রাস্তার দু’পাশই চলে গিয়েছে দখলদারদের কবলে। দাপট বাড়তে বাড়তে এমনই অবস্থা যে পাশপাশি দু’টি বাস ঠিকমতো চলাচল করতে পারে না। ফলে রোজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যানজটে পড়ে নাকাল হতে হচ্ছে নানা কাজে রাস্তায় বের হওয়া মানুষজন, যানবাহনকে। বিশেষত খুবই খারাপ অবস্থায় পড়তে হয় কাকদ্বীপ বাসস্ট্যান্ডের কাছে। স্থানীয় মানুষ এ জন্য স্বাভাবিক ভাবেই আঙুল তুলেছেন প্রশাসনের দিকে। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের গা ছাড়া মনোভাবের সুযোগ নিয়েই রাস্তার দু’ধারে দখলদারদের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েছে। বর্তমানে গাড়ি চলাচলের রাস্তা এতটাই সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে, যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
যদিও জেলা প্রশাসনের তরফে যান চলাচলের রাস্তা দখলদারদের হাতে চলে যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিকে দায়ী করা হয়েছে। কাকদ্বীপের মহকুমাশাসকরাহুল মজুমদার বলেন, “যানজটের সমস্যার ব্যাপারে পুলিশ ও রাজনৈতিক দলগুলির নেতাদের বার বার বলা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে সদিচ্ছার মনোভাব নিতে দেখা যায়নি কাউকেই। তবে এই অবস্থা তো চলতে দেওয়া যায়না। শীঘ্রই রাস্তার দু’পাশ থেকে দখলদারদের হটানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বকখালি, নামখানা, কাকদ্বীপ, গঙ্গাধরপুর থেকে ডায়মন্ড হারবার, কলকাতায় যাতায়াতের জন্য নিত্য কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করে। ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের ওই রাস্তায় কাকদ্বীপ বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার আগে থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রাস্তার দু’ধারে দখলদারদের দাপট। কোথায় দোকান, কোথাও ভ্যানরিকশার স্ট্যান্ড, ট্রেকার স্ট্যান্ড, মালবোঝাই লরি দাঁড়িয়ে থাকে। তার উপর বাসগুলির যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের ওঠা নামা করানো তো লেগেই রয়েছে। অথচ সদাব্যস্ত রাস্তায় স্থানীয় ৫-৬টি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ছাড়াও রোজ নানা কাজে প্রচুর মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। এমনকী গঙ্গাসাগর মেলার সময়ও এই কাকদ্বীপ বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রচুর পূণ্যার্থী মেলায় যান।
এলাকার মানুষের অভিযোগ, একে দখলদারির দাপটে সংকীর্ণ রাস্তা, তার উপর প্রায়ই দু’টি বাসের রেষারেষিতে যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মদতপুষ্ট দখলদার এবং তা নিয়ে প্রশাসনের নির্বিকার মনোভাবেই এই অবস্থা দাঁড়িয়েছে।
কাকদ্বীপ থানার ওসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই রুটে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহন বোইনিভাবে রাস্তার ধারে দাঁড়ানোর ফলে যানজটের সৃষ্টি হত। এ জন্য সকাল-বিকেল পুলিশ রেখে যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা হয়েছে। তবে বেশি সমস্যা হচ্ছে রাস্তার দু’পাশে দখলদারদের জন্য। রাস্তা দখলমুক্ত করতে কী করণীয় তা নিয়ে শীঘ্রই প্রশাসনিক বৈঠক ডাকা হবে।”
রাস্তার দু’পাশ থেকে দখলদারদের হটিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গে কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক মণ্টুরাম পাখিরা বলেন, “যানজট সমস্যার সমাধান অবশ্যই দরকার। কিন্তু রাস্তার ধারে যে সব দোকান রয়েছে সেগুলি গরিব মানুষের। তাঁদের উপযুক্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে ওই জায়গা থেকে সরানো যাবে না।” |