মাইথনের পরে চুরুলিয়া। যুব আবাস দেখে ফের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যের যুবকল্যাণ মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। হাল ফিরিয়ে নজরুল যুব আবাসকে বসবাসের উপযোগী করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মন্ত্রীর এই আশ্বাসে খুশি এলাকার বাসিন্দারাও।
রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে আসানসোল-সহ আশপাশের অঞ্চলের গুরুত্ব বাড়াতে এলাকায় কিছু যুব আবাস গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই উদ্দেশেই যুবকল্যাণ মন্ত্রী উজ্জ্বলবাবু সম্প্রতি আসানসোলে যান। নতুন যুব আবাস তৈরির জন্য মাইথন, সালানপুর এলাকার পাঁচটি জায়গা চিহ্নিত করার পাশাপাশি একাধিক পুরনো যুব আবাসও ঘুরে দেখেন তিনি। কবি নজরুল ইসলামের জন্মভিটে চুরুলিয়ায় কবির নামাঙ্কিত এই যুব আবাসটির অবস্থা দেখে তিনি মনক্ষুণ্ণ হন। এর পরেই মন্ত্রী এটির খোলনলচে বদলে নতুন করে তৈরির আশ্বাস দেন।
কবির জন্মভিটে থেকে মাত্র ২৫০ মিটার দূরে ফাঁকা মাঠের উপরে মনোরম পরিবেশে এই দোতলা যুব আবাসটি তৈরি করে বাম সরকার। ১৯৯৯-এর ২৮ জানুয়ারি সেটির দ্বারোদ্ঘাটন করেন তৎকালীন পর্যটন ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী মানব মুখোপাধ্যায়। এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, বহু বছর ধরেই এই ভবনটি অযত্নে পড়ে রয়েছে। যুব আবাসটি কার্যত পোড়ো বাড়িতে পরিণত হয়েছে। চারিদিকে ঘন জঙ্গল। দরজা-জানালা ভাঙা। |
আসানসোল শহর থেকে চুরুলিয়ার দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। গ্রামে ঢোকার মুখেই চোখে পড়ে কবি নজরুলের জন্মভিটে। কবির অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য গড়ে উঠেছে নজরুল অ্যাকাডেমি। ওই অ্যাকাডেমির তত্ত্বাবধানে রয়েছে একটি পাঠাগার, কবির ব্যবহৃত জিনিসপত্রের একটি সংগ্রহশালা। অ্যাকাডেমির জনসংযোগ সম্পাদক তথা কবির ভ্রাতুষ্পুত্র কাজি মাজাহার হোসেন জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এমনকী বিদেশ থেকেও অনেকে আসেন। বিশেষ করে কবির জন্মদিন উপলক্ষে এখানে সাত দিন ব্যাপী উৎসব হয়। সেই সময় দেশ-বিদেশ থেকে অনেক শিল্পী, গবেষক, দর্শনার্থীরা আসেন। থাকার জায়গার অভাবে তাঁরা সমস্যায় পড়েন।
মাজাহার হোসেন বলেন, “তাঁদের দাবি মেনেই এই যুব আবাসটি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় এখন সেটি কেউ আর ব্যবহার করতে পারেন না।” যুব আবাসটি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
যুব আবাসটির দশা দেখে ক্ষুব্ধ যুবকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, “জনগণের টাকা এই ভাবে নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। সেটির হাল ফেরানোর চেষ্টা চলছে।” চুরুলিয়ার একটি পর্যটন মূল্য রয়েছে। নজরুল গবেষকেরাও সেখানে যান। সেটির উন্নতির জন্য যুব আবাসটির হাল ফেরানো জরুরি বলেই মনে করেন মন্ত্রী। |