|
|
|
|
আমতা-২ ব্লক |
বন্যা কবলিত ঘোষণা করেনি রাজ্য, সুবিধা না-মেলায় ক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আমতা |
গত অগস্টে অতি বর্ষণ এবং ডিভিসি-র ছাড়া জলে প্লাবিত হয়েছিল হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা-২ নম্বর ব্লক। উদয়নারায়ণপুরকে ‘বন্যা কবলিত’ বলে ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু পাশের আমতা-২ ব্লকের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। এর ফলে, ওই ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত মানুদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, ‘বন্যা কবলিত’ এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হলে তাঁরা বিশেষ কিছু সুবিধা পেতেন। কিন্তু তা না-হওয়ায় তাঁরা সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
আমতা-২ ব্লকের অধিকাংশ এলাকাই পড়ে আমতা বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে। কেন্দ্রটি রয়েছে কংগ্রেসের দখলে। অবিলম্বে আমতা-২ ব্লককে ‘বন্যা কবলিত’ বলে ঘোষণা করার দাবি তুলেছে তারা। এ নিয়ে কংগ্রেস ইতিমধ্যেই ব্লক প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। পাশাপাশি, এ নিয়ে তাঁরা নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দলের নেতারা। জেলাশাসক সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ বলেন, “এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কিছু করার নেই। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা নেয় রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।”
বিপর্যয় মোকাবিল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও এলাকায় নদীবাঁধ ভেঙে বা উপচে জল ঢুকলে সেই জায়গাকে ‘বন্য কবলিত’ বলে ঘোষণা করা হয়। ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারের তরফে কৃষি-ঋণ মকুব করা হয়। শস্যবিমা করার টাকা দেওয়া হয়। তা ছাড়াও, রাস্তাঘাট তৈরি এবং বাড়িঘর মেরামতির টাকা দেওয়া হয়। খেতমজুরদের জন্য আরও বেশি কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়।
অগস্ট মাসে ডিভিসি-র ছাড়া জলে দামোদরের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় উদয়নারায়ণপুর। সেই জলই ঢোকে আমতা-২ ব্লকেও। আমতা-২ ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, ১৪টি মধ্যে ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত পুরোপুরি এবং বাকি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাগুলি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভেঙে যায় প্রচুর ঘরবাড়ি। ক্ষতি হয় রাস্তাঘাটেরও। ফসলও নষ্ট হয় ব্যাপক ভাবে। চাষ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খেতমজুররা পুজোর আগে কাজ হারান। উদয়নারায়ণপুরে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই এই ব্লককে ‘বন্যা কবলিত’ বলে ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। কিন্তু আমতা-২ ব্লককে ‘বন্যা কবলিত’ ঘোষণা করা হয়নি। এ নিয়েই ক্ষোভ সাধারণ মানুষের। তাঁদের বক্তব্য, ওই ঘোষণা না হওয়ায় সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
আমতার কংগ্রেস নেতা দাশুরথী দীর্ঘাঙ্গী বলেন, “আমরা কৃষি দফতরের রিপোর্ট দেখেছি। ১০০ শতাংশ চাষের ক্ষতি হয়েছে আমতা-২ ব্লকে। উদয়নারায়ণপুরকে বন্যা কবলিত বলে ঘোষণা করা হল। অথচ, এই ব্লক বাদ পড়ে গেল।” উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, “বন্যা কবলিত বলে কোনও এলাকাকে ঘোষণা করার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কিছু মাপকাঠি রয়েছে। সেই বিচারেই কোন ব্লককে বন্যা কবলিত ঘোষণা করা হবে আর কোনটিকে করা হবে না তা ঠিক করা হয়।” বিষয়টি নিয়ে তিনি বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী জাভেদ খানের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র। তিনি বলেন, “ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট আমি জাভেদ খানের হাতে তুলে দিয়েছি। তিনি আমাদের দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।” |
|
|
|
|
|