তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা নালিশ
অবস্থা সামলাতে কড়া হতে নির্দেশ নেতৃত্বের
রাজ্যপাটে দল ক্ষমতা আসার চার মাসের মধ্যেই নানা সমস্যায় জর্জরিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল। জঙ্গলমহলে মাওবাদী প্রভাব বৃদ্ধির কাঁটা তো রয়েইছে। সেই সঙ্গে জেলা জুড়েই তোলা আদায়, জোর-জুলুমর মতো নানা ঘটনায় জড়িয়ে যাচ্ছে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নাম। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা নেতাদের আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব।
শুক্রবারই জঙ্গলমহল সফরে মেদিনীপুরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। দল সূত্রে খবর, শুক্র রাতেই জেলার কয়েক জন নেতার সঙ্গে আলোচনা করেন মুকুলবাবু। বেশ কয়েকটি এলাকার পরিস্থিতির কথা জানতে চান। সব শুনে আরও কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার নির্দেশ দেন মুকুলবাবু। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, “পরিস্থিতি কথা শুনেই উনি আরও কঠোর হতে বলেছেন। জানিয়েছেন, দলবিরোধী কাজে জড়িতদের কখনই বরদাস্ত করা হবে না।” তবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয়ে জেলা নেতৃত্বের ওই রাতে কোনও কথা হয়নি বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। তবে জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “নেত্রী অবশ্য তাঁর কথাবার্তায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই জেলার সব খবরই তাঁর কাছে রয়েছে।”
ভোটের পর থেকেই জেলা জুড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। কোথাও কোনও সিপিএম সমর্থক পরিবারকে বয়কট করা হয়েছে। সালিশি সভা ডেকে জরিমানা দেওয়ার ফতোয়া দেওয়া হয়েছে। কোথাও আবার বিরোধী কর্মী- সমর্থকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় তৃণমূলের একাংশও বেশ অস্বস্তিতে। অভিযোগ, রাজ্যে পালাবদলের পর সিপিএমের একাংশ কর্মী তৃণমূলেরই একাংশ নেতার মদতে ‘শাসক’ দলে ঢুকে পড়েছে। এখন তাঁরাই ঘুরে ‘পুরনো’ তৃণমূলীদের ভয়ে দেখাচ্ছেন। দলীয় সূত্রে খবর, গত বুধবার নারায়ণগড়ের কুনারপুরের সাইবনিতে এমনই ঘটনা ঘটেছে। প্রাণভয়ে সেদিনই ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন এই গ্রামের প্রায় ৩০ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। রবিবার সকালেই ঘরছাড়া তৃণমূল কর্মী- সমর্থকেরা মেদিনীপুরে এসে জেলা নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানান। তাঁদের বক্তব্য, স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশের মদতেই সিপিএম নেতা-কর্মীদের এই দাপট। অভিযোগ পেয়েই দলের নারায়ণগড় ব্লকের নেতা সূর্য অট্টকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন জেলা তৃণমূল নেতা দীনেন রায়। শাসক দলের মধ্যে শৃঙ্খলারও অভার রয়েছে বলে অভিযোগ।
শুক্রবার রাতে মেদিনীপুরে এসে পৌঁছনোর পরই তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে সার্কিট হাউসে ভীড় করেন দলের জেলা নেতারা। তবে নেত্রীর সঙ্গে সকলের দেখা হয়নি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ই জেলার কয়েক জন নেতার সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। সেই সময়ই তিনি কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করার নির্দেশ দেন। দলের একাংশ নেতার ধারণা ছিল, এই সময় জেলায় এসে তাঁদের সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা করবেন নেত্রী। কিন্তু, সেই ধারণা অচিরেই ভেঙে যায়। সূত্রের খবর, মুখোমুখি দেখা হওয়ার পর একাধিক জেলা নেতার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন মমতা। তবে কারও সঙ্গেই সাংগঠনিক বিষয়ে কথা বলেননি। অনান্য জেলার মতো তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা কমিটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সূত্রে খবর, চলতি মাসের ৩০ তারিখ দলের সাংগঠনিক নির্বাচন হবে। উপস্থিত থাকবেন মুকুলবাবু। জেলা তৃণমূল নেতা প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “ দলবিরোধী কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপই করা হচ্ছে। কেউ সিপিএমের কায়দায় অন্যায়- অত্যাচার করলে তা মেনে নেওয়া হবে না।” একই বক্তব্য দীনেন রায়ের। তাঁর কথায়, “সবক’টি অভিযোগ খতিয়ে দেখেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.