জুয়ার আসর থেকে দুই ছাত্র পরিষদ নেতা-সহ ৮ যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। দুই ছাত্র পরিষদ নেতার মধ্যে একজন রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ সাহা। অন্যজন ওই কলেজেরই প্রথম বর্ষের সন্তু চৌধুরী। শনিবার রাত সওয়া বারোটা নাগাদ রায়গঞ্জ পুরসভা লাগোয়া এলাকা থেকে তাদের ধরা হয়। ধৃত ৬ যুবকের নাম সমীর বর্মন, উত্তম বাঁশফোর, উৎপল বিশ্বাস, বিপন সাহা, রাজেশ বাঁশফোর ও গৌতম জমাদার। রায়গঞ্জ শহরে তাদের বাড়ি। ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ ১২৪০ টাকা বোর্ড মানি আটক করা হয়। রবিবার তাদের রায়গঞ্জের মুখ্যবিচার বিভাগীয় আদালতে তোলা হলে ভারপ্রাপ্ত বিচারক রাজকুমার নাইয়ে প্রত্যেককে ব্যক্তিগত ৩০০ টাকা করে জরিমানার বিনিময়ে জামিন মঞ্জুর করেছেন। পাশাপাশি, প্রয়োজনে প্রত্যেককে আগামী ২৯ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধৃত দুই নেতার শাস্তি ও কলেজ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে এ দিন বিকেলে আদালত চত্বর-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। রায়গঞ্জ থানার আইসি জ্যোতিষ রায় বলেন, “জুয়া খেলার অভিযোগে তাদের ধরা হয়। শুনেছি, তাদের মধ্যে কলেজের দু’জন পড়ুয়া রয়েছে। পুলিশ আইন অনুযায়ী কাজ করেছে।” এ দিন আদালতে প্রসেনজিত ও সন্তু নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বলেন, “জুয়া খেলার সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত নই। ব্যক্তিগত কাজ সেরে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম। সেই সময় পুলিশ জোর করে আমাদের থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে জুয়ার মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমরা রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার।” ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি তুষারকান্তি গুহ বলেন, “সাধারণ সম্পাদক-সহ দুই ছাত্র পরিষদ নেতা পুলিশের চক্রান্তের শিকার হয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে। সংগঠনে কোনও নেতা এই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “কলেজের পড়ুয়ারা জুয়া খেলায় জড়িত থাকবে বলে মনে হয় না। তাঁরা পুলিশি ষড়যন্ত্রের শিকারও হতে পারে। সমস্ত বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দল ব্যবস্থা নেবে।” ছাত্র পরিষদ নেতা জুয়া খেলার অভিযোগে ধরা পড়ায় রায়গঞ্জে ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভারপ্রাপ্ত জেলা সভাপতি প্রিয়ব্রত দূবে বলেন, “অবিলম্বে ওই দু’জনকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করার দাবিতে টানা আন্দোলনে নামা হবে।” এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রাণেশ সরকার বলেন, “কলেজে শিক্ষার পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে অবিলম্বে কলেজ কর্তৃপক্ষ দুই ছাত্র পরিষদ নেতার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিলে অনির্দিষ্ট কালের জন্য জেলা জুড়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে।” এই বিষয়ে তুষারবাবু বলেন, “ছাত্র পরিষদের দুই নেতার এখনও দোষ প্রমাণিত হয়নি।” কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকার বলেন, “খোঁজ নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।” |