|
|
|
|
মূল্যবৃদ্ধি, ইউরোপীয় সঙ্কট সূচককে বেঁধে রেখেছে গণ্ডির মধ্যে |
|
এখন দেওয়ালির দিকেই
তাকিয়ে শেয়ার বাজার |
|
অমিতাভ গুহ সরকার |
অবশেষে সেনসেক্স আবার সাঁতরে উঠেছে ১৭ হাজারের ওপারে। ফল সাময়িক স্বস্তি। হঠাৎ কে এমন শক্তি জোগাল? অবশ্যই ইনফোসিস এবং বিশ্ব বাজার। দেশে শুরু হয়েছে ষাণ্মাসিক ফল প্রকাশের পালা। কথায় বলে, সকাল দেখে বলা যায় দিনটা কেমন যাবে। শেয়ার বাজারে এই কথাটা হয়তো তেমন খাটে না। ইনফোসিসের ফলাফলে বাজার সাময়িক উল্লসিত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু পরের ফলাফলগুলি যে বাজারের একই রকম পছন্দ হবে, তা কিন্তু আদৌ বলা যাচ্ছে না। অর্থাৎ ওঠা-পড়া চলবে।
আমেরিকা এবং ইউরোপের বাজারগুলির রং দিন-কতক সবুজ ছিল। তার মানে এই নয়, লাল আপাতত বিদায় নিয়েছে। বাজার এখন অনেকটা তরমুজের মতো। ওপরটা সবুজ দেখালেও একটু কাটলেই লাল বেরিয়ে পড়তে পারে। অর্থাৎ ১৭ হাজারে আহ্লাদিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। শনিবার ফল প্রকাশ করেছে সুপার হেভিওয়েট রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ। কোনওই চমক নেই ফলাফলে। সূচককে আরও উপরে তোলার কোনও উপাদান নেই এই ফলাফলে। সোমবার বাজার খুললে পাওয়া যাবে রিলায়্যান্সের ফলাফলের প্রতিক্রিয়া।
বারবারই বাজারের জন্য সমস্যা বয়ে আনছে কোনও না কোনও ইউরোপীয় অর্থনীতি। একটি দেশের সমস্যাকে সামাল দেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে অন্য কোনও দেশে। এই ভাবে বারবার বাজারকে ফেলেছে গ্রিস, স্পেন, পর্তুগাল, ইতালি ইত্যাদি দেশের সমস্যা। মার্কিন মুলুকের সমস্যা তো আছেই। এই পরিস্থিতিতে বাজার সম্পর্কে বড় কোনও আশার বাণী শোনানো সম্ভব নয়। বুদ্ধিমানেরা বাজার নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা থেকেও বিরত থাকছেন।
তুলনামূলক ভাবে ভারতের অবস্থা বরং ভাল। জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির হার কমে এলেও তা এখনও অনেক দেশের থেকে ভাল। দেশের মূল সমস্যা সেই মূল্যবৃদ্ধি। ২০১০-এর মার্চ মাস থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ১২ বার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ানো সত্ত্বেও মূল্যবৃদ্ধি এখনও বসে আছে ৯.৭২ শতাংশে। গত দশ মাস ধরে মূল্যবৃদ্ধি ঘোরাফেরা করছে ৯ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে। অনেকেই মনে করছেন, পরিস্থিতি হয়তো রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে বাধ্য করবে আবারও রেপো রেটকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়াতে। পৃথিবীর অনেক দেশই কিন্তু আর সুদ বৃদ্ধির পথে হাঁটছে না। এখন দেখার, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কী করে।
বাজারের কাছে দেওয়ালির একটি বিশেষ তাৎপর্য আছে। বহু মানুষ অপেক্ষা করেন এই দিনটির জন্য। এ বার দেওয়ালি ২৬ অক্টোবর। এর ঠিক এক দিন আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতির পর্যালোচনা। অনেকেরই আশঙ্কা, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যদি আবারও সুদ বৃদ্ধি করে, তবে ম্লান হয়ে যেতে পারে দেওয়ালির রোশনাই। আশাবাদীরা অবশ্য মনে করছেন, অন্যান্য অনেক দেশের মতো এ বার হয়তো সুদ বৃদ্ধিতে ছেদ টানবে ভারতীয় শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তা যদি হয়, তবে রংমশালের মতো জ্বলে উঠতে পারে সেনসেক্স ও নিফ্টি।
আগামী কয়েক দিন বাজার কেমন ব্যবহার করবে তা বলা কঠিন হলেও ধনতেরাসের আগে সোনা যে আবার তেতে উঠবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এই মরসুমে ভারতে সোনা-রুপোর চাহিদা বাড়ে অস্বাভাবিক গতিতে। সোনার দাম এতটা বাড়ার পর এ বার কী হয়, তা-ই এখন দেখার। গত কয়েক বছর ধনতেরাসে যাঁরা সোনা কিনেছেন, লাভবান
হয়েছেন তাঁদের সবাই। এঁদের মুখে একটিই কথা, ‘তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই’!
অর্থবর্ষ শেষ হতে এখন বেশ কয়েক মাস বাকি। এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে কর সাশ্রয়কারী পরিকাঠামো বন্ড। ২৯ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রায়ত্ত পাওয়ার ফিনান্স কর্পোরেশন (পিএফসি) বাজারে ছেড়েছে পরিকাঠামো বন্ড। এই বন্ডে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত লগ্নি করে কর ছাড় পাওয়া যাবে ৮০ সিসিএফ ধারায়। সুদের হার ১০ বছর মেয়াদে ৮.৫ শতাংশ এবং ১৫ বছর মেয়াদে ৮.৭৫ শতাংশ। মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিল ও ইক্রা ‘ট্রিপল এ’ রেটিং দিয়েছে এই বন্ড ইস্যুকে। ইস্যুটি খোলা থাকবে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত। |
|
|
|
|
|