ওয়ান ডে এখন বাসের মতো, একটা গেলে আর একটা আছে |
হরভজন সিংহের বাদ পড়া নিয়ে অনেক ফিরিস্তি এর মধ্যেই পড়ে ফেলেছি। আমার নিজের বক্তব্যটা জানাই: এটা খুব দরকার ছিল।
ভুল বুঝবেন না। আমি নিজেও বিশ্বাস করি হার্বি (হরভজন) অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন বোলার। ওর সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি, ভীষণ ঝকঝকে আর আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেটার। আমি নিশ্চিত ও ফিরে আসবে। এই ধাক্কাটা ওকে নতুন করে ভাবাবে। আমার তো মনে হয় ধাক্কাটা ওকে অনেক ধারালো করে ফেরাবে।
আসল সমস্যাটা ওর মনে। এরা কুৎসিত ভাবে এত বেশি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলে যে, হার্বি ক্লান্ত-বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। এখন সীমিত ওভারের ক্রিকেট হচ্ছে বাসের মতো। একটা মিস করলে সঙ্গে সঙ্গে আর একটা এসে গিয়েছে।
আমি অবশ্য সবথেকে বেশি খুশি হয়েছি ভারতীয় নির্বাচকদের মন্তব্য শুনে যে, হরভজনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বিশ্রাম-টিশ্রাম জাতীয় অলঙ্কার ওঁরা ব্যবহার করেননি। ভারতীয় নির্বাচকেরা বড্ড বেশি আঞ্চলিক রাজনীতির শিকার হন। অভিজ্ঞতা আর সুপারস্টার ইগোকে তোয়াজ করে চলতে হয়। আরও ক্ষমতা দিলে আমি নিশ্চিত, ওঁরা সত্যি কথা বলার সাহসটা দেখাতে পারবেন।
ক্রীড়াবিদের জন্য নির্মম সত্যি হচ্ছে, চাকরিটা শুধুমাত্র পারফরম্যান্সের উপর দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের কাজটা ব্যাঙ্কের চাকরি বা সমাজ গড়ে তোলার মতো নয়। পারফরম্যান্স করলে বাঁচব। না করলে মৃত্যু। এতে হতাশা যেমন আছে তেমন পুরস্কারটাও তো দারুণ। আমি তো বলব, সিনিয়রদের মধ্যে যারা পারফর্ম করছে না তাদের কাউকে কাউকে বসিয়ে দাও। আর যেটা সত্যি সেটাই বলো যে, ওদের বাদ দেওয়া হয়েছে। বাদ দিলে সিনিয়রদের জাগিয়ে তোলা যাবে। মনে রাখা দরকার, সোনালি অতীত দারুণ সব স্মৃতি এনে দিতে পারে। ভবিষ্যতে ম্যাচ জেতাবে না।
স্যর আলেক্স ফার্গুসনকে দেখুন। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে ওঁর সময়ে পাঁচটা দল গড়েছেন। আর সব সময় ওঁর মন্ত্রটা থেকেছে তারুণ্য-নির্ভর। এখনকার টিমটা দেখুন। একেবারে তরুণ রক্তে ভর্তি। যে কোনও খেলাকেই টিকিয়ে রাখতে হলে তারুণ্যের স্ফুর্তি দরকার হয়। তার সঙ্গে কিছু অভিজ্ঞ প্লেয়ার জুড়ে দেওয়া যেতে পারে। ওয়ান ডে ক্রিকেট তো আরও বেশি করে তারুণ্যের খেলা।
ভারতীয় ক্রিকেটেরও এখন সামনের দিকে তাকানোর সময়। আশিস নেহরা বাদ পড়ে যতই নির্বাচকদের আক্রমণ করুক তাতে কান দিলে চলবে না। আমার মনে হয় ভারতীয় নির্বাচকেরা একটা ভুল করেছে প্রজ্ঞান ওঝাকে বাদ দিয়ে। কিন্তু সেই ভুলটা ওঁরা শুধরে নিতে পারেন কারণ ফোকাসটা পরের ম্যাচের উপর নয়। ফোকাসটা পরের বিশ্বকাপে।
মনে রাখার কথা বলতে গিয়ে মনে পড়ল, ইংল্যান্ডের জোনাথন বেয়ারস্টোর উপর চোখ রাখুন। আমার খুব পুরনো বন্ধু প্রয়াত ডেভিড বেয়ারস্টোর ছেলে। জনি বেড়ে ওঠার সময় আমি আর রাচেল ওর মা জেনেটকে সাহায্যও করেছি। কিন্তু সেটা ওকে নিয়ে লেখার কারণ নয়। একেবারেই ক্রিকেটীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলছি যে, আমি বিশ্বাস করি জনি সুপারস্টার হবে। আইপিএল টিমগুলোকে পরামর্শ দেব, এখনই ওকে সই করাও। |