রাজ্য পূর্ত দফতরের (নির্মাণ বিভাগ) মেদিনীপুরে কর্মরত এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল পুরুলিয়া থেকে। গত বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন দীপককুমার শী (৪০) নামে ওই ইঞ্জিনিয়ার। শনিবার সন্ধ্যায় পুরুলিয়া মফস্সল থানার শিমুলিয়া শ্মশানের অদূরে একটি গাছ থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দীপকবাবুর পকেট থেকে একটি ‘সুইসাইড নোট’ পাওয়া গেলেও রবিবার সন্ধ্যায় তাঁর স্ত্রী সুমিতা শী মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, ‘কাজের সূত্রেই’ কোনও বিরোধের জেরে তাঁর স্বামীকে খুন করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দীপকবাবুর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানার বড়কেলনা গ্রামে। কর্মসূত্রে তিনি সপরিবার মেদিনীপুর শহরের স্টেশনরোড এলাকার শ্বেতপুরা আবাসনে থাকতেন। ১৩ অক্টোবর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। কোতোয়ালি থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও হয়েছিল। পুলিশের দাবি, দীপকবাবুর পকেটে থাকা ‘সুইসাইড নোট’-এ লেখা রয়েছে, তিনি পেটের রোগে ভুগছিলেন। মানসিক ভাবে তিনি বিপর্যস্ত। সেই কারণে তিনি ‘নিজেকে শেষ করার’ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দীপকবাবু বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী-ও। অসুস্থতাজনিত কারণে প্রশাসনিক বৈঠকেও নিজে বিশেষ একটা উপস্থিত থাকতেন না।
দীপককুমার শী’র দেহ এল মেদিনীপুরে।
সুমিতাদেবী এ দিন বলেন, “পেটের রোগে ভোগা নিয়ে আমার স্বামীর আতঙ্ক ছিল। তবে নানা ধরনের পরীক্ষা সত্ত্বেও কোনও অসুখই ধরা পড়েনি। এই সামান্য কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন না।”
মানিব্যাগে থাকা পরিচয়পত্র দেখে পুলিশ দীপকবাবুর বাড়িতে খবর পাঠায়। এ দিন মৃতের শ্যালক সৌমিত্রকুমার দে পুরুলিয়ায় এসে ভগ্নিপতিকে শনাক্ত করেন। সৌমিত্রবাবু বলেন, “১৩ তারিখ সকাল ৮টা নাগাদ প্রশাসনিক বৈঠক আছে জানিয়ে দীপক বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। ওই দিন সকাল ১০টা নাগাদ বাড়িতে একবার ফোনও করে। সন্ধ্যার পরেও না ফেরায় ওকে ফোন করা হয়। কিন্তু মোবাইল বন্ধ ছিল।” পুলিশ দীপকবাবুর মোবাইলের সিগন্যালের সূত্র ধরে জানতে পারে তিনি পুরুলিয়ায় আছেন। বাড়ির লোকজন পুরুলিয়ায় এসে খোঁজ চালিয়েও কোনও সন্ধান পাননি। দীপকবাবুর একটি ছবি তাঁরা পুলিশের কাছে রেখে যান। দীপকবাবুর পকেট থেকে বন্ধ মোবাইল এবং পুরুলিয়া থেকে মেদিনীপুর ফেরার একটি ট্রেনের টিকিটও পেয়েছে পুলিশ। সেটি ১৩ অক্টোবরের। পুলিশের দাবি, উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটের হাতের লেখা দীপকবাবুর বলে শনাক্ত করেছেন তাঁর শ্যালক।
এ দিন বিকেলে দীপকবাবুর মরদেহ মেদিনীপুর শহরে তাঁর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানান সহকর্মীরা।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website
may be copied or reproduced without permission.