|
|
|
|
তৃণমূলের ঘরোয়া কোন্দল চণ্ডীতলায় |
দলীয় সদস্যদের আনা অনাস্থায় প্রধান অপসারিত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চণ্ডীতলা |
দলেরই সদস্যদের আনা অনাস্থায় হেরে গেলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান। দলীয় কোন্দলের জেরেই চণ্ডীতলা-২ ব্লকের নৈটি পঞ্চায়েতে এই পরিস্থিতি বলে দলের অন্দরের খবর। জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েও ফল না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রধান পঞ্চায়েতের সদস্য পদেও ইস্তফা দিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, ‘জমির দালালি’ নিয়ে অন্তর্বিরোধের জেরেই প্রধান সদস্য পদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। দলীয় সূত্রে অবশ্য সরাসরি এ বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “আমি সময় মতো দলের রাজ্য কমিটিকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছিলাম।”
ওই পঞ্চায়েতের প্রধান সুশান্ত কোলে এলাকায় ‘কাজের মানুষ’ হিসেবে ‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তি’র মানুষ। কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, পঞ্চায়েত প্রধান তিনিই হতে পারবেন, যিনি পঞ্চায়েতে পূর্ণ সময় দিতে পারবেন। সুশান্তবাবু ডানকুনির একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। পেশাগত কারণে তিনি ব্যস্ত থাকবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে সিপিএমের তরফে বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল। প্রশাসনিক তদন্তে জানা যায়, প্রধান রাতের শিফ্টে কারখানায় কাজ করেন। সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, দায়িত্ব সামলাতে সমস্যা হবে না প্রধানের। সে ব্যাখ্যায় ‘সন্তুষ্ট’ প্রশাসন প্রধান পদের দায়িত্ব সামলানোর ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দেন সুশান্তবাবুকেই।
সুশান্তবাবু বলেন, “আমার সংস্থা থেকে আমাকে পূর্ণ অনুমতি দেওয়া হয়েছিল প্রধান হিসেবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য। অফিস যে কোনও বাধা নয়, প্রশাসন তদন্ত করে সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়। আসলে প্রধানের চেয়ারে বসে আমি কোনও অনৈতিক কাজে সায় দিতে প্রস্তুত ছিলাম না। সেই কারণেই আমার মাথায় দলীয় স্তরেই অনাস্থার খাঁড়া নেমে এল।” তিনি আরও বলেন, “কারও বিরুদ্ধে আমার কোনও ক্ষোভ নেই। যা জানানোর দলের অন্দরেই জানাব।”
পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সুকান্ত বাগচির অবশ্য দাবি, “এটা সম্পূর্ণ ভাবেই আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। উনি চাকরি করেন। পঞ্চায়েতে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারেন না। দলের সিদ্ধান্ত ছিল এক বছর পরে উনি প্রধানের পদ ছেড়ে দেবেন। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত মানছিলেন না। সে কারণেই অনাস্থা আনা হয়েছে।” ‘জমির দালালি’-সংক্রান্ত বিরোধ প্রসঙ্গে সরাসরি উত্তর এড়িয়ে তিনি বলেন, “১৮ সদস্যের পঞ্চায়েত, জমি-সংক্রান্ত ওয়ারিশন সার্টিফিকেট নিয়ে কোথায় কী সমস্যা সেটা আমার জানার কথা নয়।” ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূলের রয়েছেন ১৫ জন। সিপিএমের সদস্য সংখ্যা ৩। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে দলের জেলা নেতৃত্ব চেষ্টা করেছিলেন বিরোধ মেটাতে। কিন্তু কিছু সদস্য বেঁকে বসেন। কার্যত, জেলা নেতৃত্বের পরামর্শ উপেক্ষা করেন তাঁরা। বিবাদ এড়াতে শেষ পর্যন্ত তৃণমূল নেতৃত্ব ভোটাভুটিতে রাজি হন। বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত দফতরে ভোটাভুটি হয়। প্রধান-সহ তৃণমূলের ১২ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনই প্রধানের বিপক্ষে ভোট দেন। সিপিএমের সদস্যরা ভোটাভুটিতে যোগ দেননি। পঞ্চায়েত ভোটের আর খুব বেশি দেরি নেই। এই আবহে তৃণমূলের অন্দরের বিরোধ যে ভাবে সামনে চলে এসেছে, তাতে ভোটে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে দলেরই একাংশের অভিমত। |
|
|
|
|
|