নকশালবাড়ি
দলে এলেন কংগ্রেসের ৫, পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের
ক্ষমতার সমীকরণে ‘পরিবর্তন’-ই হল নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতে। সৌজন্যে, পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী-সহ পাঁচ কংগ্রেস সদস্যের আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগদান। ফলে, এত দিন কংগ্রেস-তৃণমূল জোট পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ডে এ বার একক ভাবে ক্ষমতায় আসতে চলেছে তৃণমূল।
রবিবার পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী সরোজা তামাং এবং প্রাক্তন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি তথা সমিতির কর্মাধ্যক্ষ অমর সিংহ-সহ পাঁচ কংগ্রেস সদস্য সদলবল তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের সঙ্গেই এলাকার আপার বাগডোগরা, হাতিঘিষা, নকশালবাড়ি ও মণিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০ কংগ্রেসি পঞ্চায়েত সদস্যও দল ছেড়েছেন। এ দিন তৃণমূলে যোগ দেন সিপিএমের হাতিঘিষা লোকাল কমিটির সদস্য নকুল বাঘোয়ার-সহ দুই স্থানীয় সিপিএম নেতাও। নকশালবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে আয়োজিত এক সভায় দলত্যাগীদের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, কৃষ্ণ পাল প্রমুখ।
তৃণমূলে যোগদান অনুষ্ঠানে গৌতম দেব। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
গৌতমবাবুর দাবি, “কংগ্রেস ছেড়ে নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির ৫ সদস্য-সহ কয়েক হাজার সমর্থক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এর ফলে ওই পঞ্চায়েত সমিতি আমাদের দলের দখলে এসেছে। এ বার এলাকায় উন্নয়নে জোয়ার আনা হবে। যাঁরা যোগ দিয়েছেন, তাঁরা দলে যথাযোগ্য মর্যাদাও পাবেন।” নকুলবাবুকে সিপিএম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাতিঘিষা লোকাল কমিটির সম্পাদক মাধব সরকার।
বস্তুত, মাত্র চার মাস আগে এই মাটিগাড়া নকশালবাড়ি কেন্দ্র থেকেই বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন খোদ দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার। এমনকী, নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল কংগ্রেসেরই। স্বাভাবিক ভাবেই এই পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়ায় কিছুটা হলেও ‘অস্বস্তি’তে কংগ্রেস নেতৃত্ব। যদিও শঙ্করবাবু এ দিন বলেছেন, “সুযোগসন্ধানীরাই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এতে কংগ্রেস দুর্বল হবে না। আমরা আরও ভাল করে কাজ করতে পারব।” তাঁর পাল্টা দাবি, “তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে আসতে চেয়ে আমার কাছেও প্রচুর আবেদন জমা পড়েছে। সে সব ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা হচ্ছে।”
১৮ আসনের ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতাসীন ছিল কংগ্রেস-তৃণমূল জোট। এত দিন সেখানে কংগ্রেসের ৯ এবং তৃণমূলের ৩ জন সদস্য ছিলেন। রয়েছেন বামেদের ৩ এবং ৩ নির্দল সদস্য। দলে ধস নামতে চলেছে আশঙ্কা করে বৃহস্পতিবারই নকশালবাড়ি ব্লক কমিটি ভেঙে দিয়েছিলেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের আশঙ্কা সত্যি প্রমাণ করে শুক্রবার দুপুরে পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী সরোজা তামাং, কর্মাধ্যক্ষ অমর সিংহ-সহ ৪ সদস্য তৃণমূলে যোগ দিতে চেয়ে ব্লক প্রশাসনকে চিঠি দেন। এ দিন পবন সিদ্ধু নামে পঞ্চায়েত সমিতির আরও এক কংগ্রেস সদস্যও তৃণমূলে যোগ দেন।
অমরবাবুদের দাবি, তাঁদের নৈতিক সমর্থন জানিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির ৩ নির্দল সদস্য। সরোজা দেবীকে সভানেত্রী রেখেই সমিতির কাজ হবে তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছেন। সরোজা দেবীর দাবি, “পঞ্চায়েত সমিতিতে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছিল না। বিধায়ক তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্করবাবু আমাদের সঙ্গে উন্নয়নের ব্যপারে কথা বলছিলেন না। তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা ওই দলে যোগ দিয়েছি।” অমরবাবুর অভিযোগ, “দলে একনায়কতন্ত্র চলছিল। বিধানসভা নির্বাচনে মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি এলাকায় আমায় দাঁড় করানোর আশ্বাস দিয়ে শঙ্করবাবু নিজে দাঁড়িয়েছেন। এখন দেখছি, নিজের কাছের লোকেদের দিয়ে তিনি দল চালানোর চেষ্টা করছেন। এই অবস্থায় এলাকায় উন্নয়নের কথা ভেবে আমরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।” শঙ্করবাবু অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “যাঁরা সুযোগসন্ধানী, তাঁদের অভিযোগের কোনও উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন করি না।”
এ দিন সভার পরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে পদযাত্রা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, “দলে যে কেউ আসতে পারেন। জোর করে কাউকে আনা হয়নি। এই ঘটনায় জোট রাজনীতিতে প্রভাব পড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.