বক্সায় ৪টি নতুন প্রজাতির সাপের সন্ধান মিলল। গত অগস্টে বক্সায় বনকর্মীদের একটি প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশ নেওয়ার সময়ে রাজ্যের বিশিষ্ট সর্প বিশেষজ্ঞ দীপক মিত্র ওই ৪ প্রজাতির সাপ চিহ্নিত করেন। ছবি তুলে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করার পরে জানা যায়, বক্সায় রেড টেল বাম্বু পিট ভাইপার, মক ভাইপার, অসম স্নেল ইটার ও থাই ক্যাট স্নেক বা বঙ্কোরাজ নামে ওই ৪ প্রজাতির সাপের অস্তিত্ব আগে দেখা যায়নি। ওই ঘটনায় বক্সায় বনকর্মী মহলে খুশির জোয়ার এসেছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অরণ্যের মধ্যে বক্সা যে এখনও জীববৈচিত্রে এগিয়ে রয়েছে সেটা ফের প্রমাণিত হল বলে দাবি করেছেন বনকর্মী ও আধিকারিকেরা। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা রাজেন্দ্র জাখর বলেন, “দীপকবাবু যে ৪টি সাপ চিহ্নিত করেছেন সেগুলি আগে বক্সার জঙ্গলে দেখা যায়নি। আমরা খোঁজ নিয়েই এ কথা বলছি। এই ঘটনায় ফের প্রমাণিত হল বক্সার জঙ্গলে জীববৈচিত্র বাড়ছে। আগামী দিনে সরীসৃপ নিয়ে আলাদা করে অনুসন্ধান চালিয়ে তথ্য ভান্ডার গড়ে তোলা হবে।” |
রাজ্যের বন্যপ্রাণ বিভাগের প্রধান মুখ্য বনপাল ও চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সিতাংশু বিকাশ মন্ডল বলেন, “জীববৈচিত্রে বক্সা সবসময়েই এগিয়ে রয়েছে। এ বার চারটি নতুন প্রজাতির সাপ পাওয়া গিয়েছে বলে শুনেছি। এটা দারুণ খবর। এই জীববৈচিত্র ধরে রাখার দিকে নজর দেওয়া হবে।” সর্প বিশেষজ্ঞ দীপকবাবুও বলেন, “বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ। বড় বড় পাইথন রয়েছে। এখনও এমন সাপ পাওয়া যাবে যা আগে দেখা যায়নি। নভেম্বর মাসে ফের সরীসৃপ নিয়ে অনুসন্ধান চালাতে বক্সা তথা উত্তবঙ্গের বিভিন্ন জঙ্গলে যাব।” ওইসর্প বিশেষজ্ঞ জানান, সবুজ রঙের রেড টেল বাম্বু পিট ভাইপার মিজোরাম ও অরুণাচল প্রদেশে দেখতে পাওয়া যায়। বিষধর প্রজাতির সাপটি গাছে থাকে। এরা ডিমের বদলে সরাসরি সন্তান প্রসব করে। মাটিরঙা মক ভাউপার মাটিতে থাকতে ভালোবাসে। গাছে ওঠে না। এদের বিষ খুব ক্ষীণ। মানুষের কোনও ক্ষতি করে না। অসমের শামুকখেকো বা অসম স্নেল ইটার অন্য সাপ, গেড়ি ও শামুক খায়। অরুণাচল ও অসমে এই নির্বিষ সাপটি দেখতে পাওয়া যায়। এদের গায়ে হাল্কা কমলা রঙের উপর কালো চুড়ির মত দাগ থাকে। থাই ক্যাট স্নেক বাংলায় বঙ্কোরাজ নামে পরিচিত। এটিও বিরল। |