সরকারি ভাবে বাঁকুড়া শহরে নির্দিষ্ট রিকশা ভাড়া নেই। ফলে ভাড়া নিয়ে প্রায়ই যাত্রীদের সঙ্গে রিকশা চালকদের মধ্যে বচসা বাধে। অথচ এই সমস্যা আজকের নয়। দীর্ঘ দিনের। কিন্তু সমস্যাটি নিয়ে নির্বিকার পুরপ্রশাসন। ফলে শহরের বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
তামলিবাঁধ বাঁকুড়া শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা। সদ্য বাস থেকে নেমে রিকশায় চাপতে গিয়েছিলেন বাঁকুড়া শহরের প্রবীণ বাসিন্দা চন্দন দে। তাঁর গন্তব্যস্থল নুনগোলা রোড। কিন্তু চালকদের প্রস্তাবিত ভাড়া শুনে ক্ষেপে গিয়ে তর্ক জুড়ে দিলেন তিনি। অবশেষে প্রস্তাবিত ভাড়ায় যেতে রাজি না হওয়ায় তিনি হাঁটা লাগালেন। তিনি বলেন, “যা খুশি তাই ভাড়া নিচ্ছে রিকশা চালকেরা। বাসস্ট্যান্ড থেকে নুনগোলা পর্যম্ত ১০ টাকা ভাড়া। অথচ রিকশা চালকেরা ২০ টাকা নিচ্ছে। আমরা এই শহরের বাসিন্দা তাই তারা আমাদের বোকা বানাতে পারবে না। নতুন কেউ এলে ওরা ৩০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেয়।” এই ঘটনার জন্য তিনি পুরসভাকেই দায়ী করেছেন। তাঁর ক্ষোভ, “পুরসভার উচিত ভাড়া নির্দিষ্ট করে বাসস্ট্যান্ডে ঝুলিয়ে দেওয়া।” এখানেই শেষ নয়। তিনি হাঁটা লাগাতেই পিছন পিছন এসে এক রিকশা চালক বললেন, ‘বসুন দাদা। ১০ টাকাই দেবেন।’ তিনি তাতে উঠে বসলেন।
একই ঘটনা চোখে পড়ল বাঁকুড়া স্টেশনের সামনে। সদ্য ট্রেন থেকে নেমে রিকশায় চড়তে গেলেন বাঁকুড়ার স্কুলডাঙার বাসিন্দা সব্যসাচী চক্রবর্তী। তাঁর সঙ্গেও ভাড়া নিয়ে রিকশা চালকের বচসা হল। প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি বলেন, “কোথাও যেতে রিকশা ধরতে গেলে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। অনেক বেশি ভাড়া হাঁকে তারা। নিরুপায় হয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে যাত্রা করতে হয়। চন্দনবাবুর মতো তিনিও পুরসভাকে এক হাত নিয়েছেন।
এ তো গেল যাত্রীদের কথা। নির্দিষ্ট ভাড়া না থাকায় একই সমস্যায় পড়েছেন রিকশা চালকেরাও। কলি মাল, সুনীল বাউরিরা বলেন, “ভাড়া নির্দিষ্ট না থাকায় অনেক সময় যাত্রীরাও কম ভাড়া দেন। একমাত্র পুরসভা এগিয়ে এলে সমস্যা মিটতে পারে।” বাঁকুড়ার পুরপ্রধান শম্পা দরিপা বলেন, “কাউন্সিলরদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। ভাড়া ঠিক করে তালিকা প্রকাশ করা হবে।” |