বহু টাকা বিদ্যুতের বিল বকেয়া দুই পুরসভার। অবিলম্বে তা না মেটালে সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়া হবে বলে জানাল রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। এ ব্যাপারে আসানসোল ও কুলটি পুর কর্তৃপক্ষকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থা। বিল বকেয়ার কথা স্বীকার করলেও কোনও চিঠি এখনও পাননি বলে জানিয়েছেন দুই পুর কর্তৃপক্ষ।
রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আসানসোলের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার মিতেশ দাশগুপ্ত জানান, আসানসোল পুরসভার কাছে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা এবং কুলটি পুরসভার কাছে প্রায় দু’কোটি টাকা বিদ্যুতের মাসুল পাবে বিদ্যুৎ দফতর। মিতেশবাবু বলেন, “আমরা দুই পুর কর্তৃপক্ষকে এই বকেয়া মিটিয়ে দিতে বলেছি। তা না হলে সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়া হবে। এর ফলে নাগরিকদের সমস্যা হলে তার দায় বিদ্যুৎ দফতর নয়।” বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়লার অভাবে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। আবার টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় কয়লা কিনতে পারছে না সরকার। অথচ সরকারি ও আধা সরকারি দফতরগুলিতে কয়েক কোটি টাকা করে বিদ্যুতের বিল বকেয়া পড়ে আছে। এই অবস্থায় সরকার নির্দেশ দিয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব বকেয়া আদায় করতে হবে। এমন নির্দেশ আসার পরেই জরুরি ভিত্তিতে ওই দুই পুরসভাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বিল বকেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “চিঠি এখনও হাতে আসেনি। কিছু দিন আগে আমরা কিছু টাকা মিটিয়েছি। আরও কিছু টাকা মেটানো হবে।” তাপসবাবু অভিযোগ করেন, তাঁরা যখন ক্ষমতায় আসেন তখন পুরসভার প্রায় সাত কোটি টাকা বিল বাকি ছিল। দু’বছরে বেশ কিছু টাকা তাঁরা শোধ করেছেন। তিনি আরও জানান, একটি বড় অঙ্কের বিল নিয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সঙ্গে পুরসভার বিরোধ রয়েছে। তা মেটাতে কয়েক বার বৈঠক হলেও সমস্যা মেটেনি। ফের এ বিষয়ে বৈঠক করা হবে বলে জানান তাপসবাবু। কুলটির উপপ্রধান বাচ্চু রায়ও স্বীকার করেন, তাঁদের টাকা বকেয়া আছে। কোনও চিঠি পাননি। তবে কিছু টাকা মেটানোর সিদ্ধান্ত তাঁরা নিয়েছেন।
রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই পুরসভার পানীয় জল প্রকল্প, রাস্তার আলোর জন্য যে বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় তার বিল বাকি রেখেছে পুরসভাগুলি। সম্প্রতি উৎসব উপলক্ষে শহরের ব্যস্ত মোড়গুলিতে আলো লাগানো হয়েছে। অভিযোগ, সেগুলি লাগানোর আগে বিদ্যুৎ দফতরকে জানানো হয়নি। অথচ বছরের পর বছর বিল বাকি। সংযোগ ছিন্ন করা হলে জল সরবরাহ যেমন বিঘ্নিত হবে তেমনই সন্ধ্যার পরে শহর জুড়ে নেমে আসতে পারে অন্ধকার। |