নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
গোদায় প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য উপনগরীর কাজ শুরু নিয়ে জট কাটল না। উল্টে কিছু জমিমালিক এখন জমি ফেরত চেয়ে চাপ সৃষ্টি করছেন। বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের (বিডিএ) চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, “অনিচ্ছুক চাষিদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, চাষিদের বুঝিয়ে আমরা জমি ফেরত নেওয়া বন্ধ করতে পারব।”
বাম আমলে বর্ধমানের গোদা মৌজায় স্বাস্থ্যনগরী গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু অধিগৃহীত ২৩ একর জমি নিয়ে জলঘোলা হচ্ছে। এর মধ্যে সাড়ে ১১ একর জমি ফেরত চাইছেন অনিচ্ছুক কৃষকেরা। সম্প্রতি রবিরঞ্জনবাবুর উপস্থিতিতে এক বৈঠকে এলাকার ৮৪ জন চাষি জমি ফেরত চান। বাকি জমি অর্থাৎ অবশিষ্ট সাড়ে ১১ একরের জন্য তাঁরা প্রতি শতক হিসেবে এক লক্ষ টাকা দাম চেয়েছেন। |
২০০৬ সালের মাঝামাঝি বিঘা পিছু তিন লক্ষ আশি হাজার টাকা দিয়ে স্বাস্থ্য উপনগরীর জন্য জমি কিনতে নামে বিডিএ। চাষিরা এ বার বিঘা পিছু চার লক্ষ টাকা চাইছেন। এই ৮৪ জন চাষি সেই সময় জমির চেক নেননি। রবিরঞ্জনবাবু জানান, জমিমালিকেরা শুধু যে জমি ফেরত চাইছেন তা নয়। তাঁদের দাবি, প্রয়োজনে বাড়ি, গুদাম, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-সহ যে কোনও কাজে ওই জমি ব্যবহারের সুবিধা দিতে হবে। থাকতে হবে জমি হস্তান্তরের সুযোগও। পরিবার পিছু চাকরি, জমিদাতাদের স্বাস্থ্য নগরীতে বিনামূল্যে ব্যবসা করার সুযোগ, স্বাস্থ্য নগরীতে স্থাপিত মেডিক্যাল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও ডেন্টাল কলেজে নিখরচায় লেখাপড়া এবং বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ারও দাবি রয়েছে।
অনিচ্ছুক চাষিদের নিয়ে তৈরি ‘পশ্চিম বর্ধমান কৃষি কল্যাণ সমিতি’র সভাপতি আবুল ওয়ারা হাজি আজিজ বলেন, “যে সংস্থা ওই স্বাস্থ্য উপনগরী তৈরি করছে, তার চেয়ারম্যান-ও বৈঠকে ছিলেন। উনি আমাদের প্রস্তাব শুনে বলেন, সাড়ে ১১ একর জমি ফেরত দিলে স্বাস্থ্য উপনগরী প্রকল্পই তৈরি হবে না। তা ছাড়া বিভিন্ন জমির বিভিন্ন দাম দিলেও জটিলতা বাড়বে। তবে আমরাও জানিয়ে দিয়েছি, সাড়ে ১১ একর উন্নত জমি যে কোনও মূল্যে আমরা ফেরত চাই।”
রবিরঞ্জনবাবুর মতে, “আগের সরকার প্রতি পদক্ষেপেই জোর জবরদস্তি করে নানা জটিলতা সৃষ্টি করে গিয়েছে।” জমিদাতাদের সব দাবি যে সহজে মানা সম্ভব নয় তা কবুল করে তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত ৫৭ একর জমি অধিগ্রহণ হয়েছে। তার মধ্যে ২৩ একর নিয়ে আপত্তি রয়েছে। আমরা অনিচ্ছুক চাষিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছি। তাঁদের সমস্যার কথা শুনছি। তাই স্বাস্থ্য উপনগরীর কাজ শুরু করতে সময় লাগছে।” |