চা বাগানে শাবকের জন্ম দিল এক বুনো হস্তিনী। গভীর রাতে প্রসব হওয়ার পর ভোরবেলা শাবক-সহ ২টি স্ত্রী হাতিকে চা বাগানে ঘোরাফেরা করতে দেখেন হলদিবাড়ি চা বাগানের শ্রমিকেরা। কখনও মা হাতিটি শুঁড় দিয়ে বুলিয়ে দিচ্ছে সন্তানের শরীর। সন্তানের হুটোপুটি সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে দুই হাতি। আর সেই দৃশ্য খুব সামনে থেকে দেখে ঘন ঘন হাততালি দিয়ে উঠছে শ্রমিক বস্তির শিশুরা। উৎসুক জনতাকে সামলাতে রীতিমতো হিমসিম খান বনকর্মীরা। জংলি হাতি চা বাগানে শেষ কবে সন্তান প্রসব করেছিল তা জানা নেই শ্রমিক বা বনকর্মীদের। জলপাইগুড়ি বন দফতরের ডিএফও সুমিতা ঘটক বলেন, “চা বাগানে সাধারণত হাতির সন্তান প্রসবের ঘটনা তেমন ঘটে না। ওই হস্তিনীটি এক জঙ্গল থেকে অন্য জঙ্গলে যাওয়ার পথে চা বাগানে সন্তান প্রসব করে। মা ও সন্তান সুস্থ।”
বুধবার গভীর রাতে ডুয়ার্সের রেতির জঙ্গল থেকে ৩৫টি হাতির একটি দল তেলিপাড়া হয়ে মরাঘাটের জঙ্গলের দিকে যাচ্ছিল। ওই দলে ৩টি শাবক ছিল ও একটি গর্ভবতী হাতি ছিল। বনকর্মীরা জানান, গভীর রাতে তেলিপাড়া চা বাগানে ওই প্রসূতির প্রসব বেদনা ওঠে। |
তবে বন ছেড়ে বেরোলে সাধারণত হাতির দল পথ ভুল না করলে চা বাগান বা লোকালয়ে থাকতে চায় না। এ ক্ষেত্রে সন্তান প্রসব হওয়ার পর ভোর হলে হাতির দল মরাঘাট জঙ্গলের উদ্দেশে রওনা হয়ে যায়। মা ও সন্তান হাতিটি কাছের হলদিবাড়ি চা বাগানে চলে আসে। তাদের দেখভাল করার জন্য থেকে যায় আর একটি স্ত্রী হাতি।
ভোরবেলা হলদিবাড়ি বাগানের শ্রমিকেরা ১৬ নম্বর সেকশনে চা গাছের ঝোপে দূর থেকে দু’টি হাতি দেখতে পান। কিছুটা কাছে গিয়ে তাঁরা দেখেন, দু’টি হাতির মাঝখানে রয়েছে একটি ফুটফুটে শাবক। ভিড় দেখে দু’টি স্ত্রী হাতি তাদের দু’জনের শরীরের মাঝখানে শাবকটিকে
আড়াল করে রাখার চেষ্টা করছিল। তবে ছটফটে স্বভাবের ওই শাবকটি ওই ভাবে কিছুতেই থাকতে চাইছিল না। বারবার বেরিয়ে এসে শুঁড় দিয়ে চা গাছের পাতা টানার চেষ্টা করছিল। মায়ের দুধও খাচ্ছিল সে। বেলা ১২ টা নাগাদ বহু চেষ্টা করে ওদের মরাঘাট জঙ্গলে তাড়িয়ে আসেন বনকর্মীরা। হলদিবাড়ি বাগানের বাসিন্দা দীপক কুজুর ও রাম মিনজের কথায়, “এত ছোট শাবক আগে দেখিনি। বাচ্চাটি খুব দুরন্ত হবে। তাকে দেখার জন্য বস্তির সকলে চলে আসি।” |