বেহাল হয়ে পড়েছে আদ্রা-কাশীপুর রাস্তা। প্রায় আট কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তার বেশির ভাগ জায়গায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ফলে প্রতি দিন সমস্যায় পড়ছে ওই রাস্তার পথচারী থেকে গাড়ির যাত্রীরা। খারাপ রাস্তার জন্য ইতিমধ্যেই ছোটখাটো দুঘর্টনাও ঘটেছে। পূর্ত দফতর (সড়ক) এর পুরুলিয়ার নির্বাহী বাস্তুকার তপন মণ্ডলের আশ্বাস, “রাস্তাটি মেরামতের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে।”
কাশীপুর ব্লক সদর থেকে রেল শহর আদ্রায় যাতায়াতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি দীর্ঘ দিন ধরেই ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। বিশেষত, আদ্রা বাসস্ট্যান্ড থেকে পলাশকোলা পর্যন্ত এবং রঙ্গিলাডি থেকে কাশীপুর পর্যন্ত রাস্তা খানাখন্দে ভরে উঠেছে। পিচ, পাথর কবেই উঠে গিয়েছে। জায়গায় জায়গায় তৈরি হয়েছে নানা আয়তনের গর্ত। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে রাস্তাটির অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়েছে। রাস্তায় জল জমে থাকছে। খানাখন্দে পড়ে গিয়ে অনেকেই দুঘর্টনাতেও পড়ছেন। এই রাস্তার পাশেই রয়েছে আদ্রা তদন্ত কেন্দ্র ও বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ স্কুল। ফলে সাধারন বাসিন্দা থেকে স্কুল পড়ুয়ারা-সকলেই বেহাল রাস্তা নিয়ে ভোগান্তির শিকার।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে হুড়া থেকে কাশীপুর পর্যন্ত ও আদ্রা থেকে রঘুনাথপুর পর্যন্ত মোট ২৩ কিলোমিটার রাস্তা আমূল সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু বাদ পড়েছে কাশীপুরের গামারকুড়ি সেতু থেকে আদ্রা পর্যন্ত প্রায় ১১ কিলোমিটার ওই রাস্তা। তা এখনও পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। বস্তুত, কাশীপুর বিধানসভার হুড়া ও কাশীপুর এলাকা থেকে রেলের বিভাগীয় সদর আদ্রা স্টেশনে ট্রেন ধরার জন্য প্রতিদিনই কয়েক হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন ওই রাস্তা দিয়ে। ট্রেকার, বাস ও ছোট যাত্রীবাহী গাড়ি মিলিয়ে দৈনিক দেড়শোর বেশি যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচল করে এই রাস্তায়। যাত্রী বোঝাই গাড়িগুলি আক্ষরিক অর্থেই বিপজ্জনকভাবে চলাচল করে। আর এই প্রেক্ষিতেই দাবি উঠেছে, গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি সংস্কার করুক পূর্ত দফতর।
কাশীপুরের বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া বলেন, “পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়ক ও পুরুলিয়া-বাঁকুড়া জাতীয় সড়কের মধ্যে যোগাযোগকারী এই রাস্তাটি সংস্কার হওয়া দরকার। অথচ, পূর্বতন বাম সরকার গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি সংস্কারই করেনি।” তাঁর আশ্বাস, এই রাস্তাটির আমূল সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে তিনি জানিয়েছেন। প্রয়োজনে তিনি পূর্তমন্ত্রীকেও রাস্তাটি সংস্কারের জন্য অনুরোধ করবেন।
তাঁর ক্ষোভ, “পুজোর আগে বেহাল রাস্তাগুলি প্রাথমিকভাবে মেরামত করার জন্য পূর্তমন্ত্রী নির্দেশ দিলেও পূর্ত দফতর তা করেনি। ফলে রাস্তা আরও খারাপ হয়ে পড়েছে।” পূর্ত দফতর (সড়ক)-এর নির্বাহী বাস্তুকার বলেন, “জেলার ১০টি রাস্তার আমূল সংস্কার ও নির্মানের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তারমধ্যে কাশীপুরের ওই রাস্তাও রয়েছে। পুজোর আগে টানা বৃষ্টি হওয়ায় ও নানা সমস্যার জেরে রাস্তাটি প্রাথমিক মেরামত করা সম্ভব হয়নি।” তাঁর আশ্বাস, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য দ্রুত নির্দেশ দেওয়া হবে। |