ডার্বি-বিদায়ের চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বন্ধুর সমর্থনে মুখ খুললেন ট্রেভর মর্গ্যান। ইস্টবেঙ্গল কোচ কটাক্ষ করলেন মোহনবাগানের টেকনিক্যাল কমিটিকে।
আগের দিন বলেছিলেন, “আমি কিছু বললে তো হেডলাইন হয়ে যাবে”। রবিবার সেই আশঙ্কাকে সাইডলাইনের ধারে সরিয়ে রেখে, অনুশীলনের পর লাল-হলুদ কোচ পরোক্ষে সমালোচনা করলেন মোহনবাগান কর্তাদের। বললেন, “তিন ম্যাচ যথেষ্ট নয়। মাত্র তিন ম্যাচে কোনও কোচের যোগত্য বিচার করা সম্ভব নয়। আমার দেখা সবথেকে কম সময়ের কোচ। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে, এত বছর ধরে ও ফুটবলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। ওর মধ্যে নিশ্চয়ই কোনও গুণ আছে। না হলে এত দিন ধরে এই পেশায় টিকে থাকা তো আর সহজ কথা নয়। খুব খারাপ লাগছে।”
ডার্বি মোহনবাগানের টেকনিক্যাল কমিটি না মানতে পেরেই চলে গিয়েছেন। এ দিনও তিনি মুখ খোলেননি। বন্ধু মর্গ্যান কিন্তু ঘুরিয়ে তোপ দাগলেন প্রতিপক্ষের কমিটিকে। তাঁর মন্তব্য, “বিশ্বের সব ক্লাবেই কোচেরা নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা এবং পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে। হঠাৎ করে সেই ভাবনা-চিন্তার ওপর যদি কোনও টেকনিক্যাল কমিটিকে বসিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে স্বাধীন ভাবে কাজ চালানো বেশ কঠিন। দু’পা এগোলেই মনে হবে কেউ পিছনে টানছে। মাথার ওপর এত চাপ নিয়ে একটা লোক ভাল কাজ করবে কী করে? ডার্বি পদত্যাগ করেছে ঠিকই, তবে ওর এই সিদ্ধান্তের পিছনে বেশ কিছু ন্যায্য কারণ ছিল। যা অস্বীকার করা যাবে না।” |
তিন ম্যাচ খেলে দুই ম্যাচে হার, জয় নেই। পারফরম্যান্স যাই হোক, বিতর্কিত মন্তব্যে বেশ এগিয়ে ছিলেন ডার্বি। পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষোভ থেকে শীর্ষকর্তাদের কটাক্ষ- সব সময়ই বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন তিনি। বন্ধুকে নিয়ে বিতর্কের প্রসঙ্গগুলো এড়িয়ে গেলেও মর্গ্যান বললেন, “পারফরম্যান্স নিশ্চয়ই জরুরি। কিন্তু ডার্বি সময় পেল কোথায়? মাত্র তিনটে ম্যাচ পরেই ফলের আশা করা ঠিক নয়। ওকে আরও একটু সময় দেওয়া উচিত ছিল।” মর্গ্যানের সঙ্গে একমত ইস্টবেঙ্গলের সহকারী কোচ অ্যালভিটো ডি’কুনহাও। তাঁর মুখেও একই কথা, “ডার্বিকে সময় দেওয়া উচিত ছিল।”
রবিবার অনুশীলনের পরে সুপার কাপের দল ঘোষণা করলেন মর্গ্যান। তাতে প্রত্যাশা মতোই বাদ পড়েছেন সন্দীপ নন্দী এবং অভ্র মণ্ডল। সোমবার তাঁদের জায়গায় নয়াদিল্লি যাচ্ছেন জয়ন্ত পাল এবং গুরপ্রীত সিংহ। লাল-হলুদ কোচ বললেন, “সুপার কাপে নতুনদের সুযোগ দিতে চাই। আই লিগের আগে যাতে ওরাও তৈরি হতে পারে। আমার সঙ্গে অভ্র আর সন্দীপের সকালেই কথা হয়েছে।” চোটের জন্য নেই নওবা, সৌমিক, রাজু এবং মেহতাব। বাদ বলজিৎ সাহনিও। সবচেয়ে চিন্তার ব্যাপার হল, মেহতাবকে সম্ভবত পাওয়া যাবে না আই লিগের শুরুতেও।
চোট-সমস্যায় জর্জরিত দলকে নিয়ে বেশ চিন্তায় মর্গ্যান। দিল্লি যাওয়ার আগের দিন বললেন, “আগের বছর আই লিগে রানার্স হয়েছিলাম। তাই এ বার সবার প্রত্যাশা আরও বেড়ে গিয়েছে। গতবারের চেয়ে এ বারের আই লিগ আরও বেশি কঠিন। চার্চিল ব্রাদার্স এবং প্রয়াগ ইউনাইটেড দারুণ ফর্মে আছে। তবে একটা কথা বলতে পারি, চোট-আঘাতের সমস্যায় না পড়লে ইস্টবেঙ্গল এ বছর অনেক ভাল ফুটবল খেলবে।” |