কলে জল নেই। চালু হয়নি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত গাইড ম্যাপের ব্যবস্থা। দুপুরের চড়া রোদে টিকিট কাউন্টারের সামনে দর্শকদের লম্বা লাইন। চালু হয়নি নতুন টিকিট প্লাজাও। নির্মীয়মাণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে বাঘ রাখার নতুন জায়গা। ‘ফুড প্লাজা’ তৈরির কাজ শুরুই হয়নি। বছর দেড়েকেও শেষ হয়নি সরীসৃপদের রাখার জায়গা তৈরির কাজ। যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নির্মাণ কাজের লোহা, ইট-বালি। ভাঙাচোরা রাস্তায় চলতে হোঁচট খেতে হয় মাঝেমধ্যেই। এই অবস্থাতেই রবিবার সেখানে যান বন দফতরের সচিব সুবেশ দাস।
বনমন্ত্রী হওয়ার পরে চিড়িয়াখানা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন হিতেন বর্মণ। ওই সময়ে তিনি এই দৃশ্য দেখে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও অবস্থার যে কোনও পরিবর্তন হয়নি, তা রবিবার চিড়িয়াখানায় গিয়েই টের পেয়েছেন বন দফতরের সচিব সুবেশবাবু। তিনি অবশ্য নিজে চিড়িয়াখানার ভিতরে ঢোকেননি। সেখানকার অধিকর্তা সুবীর চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেই চলে যান সুবেশবাবু। চিড়িয়াখানার অব্যবস্থা নিয়েও কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
|
কয়েক মাস আগে চিড়িয়াখানা পরিদর্শনের সময়ে বনমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চিড়িয়াখানায় ঢুকে কম্পিউটারচালিত গাইড ম্যাপ পাওয়া যাবে। তাতে থাকবে বিশেষ একটি নম্বর। সেটি মোবাইলে ডায়াল করলেই জেনে নেওয়া যাবে চিড়িয়াখানার কোন দিকে রয়েছে পছন্দের পশুপাখি। কিন্তু রবিবারও দেখা গেল কোথায় কী রয়েছে, তা খুঁজতে গোটা চিড়িয়াখানায় চক্কর কেটে হয়রান হতে হচ্ছে দর্শকদের। হালিশহর থেকে দশ বছরের ছেলেকে নিয়ে এসেছিলেন দীপ্তি পাল। দুপুর রোদে চক্কর কেটে হাতির পরিখার সামনে পৌঁছে কল খুলে জল না পেয়ে তিনি বললেন, ‘‘এতগুলি কল দেখছি। অথচ একটিতেও জল নেই।”
কথা ছিল, চিড়িয়াখানায় দর্শকদের জন্য খাবারের জায়গা (ফুড প্লাজা) চালু হবে। কিন্তু সেই কাজ এখনও শুরুই হয়নি। চিড়িয়াখানায় বেড়াতে আসা অসংখ্য দর্শকই খাওয়া-দাওয়া করছেন মাঠে বসে। মাঠের অনেক জায়গাই ঢেকে রয়েছে আগাছায়। তার মধ্যেই কোনও মতে সারতে হচ্ছে খাওয়া-দাওয়া।
চিড়িয়াখানায় সরীসৃপদের জায়গাটিও বন্ধ প্রায় বছর দেড়েক। কুমিরগুলিকে আপাতত চিড়িয়াখানা চত্বরের মধ্যের বিশেষ পরিখার জলে রাখা হয়েছে। আর বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা ওই জায়গার ভিতরেই খাঁচার মধ্যে রাখা হয়েছে পাইথন এবং অন্যান্য সাপ। দর্শকেরা সে সব দেখতে পান না বহু দিন ধরেই। নতুন টিকিট প্লাজাটিও কার্যত অর্ধনির্মিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
চিড়িয়াখানার এই অব্যবস্থা অবশ্য কাটতে খানিকটা সময় লাগবে বলেই দাবি সেখানকার অধিকর্তা সুবীরবাবুর। তাঁর কথায়, “চিড়িয়াখানার সৌন্দর্যায়নের কাজ বন্ধ হয়নি। সবই চলছে। তবে ধীর গতিতে কাজ এগোচ্ছে। আমরা গতি বাড়ানোর চেষ্টা করছি।” |