সংখ্যালঘু উন্নয়ন
শুধু ‘মুখের কথা’য় হবে না, ফের উষ্মা ইমামের
ংখ্যালঘু উন্নয়নে প্রতিশ্রুতি পূরণ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রতি ‘উষ্মা’ প্রকাশের ঘটনা অব্যাহত।
মমতার নেতৃত্বাধীন সরকার মুসলিমদের উন্নয়নে এ পর্যন্ত কী কাজ করেছে, তা জানতে কালী পুজোর পরেই মুখ্যমন্ত্রী তথা সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন ‘ইমাম ঈদায়েঁ’ কারী ফজলুর রহমান। সংখ্যালঘু উন্নয়নে যে সব কাজ করার কথা সরকার বলেছে, সে ব্যাপারে কোনও সরকারি আদেশনামা জারি না-হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ফজলুর। শুধু ‘মুখের কথা’য় যে কাজ হবে না, তা-ই বুঝিয়েছেন তিনি।
সেই সঙ্গেই যে সব মন্ত্রী বৃহস্পতিবারের কাজী সম্মেলনে আসবেন কথা দিয়েও আসেননি, তাঁদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ফজলুর বলেন, “মন্ত্রীদের মনে রাখতে হবে, তাঁরা কিন্তু ভোট পেয়ে বিধায়ক হয়ে মন্ত্রী হয়েছেন। ফলে, সমাজের প্রতি তাঁদের দায়বদ্ধতা আছে। কথা দিয়ে কথা না-রাখা কিন্তু মানুষ ভাল ভাবে নেন না! বিশেষ করে, এই ধরনের অনুষ্ঠানে মুসলিম মন্ত্রীদের না-আসাটা বিশ্বাসভঙ্গের সামিল।” মুসলিম ইনস্টিটিউটে এ দিন ‘মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রার অ্যান্ড কাজী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনে’র পঞ্চম বার্ষিকী সম্মলনের শেষে ওই কথা বলেন কারী ফজলুর।
প্রসঙ্গত, মাস দেড়েক আগে ঈদের নমাজের সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতার উপস্থিতিতে কারী ফজলুরই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, “মুসলিমেরা কিন্তু বদলাননি। তাঁদের জন্য কাজ না-করলে বামফ্রন্টের মতো এঁদেরও চলে যেতে হবে!” তার দু’দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা জানিয়ে দেন, মুসলিমদের জন্য তাঁর করণীয় কাজের ৯০% করা হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের কিছু দিনের মধ্যেই একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ফজলুর মহাকরণে গিয়ে মমতার সঙ্গে দেখা করেন। মুসলিমদের উন্নয়নের জন্য কিছু নির্দিষ্ট প্রস্তাব দেন। যার মধ্যে চাকরি, শিক্ষা-সহ নানা ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণ ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের জন্য এক জন প্রতিমন্ত্রী নিয়োগের দাবি ছিল।
কিন্তু তাঁদের প্রত্যাশা পূরণের ইঙ্গিত যে তাঁরা পাচ্ছেন না, একের পর এক সংখ্যালঘু ব্যক্তিত্বের উষ্মাপ্রকাশ থেকেই তা স্পষ্ট। বুধবারই সারা বাংলা মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রার ও কাজী সোসাইটির একটি সম্মেলনে তৃণমূলের ‘কাছের লোক’ বলে পরিচিত পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী মুখ্যমন্ত্রীর ৯০% কাজের ‘দাবি’কে নস্যাৎ করে অভিযোগ করেছিলেন, মুসলিমদের জন্য এই সরকার এখনও এক শতাংশও কাজ করেনি।
এই চাপানউতোরের মধ্যেই ফজলুর এ দিন কাজীদেরই অন্য একটি সম্মলনে বলেছেন, “এই সরকার মুসলিমদের জন্য এ পর্যন্ত কোনও কাজ করেনি। অন্তত কোথাও কোনও সরকারি আদেশনামা জারি হয়নি। শুনেছি সংরক্ষণের বিষয়টি কী ভাবে সমীক্ষা করা যায়, তা নিয়েই এখনও ভাবনা-চিন্তা চলছে। সমীক্ষার কাজ কবে শুরু হবে?” তাঁর আরও বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে আবার চিঠি দিয়েছি। তাঁর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, কালী পুজোর পরে মুখ্যমন্ত্রী সময় দেবেন। তখনই তাঁর কাছে জানতে চাইব, মমতার সরকার এ পর্যন্ত সংখ্যালঘু উন্নয়নে কী কাজ করেছে। শুধু মুখের কথায় হবে না! দেখতে চাইব সরকারি নথি,আদেশনামাও।”
সংখ্যালঘু উন্নয়ন নিয়ে উষ্মা বা ক্ষোভ একাধিক বার প্রকাশ্যে এসে পড়লেও শাসক তৃণমূল শিবির অবশ্য মনে করছে, প্রত্যাশা পূরণের ‘আশা’ করার সময় এখনও আসেনি। বিভিন্ন মঞ্চ থেকে উষ্মা প্রকাশের ঘটনাকে এখনই ‘বিশেষ গুরুত্ব’ দেওয়ারও কারণ ঘটেনি বলে তাদের অভিমত। প্রসঙ্গত, এ দিনের সম্মেলনেই তৃণমূল বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা বলেন, “মুসলিমেরা জোটবদ্ধ না-হলে তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম কেউই কোনও কাজ করবে না তাঁদের জন্য। যেমন ছেলে না-কাঁদলে মা দুধ দেন না, ঠিক তেমনই মুসলিমদেরও জোটবদ্ধ হয়ে দাবি আদায় করতে হবে। আর সেই দাবি আদায় করতে মুসলিমদের নিজেদের প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।”
‘মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রার অ্যান্ড কাজী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনে’র সম্পাদক আব্দুল হাই পাইক এ দিন ঘোষণা করেন, ১৮৭৬ ও ১৮৮০ সালের মুসলিম বিবাহ আইন পরিবর্তন করা হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। তিনি বলেন, “আমরা জেনেছি, এই সরকার ওই আইন দু’টি বদল করার কাজ শুরু করছে। আমাদের সঙ্গে বা শরিয়ত বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না-করেই। তা করা হলে রাজ্য জুড়ে বড় মাপের আন্দোলন হবে।” তাঁর ওই দাবিকেও সমর্থন করেছেন কারী ফজলুর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.