চার দিন ধরে তালা গেটে
স্থায়ী চিকিৎসকের দাবি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে
প্রায় এক মাস ধরে চিকিৎসক নেই। ফলে মিলছে না পরিষেবা। ক্ষোভে বৃহস্পতিবার থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা দিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাটি দুবরাজপুর ব্লকের যাত্রা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছিলেন বিএমওএইচ কুণাল মুখোপাধ্যায়। সঙ্গে পুলিশও। কিন্তু রবিবার পর্যন্ত সমস্যা মেটেনি। একই ভাবে তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গত ১২ বছর ধরে মাঝে মধ্যে চিকিৎসক না থাকা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। কিছুদিনের জন্য এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক আসেন এবং চলে যান। তাতে দুর্ভোগে পড়তে হয় মানুষকে। তাই এ বার যত দিন না স্থায়ী ভাবে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও চিকিৎসক আসছেন ততদিন এ ভাবেই বন্ধ থাকুক হাসপাতাল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুবরাজপুর ব্লকের পদুমা পঞ্চায়েতের ঘোগা গ্রামে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, তার আগেও ওই হাসপাতালটি চালু ছিল। চিকিৎসা পরিষেবা মিলত। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উপরে পদুমা ও সাহাপুর পঞ্চায়েত এলাকার ১৫-২০টি গ্রামের মানুষ নির্ভর করেন। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, যদি চিকিৎসক না থাকে তা হলে এলাকার মানুষ যাবেন কোথায়? তাঁদের ক্ষোভ, হাসপাতালটির পরিকাঠামো যথেষ্ট ভাল। কিন্তু মাঝে মধ্যে চিকিৎসক না থাকায় ভুগতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
ছবিটি তুলেছেন দয়াল সেনগুপ্ত।
এলাকার বাসিন্দা জগন্নাথ ঘোষ, রবি ঘোষ, নন্দ হেমব্রম, বারিন রায়, চিন্তা হাজরা বলেন, “প্রথমত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক জন স্থায়ী চিকিৎসক চাই। পাশাপাশি অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদেরকেও নিজেদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে হবে। কারণ এখানে চিকিৎসক না থাকলে অন্তত ১৫ কিলোমিটার দূরে দুবরাজপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অথবা ২০-২২ কিলোমিটার দূরে সিউড়ি সদর হাসপাতালে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। সে জন্য আর্থিক স্বাচ্ছন্দ ও সময় দুটোই দরকার। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুরে কী হবে?”
দুবরাজপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সুত্রে জানা দিয়েছে,ওই হাসপাতালে চিকিৎসক ছাড়া, এক জন নার্স, ফার্মাসিস্ট এবং দু’জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী রয়েছেন। পাশাপাশি একটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রও চলে ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরেই। সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ইস্তফা দেওয়ার পরেই ওই হাসপাতালে চিকিৎসিক ছিল না। তবে গ্রামবাসীদের বাধায় অন্য সহকর্মীরাও হাসপাতালে ঢুকতে পারছেন না। একই ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রসূতি ও শিশুদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া ও টিকাকরণ কর্মসূচি। কারণ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা এএনএম, সেকেন্ড এএনএম, এবং তিন আশাকর্মীও উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকতে পারেননি। শনিবার সকালে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা ঝুলছে। মূল গেট-সহ বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার ঝোলানো। সেগুলিতে স্থায়ী চিকিৎসক নিয়োগ-সহ স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত করার দাবি জানানো হয়েছে। উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকতে না পেরে এএনএম-সহ বাকি কর্মীরা বাইরেই বসেছিলেন।
বিএমওএইচ কুণাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “চিকিৎসক ইস্তফা দিলে রাতারাতি তো অন্য কোনও চিকিৎসককে ওখানে পাঠানো সম্ভব নয়। তবে এই বিষয় নিয়ে আমরা চিন্তিত। আন্তরিক ভাবেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু গ্রামবাসীরা সেটা মানেননি।” তিনি আরও বলেন, “সরকারি প্রতিষ্ঠান এ ভাবে বন্ধ করে দিয়ে তাঁরা ঠিক কাজ করেননি। কেন না স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি খোলা থাকলে যেটুকু পরিষেবা পাওয়া যেত সেটাও বন্ধ। সব চেয়ে ক্ষতি হচ্ছে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ থাকায়। বিষয়টি সিএমওএইচ ও জেলা প্রশাসনে জানানো হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.