গাছ কাটা হলেও বন্ধ উড়ান
সঙ্কটে হাজার শামুকখোল
বিমান উড়বে বলে কোচবিহার বিমানঘাঁটির চারপাশের ৪০টির বেশি শতাব্দী প্রাচীন ‘রেন ট্রি’ কেটে ফেলা হয়েছে। যদিও নিয়মিত বিমান চালু হওয়া নিয়ে সংশয় যায়নি। বরং জেলা প্রশাসনের ওই পদক্ষেপে পাকাপাকি ভাবে নিরাশ্রয় হয়ে পড়েছে কোচবিহার বিমানঘাঁটি লাগোয়া ওই সমস্ত ‘রেন ট্রি’তে বাসা বেঁধে ডিম পাড়ায় অভ্যস্ত কয়েক হাজার শামুকখোল। বছরের এই সময়ে শামুকখোলের দল ওই ‘রেন ট্রি’গুলিতে বাসা বাঁধত। এ বছর বিমানঘাঁটির চারপাশে ওই ‘রেন ট্রি’গুলি নেই। কিন্তু বিমানঘাঁটির উপর রোজ উড়ছে সেগুলি। এক দিকে বিমান উড়ান নিয়ে সংশয়, অন্যদিকে, শামুকখোলের এই উড়ান জেলার পরিবেশপ্রেমী মহলে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
এ ভাবেই কাটা পড়েছে ৪০টিরও বেশি গাছ।
কেন, বিকল্প আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হল না সেই প্রশ্নও উঠেছে। কোচবিহারের সমাজভিত্তিক বনসৃজন বিভাগের এডিএফও অসিতাভ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেছেন, “বিমানঘাঁটির চার পাশে আরও কিছু গাছ রয়েছে। রেন ট্রিগুলি কেটে ফেলতে হওয়ায় শামুকখোলগুলি সেখানে আশ্রয় নেয়। অভ্যাসবশত পাখিগুলি বিমানঘাঁটির উপর উড়ছে।” ২০০৬ সালে কোচবিহারে বিমানঘাঁটি চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে বিমানঘাঁটি পরিদর্শনের পরে বিভিন্ন পরামর্শের মধ্যে বিমান ওঠানামায় সমস্যার কথা জানিয়ে ওই রেন ট্রি গুলি কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়। বন দফতর থেকে শতাব্দী প্রাচীন ২৫টি গাছ কেটে ফেলা হয়। পরের বছর আরও ১৫টি গাছ কাটা হয়। বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই সমস্ত গাছে প্রায় ৭ হাজারের বেশি শামুকখোল প্রতি বছর আশ্রয় নিত। একেবারে গাছের মাথায় বাসা তৈরি করে সেগুলি।
কমেছে পাখির সংখ্যাও।
লাগোয়া এলাকায় প্রচুর জলা রয়েছে। সেখান থেকেই খাবার সংগ্রহ করে। জেলায় বনভূমির সংখ্যা এমনিতেই কম। মোট আয়তনের মাত্র ১.৬৮ শতাংশ। কিন্তু এত বড় ও প্রাচীন গাছ জেলায় খুব বেশি নেই। কোচবিহার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার স্টাডি গ্রুপের মুখপাত্র অরূপ গুহ বলেন, “ব্যাঙ্ককে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর লাগোয়া গাছে বহু পাখি রয়েছে। সেখানে তো গাছ কাটতে হয়নি। কোচবিহারেও কয়েক দশক আগে বিমান চালুর সময়ে লাগোয়া এলাকায় প্রচুর শকুন ছিল। গাছ কাটা পড়ায় সেগুলিও বিদায় নেয়। অথচ বিমান উড়ান নিয়ে সংশয় দূর হল না। আসলে পরিবেশ ও উন্নয়নে যে ভারসাম্য রাখা দরকার, সেটাই মনে হয় আমরা প্রয়োজনের সময়ে ভুলে যাই।” অন্যদিকে, চলতি বছরে সেপ্টেম্বর মাসে বিমান চালুর পরেও তা নানা কারণে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। চালক সমস্যা, ছোট বিমানের সমস্যা-সহ বেসরকারি বিমান উড়ান নিয়ে নানা সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছে। এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার পূর্বাঞ্চলের ডিরেক্টর গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বেসরকারি বিমান সংস্থার পাইলটের সমস্যা রয়েছে। তবে নভেম্বর থেকে উড়ান ফের চালু হবে বলে সংস্থাটি আশ্বাস দিয়েছে।” জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নভেম্বর মাস থেকে নিয়মিত উড়ান চালুর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী জানান, নভেম্বর থেকে যাতে নিয়মিত উড়ান চালু হয় সেটা দেখা হচ্ছে।

ছবি তুলেছেন হিমাংশুরঞ্জন দেব।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.