সেবাস্তিয়ান ভেটেল বা লুই হ্যামিল্টন নন, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে এ দেশের ইতিহাসে প্রথম ফর্মুলা ওয়ানকে সুপারহিট করতে সংগঠকদের বাজি যথারীতি সেই সচিন রমেশ তেন্ডুলকর।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলেননি, চলতি ভারত-ইংল্যান্ড ওয়ান ডে সিরিজেও খেলছেন না ৯৯টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির মালিক। কিন্তু আগামী ৩০ অক্টোবর বুদ্ধ ইন্টারন্যাশনাল সার্কিটে তাঁর উপস্থিতির উপর অনেকটাই নির্ভর করছেন সংগঠকরা। ভারতে ফর্মুলা ওয়ান রেসিং যাঁরা এনেছেন, সেই জেপি গ্রুপের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আসকারি জাইদি আনন্দবাজারকে রবিবার সন্ধেয় একান্ত সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বললেন, “সচিন ফর্মুলা ওয়ানের ভক্ত, সবাই জানে। তা ছাড়া ভারতে সেলিব্রিটি ভাবমূর্তির দিক থেকেও ওর সঙ্গে কারও তুলনা হয় না। এখন ও খেলছেও না। আমরা সচিন তেন্ডুলকরকে অবশ্যই রেস দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আশা করছি, সচিন এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমাদের সঙ্গী থাকবে।”
জাইজির আত্মবিশ্বাসের কারণও আছে। জেপি সিমেন্টস-এর প্রধান ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর সচিন, তা ছাড়া ক্রিকেটকে বাদ দিলে গাড়ি তাঁর অন্যতম প্রেম। মাইকেল শুমাখারের মতো কিংবদন্তি ফমুর্লা ওয়ান ব্যক্তিত্বের সঙ্গেও বন্ধুত্ব আছে। নিজের দেশের মাটিতে অনুষ্ঠেয় প্রথম ফর্মুলা ওয়ান রেস নিয়ে আর পাঁচ জনের মতোই আবেগাপ্লুত সচিন। রেস দেখতে আসা নিয়ে তাঁর চূড়ান্ত সম্মতি সংগঠকরা ঘোষণা না করলে কী হবে, তাঁরা ধরেই নিচ্ছেন ২৮-৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় রেসের শেষ দিন এক ঘন্টার জন্য হলেও আসবেন সচিন। |
সচিন যদি বাজি নম্বর ওয়ান হন, দুই নম্বরে অবশ্যই শাহরুখ খান। সপরিবারে ফর্মুলা ওয়ান দেখতে নয়ডায় আসছেন শাহরুখ, তিন দিনই তাঁর থাকার কথা। কারণ ৩৫ লক্ষ টাকা দিয়ে তিনি বুদ্ধ ইন্টারন্যাশনাল সার্কিটে কিনেছেন কর্পোরেট বক্স। থাকার কথা অর্জুন রামপল, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া, দীপিকা পাড়ুকোন-সহ নামী-দামি বলিউড ব্যক্তিত্বদের। আর ক্রিকেট? শুধু সচিন তেন্ডুলকর কেন, আসতে পারেন ভিভিএস লক্ষ্মণ ও রাহুল দ্রাবিড়ও। সংগঠকরা সে রকমই দাবি করছেন। আর লিয়েন্ডার পেজ, সানিয়া মির্জারা তো নিজেরাই জানিয়েছেন বুদ্ধ সার্কিটে রেস দেখতে উন্মুখ হয়ে আছেন।
আগামী মঙ্গলবার উদ্বোধন হতে চলেছে ট্র্যাকের এবং সে দিনই হবে টেস্ট ড্রাইভ। ঘণ্টায় গড়ে ৩২০ কিলোমিটার গতিতে ছুটবে গাড়ি। থাকবে অত্যাধুনিক মেডিকেল সেন্টার, দুটো হেলিকপ্টার পার্ক করা থাকবে ট্র্যাকের বাইরে, কোনও রকম দুর্ঘটনার থেকে বাঁচতে আপৎকালীন ব্যবস্থা।
বুদ্ধ ইন্টারন্যাশনাল সার্কিটের ট্র্যাকের বিশেষত্ব কী? বলা হচ্ছে, এই ট্র্যাক হল ‘অ্যাডভেঞ্চারাস’, যেখানে অন্তত তিনটে জায়গায় খাড়াই অন্তত ১৪ মিটার আর রেসের আকর্ষণ বলতে রয়েছে তিনটে ‘টার্ন’, যেখানে রাস্তা চওড়া, যাতে ড্রাইভাররা ওভারটেক করার সুযোগ পাবেন। এ ছাড়াও রয়েছে ১.২ কিমি মসৃণ রাস্তা, যেখানে গাড়ির গতি উঠবে ৩২০ কিলোমিটারেরও বেশি।
কিন্তু ৩০ অক্টোবরের পরে কী হবে এই আন্তর্জাতিক মানের ট্র্যাকের? জাইদির মুখে শুনুন, “মোটর জিপি, মানে বিশ্বের সর্বোচ্চ মানের মোটরসাইকেল রেস হবে, হবে ফর্মুলা থ্রি, হবে সুপারবাইক। শুটিং করতে চেয়ে বলিউডের বিভিন্ন আবেদন জমা পড়েছে। সেগুলোও বিবেচনা করা হবে।”
কিন্তু এ সবও নয়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রেস শেষ হলেই মার্সিডিজ এখানেই খুলতে চলেছে ড্রাইভার্স অ্যাকাডেমি। যেখানে দেশের প্রতিশ্রুতিমান ড্রাইভারদের বেছে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যাতে ভবিষ্যতের নারায়ণ কার্তিকেয়ন বা করুণ চন্দোকদের ড্রাইভার হতে বিদেশে আর পাড়ি দিতে না হয়। |