নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
নতুন যুগের কম্যান্ডো। নতুন যুগের অস্ত্র। সঙ্গে অত্যাধুনিক যোগাযোগের উপকরণ, ডিজিটাল ম্যাপ, ছোট্ট পামটপ। কম্যান্ডোর মাথায় লাগানো ক্যামেরা দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কন্ট্রোল রুমে বসে দেখা যাচ্ছে অপারেশন। ঠিক যেমন ওয়াশিংটনে বসে ওসামা বিন লাদেনের বাড়িতে মার্কিন সেনা অভিযান দেখেছিলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
এ দেশের বিশেষ সন্ত্রাসদমন বাহিনী এনএসজি-র ব্ল্যাক ক্যাট কম্যান্ডোদেরও একই ভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। এ জন্য একটি পাঁচ বছরের প্রকল্প তৈরি হয়েছে। এনএসজি-কে সাহায্য করছে ডিআরডিও এবং বেঙ্গালুরুর সেন্টার ফর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৫-’১৬ সালের মধ্যে প্রায় দু’হাজার প্রশিক্ষিত কম্যান্ডো তৈরি হবেন, যারা যে কোনও পরিস্থিতিতে স্বাধীন ভাবে সন্ত্রাসদমন অভিযান চালাতে পারবেন। কম্যান্ডোদের পোশাকের মধ্যেই থাকবে খাবার, পানীয় জল।
|
জঙ্গি হামলা থেকে নেতাকে বাঁচালেন ওঁরা। যুদ্ধটা অবশ্য নকল, নেতাও। রবিবার
গুড়গাঁওয়ে এনএসজি-র প্রতিষ্ঠা দিবসে এমন নানা মহড়া দিলেন কম্যান্ডোরা।
মার্কিন বাহিনীর আদলে আরও আধুনিক হচ্ছে এনএসজি। ছবি: পি টি আই |
এনএসজি কম্যান্ডোরা এর আগে বিমান অপহরণ রুখতে অভিযান চালিয়েছেন। বিমান অপহরণ রুখতে বিশেষ কিছু বিমানে এনএসজি-র বিশেষ প্রশিক্ষিত ‘স্কাই মার্শাল’ মোতায়েন করা হয়ে থাকে। এখন ওই সব কম্যান্ডোদের খালি হাতে লড়াইয়ে আরও দক্ষ করে তোলার জন্য ফিলিপিন্সের মার্শাল আর্ট ‘পেকিটি-টিরসিয়া কালি’ শেখানো হচ্ছে। এই ধরনের মার্শাল আর্টে সাধারণ ক্যারাটের মতো কোনও আত্মরক্ষার কৌশল নেই, পুরোটাই আক্রমণাত্মক। শুধু বিমানই নয়। দু’বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রামে মাওবাদীরা যে ভাবে রাজধানী এক্সপ্রেস আটক করে রেখেছিল, তার পরে যে কোনও দিন ট্রেনের অভিযানেও তাঁদের নামানো হতে পারে বলে মনে করছেন এনএসজি কর্তারা। আজ হরিয়ানার মানেসরে এনএসজি-র প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে একেবারে রাজধানী এক্সপ্রেসের মডেল হাজির করে দেখানো হয়, এই ধরনের পরিস্থিতিতে কী ভাবে এনএসজি কম্যান্ডোরা কাজ করবেন।
|
প্রতিষ্ঠা দিবসে কসরৎ এনএসজি কম্যান্ডোর। ছবি: রয়টার্স |
২৬/১১-র পর থেকেই কার্যত এনএসজি-কে ঢেলে সাজার কাজ শুরু হয়েছে। ওবেরয়, তাজ, নরিম্যান হাউসে অভিযান চালানোর সময়েই দেওয়াল ফুঁড়ে গুলি চালানোর মতো আগ্নেয়াস্ত্রের অভাব বুঝতে পেরেছিলেন এনএসজি জওয়ানরা। দেওয়ালের পিছনে লুকিয়ে গুলি চালানোর জন্য ‘কর্নার শট ওয়েপন’-এর অভাবও টের পাওয়া গিয়েছিল। ইজরায়েল থেকে এ জন্য দু’টি ‘অ্যান্টি-মেটিরিয়াল’ অস্ত্র আমদানি করা হয়েছে। এর সাহায্যে দেওয়ালের পিছনে লুকিয়ে থেকেই আগ্নেয়াস্ত্রের ডিজিটাল স্ক্রিনে ফুটে ওঠা লক্ষ্যবস্তুতে নিশানা করা যায়। এনএসজি-র প্রধান আর কে মেধেকর বলেন, “লস অ্যাঞ্জেলেসের পুলিশ, এফবিআই এবং মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের সঙ্গে এনএসজি-র জওয়ানদের যৌথ মহড়ারও প্রস্তুতি চলছে।” |