অযোধ্যার রাজ্যে রথ ঢোকার পর ‘রাম নাম’ই ভরসা দলের
বিহার থেকে বেশ ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভাবমূর্তি নিয়ে বেরিয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। অযোধ্যার রাজ্য উত্তরপ্রদেশে এসে কিন্তু তাঁর ‘রাম নামই ভরসা’। তবে নামটুকু উল্লেখ ছাড়া বাড়াবাড়ি উদ্দেশ্যপূর্ণ ভাবেই এড়িয়ে গেলেন তিনি। কিন্তু দল নাছোড়।
আজ বারাণসীতে তৃতীয় দিনের যাত্রা শুরুর আগে কাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরে যান আডবাণী। পরে বারাণসীতে প্রথম জনসভায় উমা ভারতী রাম মন্দির আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুললেও আডবাণী টুঁ শব্দটি করেননি। কিন্তু যাত্রা মির্জাপুর পৌঁছতেই আডবাণীর মুখে সোমনাথ থেকে অযোধ্যার যাত্রা ও অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের প্রসঙ্গ ফিরে এল। তবে বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি মাতামাতি যাতে না হয়, সে ব্যাপারেও সচেতন ছিলেন তিনি।
আডবাণীর রথ যখন আজ উত্তরপ্রদেশ থেকে যাত্রা শুরু করল, ঠিক একই দিনে আরও দুটি যাত্রা এ রাজ্যে শুরু করলেন বিজেপির দুই নেতা কলরাজ মিশ্র ও রাজনাথ সিংহ। কাশী থেকে কলরাজের যাত্রার সূচনা করলেন স্বয়ং আডবাণীই। আর মথুরা থেকে শুরু হল রাজনাথের রথ। অযোধ্যার মতো কাশী ও মথুরাতেও মন্দির-মসজিদ বিতর্ক
রয়েছে। যা নিয়ে সঙ্ঘ ও বিজেপি আগে যথেষ্টই সক্রিয় ছিল। কিন্তু রাজ্যে নির্বাচন শিয়রে। বিজেপি নেতৃত্ব জানেন, লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে ক্ষমতা দখল করতে হলে উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যে ভাল ফল করতেই হবে। সে কারণে কট্টর হিন্দু ভোটকেও উপেক্ষা করা যাবে না।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির শীর্ষ এক নেতা জানালেন, আডবাণী অযোধ্যা নিয়ে খুব বেশি বলতে আগ্রহী ছিলেন না। এই মুহূর্তে রাম মন্দির আন্দোলনের সেই প্রাসঙ্গিকতাও নেই। সে জন্যই আডবাণী তাঁর এই যাত্রায় অযোধ্যাকে রাখেননি। কিন্তু তাঁর অযোধ্যায় না যাওয়াকে কেন্দ্র করে যে বিতর্ক হল, তার পরেই রাজনাথ ও কলরাজ মিশ্রর যাত্রা অযোধ্যায় শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। না হলে এই দুটি যাত্রা লখনউয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল। আজ বারাণসীতে আডবাণী যখন কিছু বললেন না, তাঁকে পরের সভায় এই বিষয়ে কিছু অন্তত বলার অনুরোধ করা হয়। আডবাণী তাই উত্তরপ্রদেশ ছেড়ে মধ্যপ্রদেশে প্রবেশের আগে কিছুটা প্রতীকী ভাবেই অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের কথা উল্লেখ করলেন।
কলরাজ মিশ্রের কথায়, “অযোধ্যার পর স্লোগান উঠেছিল, ‘অভি তো ইয়ে ঝাঁকি হ্যায়, কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়’ (এ শুধু নমুনা, কাশী-মথুরা এখনও বাকি)। কাশী ও মথুরা এখনও আমাদের কাছে অগ্রাধিকার।” কিন্তু মুখে এ কথা বললেও ঘরোয়া স্তরে বিজেপি নেতারা কবুল করছেন, সেই উগ্র হিন্দুত্বের প্রাসঙ্গিকতা এখন আর নেই। কিন্তু একেবারে উপেক্ষা করাও সম্ভব নয়। সে কারণেই আডবাণী আজ কলরাজের যাত্রা কাশী থেকে শুরু করলেও বিশ্বনাথ মন্দির থেকে করেননি। করেছেন, তার থেকে কিছুটা দূরে ভারতমাতা মন্দির থেকে। অন্য দিকে রাজনাথের যাত্রাও মথুরার ‘কৃষ্ণ জন্মভূমি’র পরিবর্তে শুরু হয়েছে ‘দীনদয়াল ধাম’ থেকে।
আডবাণীও আজ স্বীকার করেন, “লোকসভা নির্বাচনে জয়ের আগে উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যে জয় হাসিল করতে হবে।” দলের সেই রণকৌশল মেনেই রাজনাথের মতো ঠাকুর নেতা, কলরাজের মতো ব্রাহ্মণ নেতার পাশাপাশি উমা ভারতী ও বিনয় কাটিয়ারের মতো হিন্দুত্বের মুখকেও ব্যবহার করা হচ্ছে উত্তরপ্রদেশে। তাঁরা আবার পিছড়ে বর্গের। এই সম্প্রদায়ের সমর্থন ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি রাম মন্দির আন্দোলনের পর ‘হতাশ’ উচ্চবর্ণের মন জয় করাও উদ্দেশ্য বিজেপির। এ ছাড়া সঞ্জয় জোশীকেও দেখা গেল আডবাণীর কর্মসূচি রূপায়ণে প্রাণপাত করতে। এই জোশীকে দলে ফিরিয়ে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব দেওয়ার পিছনেও আডবাণীর ভূমিকা ছিল। আর সে কাজে কড়া আপত্তি জানিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.