শুক্রবার থেকে শুরু ভারত-ইংল্যান্ড এক দিনের সিরিজের আগে একটা কথা আমাকে বলতেই হচ্ছে। এই প্রথম ইংল্যান্ডের কোনও দল এ দেশের মাটিতে এক দিনের সিরিজ খেলতে নামছে ভারতের সঙ্গে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে। পিছিয়ে থেকে নয়।
এ কথা কেন বলছি? আসলে এই ভারতীয় দলটায় চোটের জন্য বেশ কয়েক জন সিনিয়র ক্রিকেটার নেই। দলটার একটা নতুন চেহারা। এর আগে আমরা দেখেছি, উপমহাদেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের এক দিনের দলকে ভারত স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে। ১৩টা ম্যাচে ১১টা হার এই তথ্যটাই তুলে ধরছে ভারতীয় আধিপত্যের ছবিটা। কিন্তু এ বার ব্যাপারটা সম্পূর্ণ অন্য রকম।
ইংল্যান্ডকে দেখে মনে হচ্ছে এক দিনের ক্রিকেটে ওদের রেকর্ডটা নতুন ভাবে লিখতে ওরা বদ্ধপরিকর। আগামী বিশ্বকাপের কথা মনে রেখে ওরা দলের খোলনলচে বদলে ফেলেছে। অ্যালিস্টার কুককে অধিনায়ক করে এনেছে। দলের প্লেয়াররা ওকে খুব সমীহ করে। একই সঙ্গে কুককে দেখে মনে হয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসাবে ছাপ রেখে যেতে ও মরিয়া। কেভিন পিটারসেনের দলে ফিরে আসাটাও ওদের পাওয়ার হিটিংকে জোরদার করবে।
ইংল্যান্ডে এর আগে ধোনি, যুবরাজ, রায়নার মতো পাওয়ার হিটার ছিল না। কিন্তু এ বার ওদের বেয়ারস্টো আছে। কার্ডিফে শেষ এক দিনের ম্যাচটায় দারুণ মানসিকতা দেখিয়েছে বেয়ারস্টো। এখানে এসে ওয়ার্ম আপ ম্যাচেও পঞ্চাশ বলে একশো করে দিয়েছে। এই ছেলেটার উপর কিন্তু নজর রাখতে হবে। যেমন আর এক জন ক্রিকেটার এই সিরিজে ছাপ ফেলতে পারে। রবি বোপারা।
ভারতের কথায় আসি। দলটায় বেশ কয়েক জন তরুণ ক্রিকেটার আছে। আর এই ব্যাপারটা আমার খুব ভাল লেগেছে। নিজেদের প্রমাণ করার জন্য ভারতের তরুণ ফাস্ট বোলারদের একটা মঞ্চ দরকার ছিল। আর এ বার ওরা সেটা পাবে। নির্বাচকদেরও উচিত দলের এই তরুণ ক্রিকেটারদের যতটা সম্ভব সুযোগ দেওয়া। ভারতীয় ক্রিকেটকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এখন তরুণ রক্তেরই প্রয়োজন। আশা করব, পাঁচ জনই নিজেদের প্রতিভা দেখানোর সুযোগ পাবে এই সিরিজে। কোনও সন্দেহ নেই, বোলারদের কাছে পরীক্ষাটা রীতিমতো কঠিন হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমার মত হল, কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে শেখাটাই সবচেয়ে ভাল।
অধিনায়ক ধোনি এবং ওর ‘মিডাস টাচ’ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। ধোনিকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথাও নাকি হচ্ছে। শুনে অবাক হয়ে যাচ্ছি। এর থেকে হাস্যকর আর কিছু হতে পারে নাকি! মানছি, ইংল্যান্ডে আমরা বিপর্যস্ত হয়ে এসেছি। কিন্তু শুধু ইংল্যান্ড সফর দিয়ে ধোনির বিচার করা ঠিক না। এই সিরিজে একটা তরুণ দলকে নেতৃত্ব দেবে ধোনি। অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য দল তৈরি করারও এটা একটা ভাল সুযোগ থাকছে।
এই সময়টা ভারতীয় ক্রিকেটের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অস্ট্রেলিয়া সফরের কথা মাথায় রেখে ধোনিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া উচিত। যাতে ও মানসিক এবং শারীরিক ভাবে তরতাজা অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ায় যেতে পারে। |