ধোনির টিমকে ইংল্যান্ডে যেমন দেখিয়েছিল, তার চেয়ে উপ্পলে ওদের একেবারে আলাদা মনে হল। এ জন্যই বলি, দেশের মাটিতে ভারতকে হারানো খুব কঠিন। একই কারণে শুধু দেশের মাঠে পারফরম্যান্স দিয়ে ধোনিদের বিচার করা যাবে না। নিজেদের দেশে ভারতকে চুরমার করে দিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু এখানে ধোনিদের সঙ্গে সমানে-সমানে লড়াই করতে গেলে ইংল্যান্ডকে খুব ভাল খেলতে হবে। হায়দরাবাদে যা দেখলাম, ইংল্যান্ডকে অনেক উঁচুতে নিজেদের খেলাকে নিয়ে যেতে হবে। আরও পরিষ্কার করে বলতে গেলে, ভারতের মাটিতে ভারতের সঙ্গে লড়তে গেলে স্পিন ভাল খেলতে হবে।
স্পিনের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড যে শটগুলো খেলল বা যে ভাবে রান করল, সেটা খুবই সাধারণ। স্পিনের বিরুদ্ধে বেশি বড় শট খেলতে গেলে সাফল্যের বিশেষ সুযোগ থাকে না। অশ্বিন আর জাডেজা-কে বারবার অনসাইডে মারার চেষ্টা করছিল ইংল্যান্ড। অন্য দিকে টার্ন কী ভাবে খেলতে হয়, তার আদর্শ উদাহরণ দেখাল ধোনি আর রায়না। ওরা স্পিনারদের বারবার এক জায়গায় মারছিল। বাঁ-হাতি স্পিনার সমিত পটেলকে এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে মারছিল ধোনি। রায়নাও এক জায়গায় মারছিল গ্রেম সোয়ানকে। আশা করব সোমবারের ম্যাচে ইংরেজ ব্যাটসম্যানরা প্রথম ম্যাচের ভুল থেকে শিক্ষা নেবে। না হলে দিল্লিতেও এক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
কেভিন পিটারসেনের একটা মারকাটারি ইনিংস ইংল্যান্ডের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। যারা শুক্রবারের ম্যাচটা দেখেছিল, তাদের নিশ্চয়ই পিটারসেনের ব্যাটিং মনোভাব ভাল লাগেনি। আমার তো একেবারেই ভাল লাগেনি। জানি ওর নিজস্ব খেলার ধরন আছে। কিন্তু ওকে ক্রিজে আরও থিতু হতে হবে। সব সময় অত ছটফট করলে চলবে না। ওয়ান ডে ম্যাচে ইনিংস গড়ে তোলা শিখতে হবে পিটারসেনকে। তিরিশ-চল্লিশ ওভার ব্যাট করে ইংল্যান্ডকে জেতার মতো জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। এ মুহূর্তে নিজের ওয়ান ডে ব্যাটিংয়ের উপর পিটারসেনের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু টপ অর্ডারে পিটারসেনের ভাল খেলাটা ইংল্যান্ডের জন্য ভীষণ দরকার।
ফিরোজ শাহ কোটলার পিচ মনে হয় উপ্পলের চেয়ে একটু বেশি পাটা হবে। হায়দরাবাদের পিচে মনে হচ্ছিল বল ব্যাটে থেমে থেমে আসছিল। যার জন্য গোটা ম্যাচে সে রকম ভাবে স্ট্রোক খেলা যায়নি। কোটলার পিচটা তার চেয়ে ভাল হবে। এই পিচে বল ব্যাটে আসে। ব্যাটসম্যানদের শট খেলতেও সুবিধে হয়।
প্রথম ম্যাচে টস জেতাটা ধোনির পক্ষে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ধোনি আবার দেখিয়ে দিল ও কত ভাল ওয়ান ডে ক্রিকেটার। ১২৮-৪ পরিস্থিতিতে ব্যাট করতে নেমে ওর ইনিংসে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল। প্রথম দিকে পরিস্থিতি খুব ভাল বুঝে নিয়ে পরের দিকে বড় শট খেলল ধোনি। ধোনি আর রায়নার জন্যই তিনশো পর্যন্ত পৌঁছতে পেরেছিল ভারত। অন্য দিকে কুকের অধিনায়কত্ব খুব সাধারণ মানের ছিল। বেশি দিন দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই ওর। অধিনায়ক হিসেবে কুককে নতুন ঝুঁকি নেওয়ার জন্য তৈরি থাকতে হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত বদলানোর জন্য তৈরি থাকতে হবে। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে। না হলে ইংরেজদের জন্য এই সিরিজটা খুব ভাল যাবে না। শুক্রবার ইয়ান বেল-কে খেলতে না দেখে খুব অবাক হলাম। ভারতীয় পরিবেশে বেল-কে প্রথম এগারোয় রাখতেই হবে। কারণ ও স্পিনের বিরুদ্ধে খুব ভাল। মাঝের ওভারগুলোয় ইনিংস নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাও আছে বেল-এর। রবিচন্দ্রন অশ্বিন আর রবীন্দ্র জাডেজা-কে ওদের ব্যাটসম্যানরা কেমন খেলছে, তার উপর নির্ভর করছে এই সিরিজে ইংল্যান্ডের সাফল্য। |