মোহনবাগানের নতুন কোচ নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা রবিবারও কাটেনি। নানা অঙ্ক ব্যাপারটাকে আরও জটিল করে তুলেছে। উঠে আসছে অনেক নাম। সুব্রত ভট্টাচার্যর সঙ্গে আলোচনায় আছেন সাব্বির আলি এবং কার্লোস পাহিরা। আবার এখনকার সহকারী কোচ বার্নার্ড ওপারানোজিকে রেখে এক ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচকে এনে আপাতত কাজ চালানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরে কাউকে চিফ কোচ করে আনা হতে পারে।
রবিবার রাতে ঘণ্টা দুয়েক আলোচনায় বসেও জটিল পরিস্থিতির সমাধানসূত্র বার করতে পারেননি মোহন-কর্তারা। বিদেশ থেকে রাতে শহরে পৌঁছে ক্লাব প্রেসিডেন্ট টুটু বসু নিজের বাড়িতে আলোচনায় বসেছিলেন প্রধান কর্তাদের সঙ্গে। কিন্তু অসুস্থতার জন্য বেশিক্ষণ আলোচনা চালাতে পারেননি টুটু। বললেন, “আমার শরীর খারাপ। তাই আলোচনা স্থগিত রেখেছি। সোমবার আবার আলোচনা হবে। কোনও হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে চাই না। ভেবেচিন্তে এগোতে হবে।”
কর্তারা প্রথমে জানতেন কোচেদের জন্য এ বার আই লিগে ‘এ’ লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই। কিন্তু শেষ সভায় ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ক্লাবগুলোকে জানানো হয়েছে, রিজার্ভ বেঞ্চে ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচ রাখা বাধ্যতামূলক। ফলে সুব্রতদের মতো কাউকে কোচ করলে সঙ্গে একজন লাইসেন্সধারী কোচ রাখতেই হবে। সে ক্ষেত্রে জনা চারেক কোচ এবং টেকনিক্যাল কমিটিসমস্যা তৈরি হতে পারে। বার্নার্ডকে রেখে ‘এ’ লাইসেন্স কোচ আনলে সেই সমস্যা নেই।
ক্লাব সূত্রের খবর, ফুটবলারদের একটা বড় অংশ এ দিন সকালে দ্বিতীয় ফর্মুলার পক্ষে মত দিয়েছেন। ডার্বির সঙ্গে বার্নার্ড প্রথম দিন থেকে কাজ করছেন। তাই ওডাফা, ব্যারেটো, সুনীল, প্রদীপদের সঙ্গে নতুন ফুটবলারদেরও তিনি চেনেন। আই লিগ খেলতে নামার ছয় দিন আগে নতুন করে কাউকে এনে চাপিয়ে দেওয়ার ঝুঁকি তাই নিতে চাইছেন না কর্তাদের একাংশ। পাশাপাশি সাব্বিরের মতো লাইসেন্সধারী কোচের নাম উঠেছে। দিন দশেক আগে সুব্রতর নাম কোচ হিসাবে উঠেছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে কর্তারা ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন পরিচিত বিদেশি কোচ তাদের প্রথম পছন্দ। স্পনসর ইউ বি-ও নাকি চাইছিল ডার্বির বদলে বিদেশি কোচ। কিন্তু হঠাৎ-ই আবার প্রবল ভাবে উঠে এসেছে সুব্রতর নাম। ক্লাবের একটি প্রভাবশালী অংশ চাইছে, মোহনবাগানে আগে সাফল্য থাকায় সুব্রত ভট্টাচার্যকে দায়িত্ব দিয়ে যদি ট্রফির মুখ দেখা যায়। তবে মোহনবাগান বলেই কোন অঙ্ক যে শেষ পর্যন্ত মিলবে তা বলা যাচ্ছে না।
এর বাইরেও সমস্যা আছে। যাঁকেই কোচ করা হোক, তার জন্য ইউ বি-র অনুমোদন লাগবে। টিম সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে মোহনবাগানে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন বোর্ডে থাকা স্পনসরের লোকেরা। কর্তারা তাই কোচ ঠিক করার পর কথা বলবেন স্পনসরের প্রতিনিধির সঙ্গে। এ দিন ফুটবলাররা প্র্যাক্টিসে নামার আগে সচিব ও অর্থ সচিবের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। কয়েক জন সিনিয়র ফুটবলারের সঙ্গে আলাদা কথা বলেন কর্তারা। মোহন-সচিব অঞ্জন মিত্র বলেন, “ফুটবলারদের বলেছি নিজেদের ভুল শোধরানোর চেষ্টা নিজেদেরই করতে হবে। সব তো কোচ করে দেবে না!” |