দীর্ঘদিন ধরে তরাই এবং ডুয়াসে আদিবাসীদের জমি নানা কৌশলে দখল হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে তা নিয়ে তদন্তের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হবে আদিবাসী বিকাশ পরিষদ। পরিষদ সূত্রের খবর, ওই সব দখল হওয়া জমি চিহ্নিতকরণের জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠনের দাবি জানানো হবে। পরিষদের ডুয়ার্স-তরাই আঞ্চলিক কমিটির তরফে একটি প্রতিনিধি দল দাবিপত্রটি মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেবে। পরিষদের রাজ্য সম্পাদক তেজকুমার টপ্পো বলেছেন, “দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে আদিবাসীদের জমি নানাভাবে বেদখল হচ্ছে। বেনামে, ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি করে আবার অনেক সময় জবরদস্তি জমি লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে বৃদ্ধ বয়সে আদিবাসীরা পথে এসে দাঁড়াচ্ছেন। বিশেষ কমিটি গঠন করে ওই জমি চিহ্নিত করে তা আদিবাসীদের ফিরিয়ে দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা সব বলব। আশা করি, উনি ব্যবস্থা নেবেন।” পরিষদের দাবি, জেলাশাসক পদমর্যাদা বা তার উপরের কোনও পর্যায়ের অফিসারকে সামনে রেখেই ওই কমিটি গঠন করা হোক। আর শিলিগুড়ি মহকুমার জন্য তা যেন মহকুমা শাসক এবং মহকুমা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব অফিসারের নিচের তা করা যাবে না। তবে কোনও ক্ষেত্রেই জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া যাতে পরিষদকে না জানিয়ে করা না হয় তাও মুখ্যমন্ত্রীকে বলা হবে। গত সোমবার দার্জিলিং যাওয়ার পথে পানিঘাটার অর্ড চা বাগানে নিজেই গাড়ি থেকে নেমে মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। রাজ্যের নূন্যতম মজুরির থেকে তাঁরা কম টাকা রোজ মজুরি পান শুনে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। |
আজ আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। চলছে প্রস্তুতি। মালবাজারে ছবিটি তুলেছেন সন্দীপ পাল। |
রেশন, স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষার বিষয়গুলি নিয়েও খোঁজ নেন। একইভাবে পাহাড়ের পথে আরেকটি চা বাগানেও নামেন মুখ্যমন্ত্রী। পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার উত্থানের পর গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের বিরোধিতা করা তরাই ও ডুয়ার্সে বিকাশ পরিষদের সংগঠনও এখন সবচেয়ে জোরদার। সেখানে পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে জমি দখলের সমস্যার সমাধানের রাস্তা মুখ্যমন্ত্রী দেখাতে পারবেন বলে আশা আদিবাসীদের। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর চালসা সফরের কথা মাথায় রেখে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ছোট-বড় গর্ত ভরাট করেছে পূর্ত দফতর। মালবাজার মহকুমা হাসাপাতালের সুপার সঞ্জীব হালদার জানান, ২ জন মেডিক্যাল অফিসারের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম ডুয়ার্স সফরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবে। মালবাজার পুরসভার মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা বাংলোয় রান্নার দায়িত্ব সামলাবেন। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মালবাজার শহরের বিডিও অফিস সংলগ্ন মাঠে মুখ্যমন্ত্রী সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বুধবার বিকাল ৩ টায় ওই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। মাঠে মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। মিটিংয়ের আগে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য মোর্চার পশ্চিম ডুয়ার্স শাখা প্রস্তুত হচ্ছে। মোর্চা নেতা বিনোদ ঘাটানি বলেন, “চা পাতা, বনজ ফুল আর খাদা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানানো হবে।” |