|
|
|
|
স্বাগত জানাল ডান-বাম দু’পক্ষই |
এলাকায় শান্তি ফেরাতে উদ্যোগ ব্লক প্রশাসনের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
রাজনৈতিক অশান্তি ঠেকাতে আরামবাগ ব্লকের মান্দরা গ্রামে সামাজিক পরিবেশের বদল ঘটাতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। গ্রামবাসীদের মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি নিয়ে যেমন সচেতনতার প্রচার শুরু হয়েছে, তেমনই খেলাধুলো বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মতো কিছু কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিও মৃণালকান্তি গুঁই।
বিধানসভা ভোটের পর থেকেই আরামবাগ ব্লকে রাজনৈতিক অশান্তি লেগে রয়েছে। প্রথম দিকে সংঘর্ষ বাধছিল সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে। ইদানীং তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। দলমত নির্বিশেষে মান্দরা গ্রামের বাসিন্দাদের বক্তব্য, পুলিশের উপরে আর তাঁদের আস্থা নেই। গত সোমবার গ্রামের বাসিন্দারা এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। প্রায় দেড়শো গ্রামবাসী গণস্বাক্ষর সংবলিত আবেদনপত্র জমা দিতে এসে ব্লক অফিস চত্বরে এ নিয়ে বিক্ষোভও দেখান। তার পরেই প্রশাসন সামাজিক পরিবেশের বদল ঘটাতে উদ্যোগী হয়।
বিডিও বলেন, “গ্রামবাসীদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষা-স্বাস্থ্য এবং পুষ্টিকে মাপকাঠি বা সূচক ধরে এগোতে চাইছি আমরা। তাই জোর প্রচার শুরু করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে ক্রীড়া বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, এর মাধ্যমে অশান্তি ঠেকানো যাবে। পর্যায় ক্রমে ব্লকের অন্য গ্রামগুলিতেও এই সব কর্মসূচি রূপায়ণ করা হবে।”
মান্দরা গ্রামের বাসিন্দাদের বক্তব্য, জনা কুড়ি যুবক নিজেদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থক দাবি করে গ্রামের রাস্তা, বাজারে অশান্তি চালাচ্ছে। স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের হেনস্থা করছে। কিন্তু পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। এমনকী, পুলিশের বিরুদ্ধেও তাঁরা হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন। মান্দরা গ্রামের সিপিএম সমর্থক, বৃদ্ধ সওকৎ মোল্লা এবং কালীপদ মান্না বলেন, “আমরা চাই গ্রামে আতঙ্কের পরিবেশ কাটুক। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক।” তৃণমূল সমর্থক মিজানুর খান কিংবা বিশ্বনাথ মুদিরও বক্তব্য একই রকম। তাঁরা বলেন, “গ্রামের রাস্তা বা বাজারে আমরা যাতে নির্ভয়ে যাতায়াত করতে পারি, সে ব্যাপারে প্রশাসন পদক্ষেপ করুক। পুলিশের উপরে আমাদের আর আস্থা নেই।”
গ্রামবাসীদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিএম। দলের আরামবাগ জোনাল কমিটির সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, “সর্বত্র গ্রামবাসীরা যদি এ ভাবে উদ্যোগী হয় তা হলে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কেউ বাধা দিতে পারবে না।” গ্রামের গোলমালে তাঁদের কেউ জড়িত নন বলে দাবি মোজাম্মেলের। অন্য দিকে, আরামবাগের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, “অরাজকতার বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের প্রতিবাদ অন্যত্রও পথ দেখাবে।” তিনিও গোলমালের ঘটনাক দলের কেউ জড়িত থাকছেন না বলে দাবি করেছেন।
পুলিশের উপরে গ্রামবাসীদের আস্থা হারিয়ে ফেলার বিষয়টি মানতে চাননি এসডিপিও (আরামবাগ) আকাশ মাগারিয়া। তিনি বলেন, “পুলিশ সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ার কথা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে। গ্রামবাসীদের সহযোগিতা পেলে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা সহজ হবে। পুলিশের উপরে আস্থা হারিয়ে ফেলার মতো কোনও ধরনের ঘটনা ঘটেনি।” |
|
|
|
|
|