ছাঁটাই করার প্রতিবাদে কারখানার মূল দরজার সামনে অস্থায়ী শ্রমিকদের একাংশ অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন। কারখানার বাকি শ্রমিকেরা তাঁদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিলেন। এই আন্দোলনে একযোগে সামিল হল আইএনটিটিইউসি ও সিটু নেতৃত্বও। পরিস্থিতি, এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে শেষে উৎপাদন আপাতভাবে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন কারখানা কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার বড়জোড়ার একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
কারখানার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মনোজ বনশালের দাবি, “এখন নানা কারণে আমাদের কারখানার উৎপাদন আগের থেকে কমে গিয়েছে। তাই কিছু শ্রমিককে আপাতত ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ দিন তাঁরা আন্দোলন শুরু করায় কারখানায় কম শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছিলেন। তাই বাধ্য হয়ে বিকেলে কারখানার উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হয়েছে।”
কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে প্রায় ১৩০ জন শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে ৪০ জন অস্থায়ী শ্রমিককে কর্তৃপক্ষ ছাঁটাই করে। কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এ দিন সকালে কারখানার দরজার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকেরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন অস্থায়ী শ্রমিকদের অনেকে। কারখানায় কাজে যোগ দেন অল্প কয়েক জন। ফলে, উৎপাদন কম হয়। বিকেলে কারখানা আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের মধ্যে মঙ্গল বাউরি, নারায়ণ কুণ্ডু বলেন, “দীর্ঘ আট বছর ধরে এই কারখানায় কাজ করেছি। এখন হঠাৎ করে আমাদের ছাঁটাই করে দিলে আমরা সংসার চালাব কী ভাবে? অন্যায়ভাবে আমাদের বাদ দেওয়া চলবে না। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।” তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন কারখানার আইএনটিটিইউসি ও সিটু শ্রমিক সংগঠন। কারখানার আইএনটিটিইউসি নেতা মহারাজ দাস ও সিটু নেতা সুদীপ ঘোষের অভিযোগ, “কাঁচা মালের অভাব বা উৎপাদন কমে যাওয়ার অজুহাত দিয়ে মালিক পক্ষ শ্রমিকদের ছাঁটাই করতে চাইছে। আমরা তা মানি না। মালিক পক্ষ ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
বড়জোড়া পঞ্চায়েতের প্রধান অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন কারখানায় কাজ করেছেন। এখন তাঁরা কাজ হারালে সংসার চালাবেন কী ভাবে? আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসব।” বাঁকুড়ার অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার ধনঞ্জয় গুহ বলেন, “মালিক পক্ষ ও শ্রমিক পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসা হবে। শীঘ্রই তাঁদের দু’পক্ষকে চিঠি দিয়ে আলোচনায় ডাকা হবে।” |