কানোরিয়া জুটমিলের শ্রমিক নেতা গ্রেফতার
রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপে কারখানা খুললেও ‘অস্বস্তি’র আবহের ‘পরিবর্তন’ হল না কানোরিয়ায়।
এক শ্রমিককে মারধর করতে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে এ বার গ্রেফতার হলেন হাওড়ার কানোরিয়া জুটমিলের শ্রমিক নেতা প্রফুল্ল চক্রবর্তী। রবিবার সকালে ফুলেশ্বরে বাড়ি থেকেই তাঁকে ধরে পুলিশ। প্রফুল্লবাবুর দাবি, তাঁকে ‘ফাঁসানো’ হয়েছে।
তাঁর অভিযোগ, “শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এবং তাঁর দলের শ্রমিক সংগঠন যে ভাবে কারখানাটি বর্তমান প্রোমোটারের হাতে তুলে দিয়েছেন, তাতে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষিত হবে না। শ্রমিকেরাই চান, আমি এ সব কথা তুলে ধরি। কিন্তু তা ঠেকাতে চক্রান্ত করে আমাকে গ্রেফতার করানো হল।” প্রফুল্লবাবুরই এক সময়ের সঙ্গী পূর্ণেন্দুবাবু অবশ্য বলেন, “এক শ্রমিকের নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রফুল্লবাবুকে ধরেছে। এটা আইনশৃঙ্খলাজনিত প্রশ্ন। আমার বা শ্রম দফতরের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।”
গ্রেফতারের প্রতিবাদে প্রফুল্লবাবু এ দিন থেকে অনশনও শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন। এ দিনই তাঁকে উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
গত ৯ অক্টোবর পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে মিলের শ্রমিক শেখ সামশের লস্কর দাবি করেন, ওই দিন বিকেলে কারখানা ছুটির পরে বাড়ি ফেরার সময়ে তিনি দেখেন, মিলের গেটে সভা করে শ্রমিকদের মধ্যে ‘উত্তেজনা ছড়ানো’র চেষ্টা করছেন প্রফুল্লবাবু। প্রতিবাদ করায় প্রফুল্লবাবুর ‘প্ররোচনায়’ কয়েক জন শ্রমিক তাঁকে মারধর করেন।
ধৃত শ্রমিক নেতা প্রফুল্ল চক্রবর্তী। ছবি: হিলটন ঘোষ
এই অভিযোগ ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন প্রফুল্লবাবু। প্রসঙ্গত, প্রফুল্লবাবু ‘কানোরিয়া জুটমিল সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়ন’-এর একটি অংশের নেতা। এ দিন তিনি দাবি করেন, কয়েক দিন আগে কারখানার কিছু শ্রমিক তাঁর কাছে এসে নিজেদের তৃণমূল অনুগামী পরিচয় দিয়ে তাঁর নেতৃত্বে একটি নতুন শ্রমিক সংগঠন খোলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন। ওই শ্রমিকেরা একটি সভার আয়োজন করার কথা বলেন এবং প্রফুল্লবাবুকে সভায় যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানান। প্রফুল্লবাবুর কথায়, “৯ অক্টোবর মিল থেকে বেশ কিছুটা দূরে সভাটি হচ্ছিল। আমি বক্তৃতা দেওয়ার সময়ে সহসা ইট-পাটকেল পড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি দেখে আমি বাড়ি ফিরে আসি। তার পরেই শুনি, আমার নামে এফআইআর করা হয়েছে।”
এক সময়ে প্রফুল্লবাবুর নেতৃত্বেই ‘সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়ন’ সমবায়ের ভিত্তিতে কারখানাটি চালানোর দাবিতে আন্দোলন করে। সেই আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন বর্তমান শ্রমমন্ত্রীও। পরবর্তী সময়ে প্রফুল্লবাবুর সঙ্গে মতবিরোধের ফলে সংগঠনটি দু’ভাগে ভেঙে যায়। অন্য ভাগটিও ‘সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়ন’ নামে পরিচিত। তবে তারা সম্প্রতি আইএনটিটিইউসি-র অনুমোদন পেয়েছে।
সম্প্রতি শ্রমমন্ত্রীর উদ্যোগে কানোরিয়া জুটমিল খুলেছে। এ জন্য যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছে, তাতে সই করেছে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত ইউনিয়নটি।
ওই সংগঠনের নেতা লিয়াকত আলি খানের অভিযোগ, “ছ’বছর বন্ধ থাকার পরে কারখানা খুলেছে। এটা প্রফুল্লবাবু সহ্য করতে পারছেন না। ফের কারখানা যাতে বন্ধ হয়ে যায়, সে জন্যই তিনি শ্রমিকদের প্ররোচিত করছেন। সাধারণ শ্রমিকেরা তাঁকে প্ররোচনা ছড়াতে বারণ করলে তিনি তাঁর অনুগামীদের দিয়ে এক শ্রমিককে মার খাওয়ান। ভবি ষ্যতেও যদি প্রফুল্লবাবু কারখানা চত্বরে প্ররোচনা ছড়াতে আসেন, সাধারণ শ্রমিকেরা তাঁকে ফের বাধা দেবেন।”
অন্য দিকে, প্রফুল্লবাবুকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ‘বন্ধ কারখানা ও অসংগঠিত শ্রমিকদের সংযুক্ত সংগ্রাম কমিটি’র আহ্বায়ক কুশল দেবনাথ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.