নিজস্ব সংবাদদাতা • পাড়ুই |
খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আট শিশু-সহ ৫২ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঘটনাটি পাড়ুই থানার গোপালনগর গ্রামের। তাঁদের বুধবার রাতে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি উৎসবে তাঁরা খিচুড়ি খেয়েছিলেন। তার পরেই তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল। চিকিৎসকেরা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। হাসপাতাল সুপার সুদীপ মণ্ডল বলেন, “পেটে ব্যাথা, বমি ও পাতলা পায়খানার উপসর্গ নিয়ে ৫২ জন ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আট জন শিশু ও ১২ জন মহিলা রয়েছেন। খাবারে বিষক্রিয়ায় তাঁরা অসুস্থ হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।”
পাড়ুইয়ের কসবা পঞ্চায়েতের গোপালনগর গ্রামে লক্ষ্মীপূজো হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে বুধবার গোপালনগরে পঙ্ক্তিভোজ হয়। সেখানে খিচুড়ি খাওয়ানো হয়েছিল। দুপুরে গ্রামবাসীরা পঙ্ক্তিভোজে যোগ দেন। বিকেল থেকে বাসিন্দাদের অনেকের বমি, পায়খানা, পেট ব্যাথা শুরু হয়। বড়দের সঙ্গে শিশুরাও খিচুরি খেয়েছিল। তারাও অসুস্থ হয়ে পড়ে। গ্রামের ঘরে ঘরে অসুস্থ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর আতঙ্ক তৈরি হয়। অসুস্থদের বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। |
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ছিল তিন বছরের তুষার দাস। তাঁর মা জবা দাস বলেন, “খিচুড়ি খাওয়ার ঘণ্টা খানেক পর থেকে তুষারের পেট ব্যাথা শুরু হয়। সন্ধ্যায় বমি ও পায়খানা শুরু হয়। খুব ভয় করছিল, কী হবে ভেবে। তারপর ওকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।” একই অবস্থা ওই গ্রামের চার বছরের রাহুল মাল, দেড় বছরের রোহিত মাল। তাঁদের নিয়েও বাড়ির লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন। দাসপাড়ার বাসিন্দা নবকুমার দাস বলেন, “খিচুরি খাওয়ার পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়। তবে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে কিছুটা সুস্থ রয়েছি।”
স্থানীয় বাসিন্দা নিমাই দাস বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কসবা পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য বামাচরণ সামন্তকে ব্যাপারটা জানাই। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে আক্রান্তদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।” রাত ১১টা থেকে প্রায় ১টা পর্যন্ত দফায় দফায় প্রায় ৭০ জন অসুস্থ গ্রামবাসীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ দিন সকালে তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠা ১৮ জনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ দিন বোলপুর ব্লক মেডিক্যাল অফিসার সব্যসাচী রায়ের নেতৃত্বে স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি দল ওই গ্রামে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে যান। পরে বোলপুরের মহকুমা শাসক প্রবালকান্তি দাস বলেন, “স্থানীয় ব্লক মেডিক্যাল অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি। ওই এলাকায় স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল গিয়েছে। তাঁরা গ্রামবাসীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেন। পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে।” |