জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পানীয় জল সরবরাহের দুটি পাম্পই বিকল হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের দুটি ব্লকের ১০টি এলাকার বাসিন্দারা। হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ও ২ নম্বর ব্লকের ওই এলাকাগুলিতে পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্পটি রয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুরে। রয়েছে জল তোলার জন্য দুটি পাম্প। ২ মাস আগে তার মধ্যে একটি পাম্প বিকল হয়ে যায়। তারপর একটি পাম্প দিয়ে কোনও রকমে জোড়াতালি দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিল পিএইচই দফতর। ৩ দিন আগে ওই পাম্পটিও মোটর পুড়ে যাওয়ায় বিকল হয়ে যায়। ফলে হরিশ্চন্দ্রপুর-সহ ওই এলাকাগুলিতে পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিপাকে পড়েছেন এলাকার ৩০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা। তা নিয়ে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের হেলদোল নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যেই বিষয়টি প্রশাসনকে জানানোর পাশাপাশি দ্রুত সমস্যা না-মিটলে আন্দোলনে নামার হুমকি দেওয়া হয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের তরফে অবশ্য দ্রুত সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। দফতরের চাঁচল মহকুমার সহকারী বাস্তুকার গৌতম দত্ত বলেছেন, “পাম্পের মোটর পুড়ে যাওয়ায় ওই সমস্যা তৈরি হয়েছে। একটি পাম্প এনেও পরিস্থিতি যাতে সামাল দেওয়া যায় সেই ব্যবস্থা হচ্ছে।”
ওই প্রকল্প থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর ছাড়াও ১ নম্বর ব্লকের বারডাঙ্গা, পিপলা, রাধানগর, রেল স্টেশন এলাকা-সহ ২ নম্বর ব্লকের সুলতাননগর, বাইশা, রামরাই, এলাকাগুলিতে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। পিএইচই’র জল সরবরাহ ব্যবস্থা থাকায় ওই এলাকাগুলিতে নলকূপ সহ পানীয় জলের বিকল্প ব্যবস্থাও অপ্রতুল বলে অভিযোগ। পানীয় জলের সমস্যায় জেরবার হতে হচ্ছে ওই সমস্ত এলাকার বাসিন্দাদেরও। জল সঙ্কটে বিপাকে পড়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীরাও। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দু’দশক আগে হরিশ্চন্দ্রপুরে ওই প্রকল্প তৈরি হয়। তারপর জনসংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। ফলে দুটি পাম্প চললেও সমস্যা থেকেই যেত। তারপর একটি পাম্প দু’মাস আগে বিকল হওয়ার পরও কেন তা ঠিক করা হল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তৃণমূলের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের সহ সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, “বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই পানীয় জলের সঙ্কটে ভুগছেন। সঙ্কট মেটাতে ৪ বছর আগে জল সরবরাহের জন্য নতুন ৩টি টিউবওয়েল বসানো হয়। তা আজও চালু হয়নি। অভিযোগ জানানোর জন্য দফতরের আধিকারিকদেরও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। দ্রুত সমস্যা না মিটলে আন্দোলনে নামা হবে।” দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, বর্তমানে যে প্রকল্পটি রয়েছে তাতে ওই এলাকাগুলিতে সুষ্ঠু ভাবে জল সরবরাহ করা যায় না। সে জন্যই ২০০৮ সালে হরিশ্চন্দ্রপুর হাই স্কুল, ব্লক ও বারদুয়ারিতে ৩টি টিউবওয়েল বসানো হয়। ওই ৩টি প্রকল্প চালু হলে এলাকার পানীয় জলের সঙ্কট অনেকটাই মিটে যেত। বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে সেগুলি চালু করা যায়নি। দফতরের কর্তাদের দাবি, প্রকল্প ৩টি গড়ার পর ২০০৯ সালে বিদ্যুত সংযোগ চেয়ে টাকাও জমা দেওয়া হয়। সংযোগ দেওয়া হয়নি। দিনকয়েক আগে ওই প্রকল্প ৩টিতে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই ওই প্রকল্পগুলি থেকে জল সরবরাহ চালু হয়ে যাবে। এলাকাগুলিতে পানীয় জলের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। |