর্থিত ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা। ডানলপ কর্তৃপক্ষ এ দিন জানান, আগামী ২১ অক্টোবর ডানলপের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্যই সংস্থার পরিচালন পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ডানলপের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের প্রস্তাব, শ্রমিকরা কী চাইছেন, কর্তৃপক্ষের পক্ষে কী কী করা সম্ভব ইত্যাদি বিষয় ওই দিনের আলোচনার তালিকায় রয়েছে।
তিনটি ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে পূর্ণেন্দুবাবুও পর্ষদের বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “২১ তারিখের বৈঠক হলে কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া জানার পরে সরকার প্রয়োজনে দ্বিপাক্ষিক বা ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকবে।” এ দিনের বৈঠকে সিটুর পক্ষে শান্তশ্রী চট্টোপাধ্যায়, আইএনটিটিইউসির বিদ্যুৎ রাউত এবং আইএনটিইউসির হরিহর সিংহ হাজির ছিলেন। অবশ্য শ্রমিক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি মন্ত্রীর কাছে পেশ করা হয়। যদিও তাঁরা জানান, আগে কারখানা চালু হোক, তার পর দাবি-দাওয়া নিয়ে রাজ্য চিন্তা-ভাবনা
করতে পারবে।
মন্ত্রীর সঙ্গে এ দিনের বৈঠক শেষে সন্তোষ প্রকাশ করেন সব শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। সিটু নেতা শান্তশ্রীবাবু বলেন, “ডানলপ কারখানা খোলার বিষয়ে সরকারের অবস্থান নিয়ে আমরা একমত।” ইউনিয়নগুলির সাত দফা দাবির মধ্যে কয়েকটি হল: “প্রথমত, বিনা শর্তে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস প্রত্যাহার করতে হবে। দ্বিতীয়ত, কারখানা বন্ধ থাকাকালীন পুরো মজুরি দিতে হবে। তৃতীয়ত, যে পাঁচ জন শ্রমিককে বরখাস্ত করা হয়েছিল, তাঁদের পুনর্বহাল করতে হবে।” তবে ওই সব দাবি পূরণের আগে শ্রমিকদের স্বার্থে কারখানা চালু করতেই তাঁরা যে বেশি আগ্রহী, এ দিনের বৈঠকে শ্রমমন্ত্রীকে তা তাঁরা স্পষ্ট করে জানিয়েও দেন।
পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, “মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষের বক্তব্যই সমান মর্যাদা দিয়ে শুনছি। ডানলপ কর্তৃপক্ষকে বলেছি, সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক প্রত্যাহার করলে তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। কিন্তু এখনও তাঁরা তা না-করায় আমাদের ক্ষোভের কথা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আমি আশাবাদী কর্তৃপক্ষ ইতিবাচক সিদ্ধান্তই নেবেন। তারপর শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।” কারখানা চত্বরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের থেকে অনেক ভাল বলে এ দিন শ্রমিক নেতারা পূর্ণেন্দুবাবুকে জানান। মন্ত্রী বলেন, কর্তৃপক্ষও আইন-শৃঙ্খলাজনিত কোনও অভিযোগ করেননি। তবে কারখানার ভেতরে মজুত রাখা কিছু কাঁচা মাল তাঁদেরই অন্য কারখানায় সরিয়ে নিয়ে যেতে চান কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রীর মুখে এ কথা শুনে শ্রমিক নেতাদের বক্তব্য, “উৎপাদন চালু রাখলে এবং রাজ্য সরকারের সায় থাকলে তাঁরা এ ব্যাপারে বাধা দেবেন না।” |