বাসিন্দাদের সুবিধা-অসুবিধার শোনার সভায় গিয়ে দলের লোকেদের বিরুদ্ধে তোলাবাজি ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ শুনলেন বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। রবিবার বর্ধমানের ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে দু’টি সভা করেন তিনি। দু’টি জায়গাতেই তাঁর কাছে এ ধরনের অভিযোগ জানান কিছু বাসিন্দা।
এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ বড়নীলপুরে মিলন সঙ্ঘের মাঠে ‘আমজনতার দরবারে’ উপস্থিত ছিলেন রবিরঞ্জনবাবু। সভায় উপস্থিত বাসিন্দারা নর্দমা, পানীয় জল সরবরাহ, রাস্তাঘাট ইত্যাদির উন্নয়নের দাবির পাশাপাশি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, তোলাবাজি, বাড়ি ও দোকান থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা ইত্যাদির অভিযোগ জানান। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সায়েরা বানুর অভিযোগ, “ব্রিগেডে তৃণমূলের সভায় যাওয়ার জন্য এক হাজার টাকা দাবি করে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর লোকজন। তা দিতে না পারায় আমাকে ও আমার স্বামীকে মারধর করা হয়। আমাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টাও চলছে।” কাঁদতে কাঁদতে মহিলা বলেন, “দয়া করে আপনি কিছু ব্যবস্থা করুন।” মন্ত্রী তাঁকে বলেন, “আপনি শহরের যুব নেতা খোকন দাস, সুশান্ত ঘোষদের কাছে এ ব্যাপারে লিখিত দরখাস্ত করুন। ওঁরা ব্যবস্থা নিশ্চয় করবেন।” |
১২ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপাড়ার সভায় শোভা অধিকারী নামে এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, “পুজোর সময় গরিব মানুষদের মধ্যে কাপড় বিলি নিয়ে আমাদের পাড়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হয়েছে। তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও আমাকে কাপড় দেওয়া হয়নি।” মন্ত্রী বলেন, “এই ধরনের ঘটনার খবর আমি পাইনি। শুনে খারাপ লাগছে।” দু’টি সভাতেই মন্ত্রী বেশ কিছু উন্নয়নের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “আমি প্রতিটি ওয়ার্ডেই এই ধরনের সভা করে মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনব। প্রতিটি ওয়ার্ডে গভীর নলকূপ বসানো হবে। দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স ও দু’টি শববাহী গাড়ি পুর এলাকায় মোতায়েন করা হবে।”
এ দিন বিকেলে টাউন হলে অনুষ্ঠিত হয় তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী। সেখানে অবশ্য ছিলেন না রবিরঞ্জনবাবু। তবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ সুনন্দ সান্যাল, রাজ্যের অন্যতম পর্যবেক্ষক পুলক চক্রবর্তী। দলের স্থানীয় শিক্ষক নেতা পরেশ সরকারের আহ্বানে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে যোগ দেন কংগ্রেসের জেলার নেতারাও। সভায় সুনন্দবাবু তৃণমূল কর্মীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়িয়ে না পড়ার আবেদন জানান। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠী চাঁদা চাইলে দেবেন না।” |