স্থায়ী কাজের লিখিত আশ্বাস মেলেনি। তাই রাসচক্র তৈরির কাজ শুরু করেননি কোচবিহারের হরিণচওড়ার বাসিন্দা আলতাফ মিঁয়া। ওই ঘটনায় রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের কর্তারা। প্রথা মেনে প্রতি বছর লক্ষ্মী পূর্ণিমার পর দিন থেকে রাসচক্র তৈরির কাজ শুরু করেন আলতাফ।
|
আলতাফ মিঁয়া। |
এ বার লক্ষ্মী পূর্ণিমা পেরিয়ে গিয়েছে কয়েক দিন আগে। কিন্তু চক্র তৈরির কাজ শুরু হয়নি। অথচ আগামী ১০ নভেম্বর প্রথা মেনে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়ে রাসচক্র ঘুরিয়ে উৎসবের সূচনা করবেন দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি তথা কোচবিহারের জেলাশাসক। চক্রটি তৈরি করতে সময় লাগে এক মাস। সময় মতো কাজ হবে কিনা তা নিয়ে ট্রাস্ট বোর্ড কর্তাদের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। কেন কাজ শুরু করেননি আলতাফ? কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সচিব তাপস মণ্ডল ওই ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেননি। বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, এক মাস আগে স্থায়ী চাকরির দাবিতে ট্রাস্ট বোর্ডকে চিঠি দেন আলতাফ। তিনি জানান, দেবত্র বোর্ডের অধীনে কাজ না-জুটলে তাঁর পক্ষে রাসচক্র তৈরি করা সম্ভব হবে না। চিঠি পেয়ে ট্রাস্টের কর্তারা রাসচক্রের পারিশ্রমিক বাড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই প্রস্তাব যে আলতাফের পছন্দ হয়নি সেটা এখনও চক্র তৈরির কাজ শুরু না-হওয়ার ঘটনায় স্পষ্ট। আলতাফ বলেন, “দেবোত্তর কর্তৃপক্ষ মাসে ৩ হাজার টাকার মজুরিতে রানি বাগানে নৈশ প্রহরীর কাজ দিয়েছে। ওই টাকায় সংসার চলে না। সে জন্যই দিনে ১৬৫ টাকা হাজিরায় স্থায়ী কাজ চেয়েছি। ওই বিষয়ে লিখিত আশ্বাস না-পাওয়া পর্যন্ত কাজ শুরু করতে পারব না।” রাসমেলার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ আলতাফের রাসচক্র। বাঁশ কেটে বাতা তৈরি করে প্রায় এক সপ্তাহ শুকিয়ে তিনি শুরু করেন ২২ ফুট উঁচু চক্র তৈরির কাজ। তার উপরে থাকে কাগজের কারুকাজ। মেলায় ভিড় করা ভক্তরা একবার ওই রাসচক্র ছুঁয়ে দেখার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। কিন্তু যে কারিগর চক্রটি তৈরি করেন তাঁর অভিযোগ, প্রতি বছর মেলার আগে শুধু আশ্বাস দেওয়া হয়। কাজ শেষ হয়ে গেলে কর্তাদের কেউ তাঁর খোঁজ রাখেন না। এ ছাড়াও টানা এক মাস খেটে রাসচক্র তৈরি করে মজুরি মেলে মাত্র সাড়ে ৫ হাজার টাকা। দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি তথা জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “আগামী সপ্তাহে বোর্ডের সভায় ওই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |