রাসমেলার মুখে পর্যটকদের সামনে কোচবিহারের রাজাদের ইতিহাস তুলে ধরতে উদ্যোগী হয়েছে কোচবিহার পুরসভা। শহরের অন্যতম পর্যটক আকর্ষণ কেন্দ্র সাগরদিঘির চারদিকে রাজাদের নাম এবং তাঁদের কর্মকান্ডের তথ্য সমৃদ্ধ বোর্ড ঝোলানোর কাজ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে সাদরদিঘি চত্বরকে সাজার জন্য বৈদ্যুতিক আলোকসজ্জার কাজও শুরু করেছে পুরসভা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১০ নভেম্বর রাসমেলা শুরুর আগেই নতুন চেহারার অপেক্ষায় সাগরদিঘি। কোচবিহারের ইতিহাস সামন্য কিছু সময়ের মধ্যে অনেকটাই জানতে পারবেন পর্যটক থেকে শুরু করে বাসিন্দারা। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডু বলেন, “মূলত পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই কোচবিহারের রাজাদের ইতিহাস তুলে ধরার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে সাগরদিঘির আলোকসজ্জা-সহ আরও কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা খরত করা হচ্ছে।” সাগরদিঘি চত্বরে রাজকাহিনী শিরোনামে ইতিমধএ্য ৩০টি বোর্ড লাগানো হয়েছে। |
এ ভাবেই সাজানো হচ্ছে কোচবিহারের সাগরদিঘি। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব। |
এরমধ্যে পুরসভা লাগোয়া দিঘির কোণে প্রথমে বোর্ডে কোচবিহারের প্রথম মহারাজা চন্দনের (১৫১০-২২) নাম রয়েছে। ওই বোর্ডে লেখা হয়েছে, হরিদাস মণ্ডল নামে এক মেচ দলপতির সঙ্গে হাজো নামক এক কোচ ভুঁইয়ার জীরা এবং হীরা নামের দুই মেয়ের বিয়ে হয়। জীরার গর্ভে চন্দন ও মদন এবং হীরার গর্ভে শিশু ও বিশু জন্মগ্রহণ করেন। চন্দন হলেন কোচ রাজবংশের প্রথম রাজা। কোচবিহারের রাজকাহিনীতে মহারাজা বিশ্বসিংহ, নরনারায়ণ, নৃপেন্দ্রনারায়ণ-সহ ২৩-তম মহারাজা জিতেন্দ্রনারায়ণ-এর নাম উল্লেখ করে তথ্যপঞ্জী ইতিমধ্যে ঝোলানো হয়েছে। কোচবিহারের পুরাকীর্তি গবেষক নৃপেন পাল বলেন, “বেশ কিছু সন, তারিখ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে ঠিকই। তবে বেশি গ্রহণযোগ্য তথ্যকেই তুলে ধরা হয়েছে। কোচবিহারের শেষ মহারাজ ছিলেন জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ। সাবালক হওয়ার পর ১৯৩৬ সালে তিনি দায়িত্বে নিয়ে সত্তের দশক পর্যন্ত রাজত্ব করেছেন। পুরসভার তথ্য বোর্ডে বিষয়টির সংযোজন দরকার।” পুরসভার প্রয়াস নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির কর্মকর্তা অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “সাগরদিঘির চত্বর ফাঁকা থাকলেই ভাল হত। রাজ ইতিহাস তুলে ধরার জন্য বিকল্প জায়গা বেছে নিয়ে ভাল হত।” |